পাতা:প্রবাসী (সপ্তত্রিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/৬২৫

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

St@ ঘৰ্ম্মার বনে-জঙ্গলে কষ্টও আছে, আনন্দও অাছে। চাইডো থেকে দু-তিন দিন এমনি চলে অবশেষে আমিঃ আমাদের কৰ্ম্মস্থলে এসে পৌছে ই ফি ছেড়ে বাচলাম । জায়গাটি বড় চমৎকার। দুই দিকে উচু পাহাড় গৰ্ব্বোন্নত শিরে দাড়িয়ে আছে, আর তারই মাঝখানে এই উপত্যক । এক দিকে পাহাড়ের গ! বেয়ে একটি শ্ৰোতস্বতী বয়ে যাচ্ছে । সেই সমতলভূমিতে আমাদের বঁাশের বাংলো—তার বেতপাতার ছাউনি । চারি দিকের পাহাড়ে জঙ্গলে - কত রকমের অসংখ্য পার্থীর কলরব দিনরাতকে মুখরিত ক'রে রেখেছে। এখানে সকালবেলায় প্রাতরাশ শেষ ক'রে জঙ্গলে জঙ্গলে ঘুরে বেড়াতাম ও প্রয়োজনমত কাজের তদারক করতাম। বিকেলে স্বামী তার বন্দুক নিয়ে শিকারের আশায় নিবিড়তর জঙ্গলে যেতেন, আমিও তার সঙ্গী হতাম। সন্ধ্যায় ক্লাস্তদেহে ফিরে এসে বাংলোয় ব’সে কৰ্ম্মচারীদের সঙ্গে গল্প করতাম । এখানে কেরিণ, চট্টগ্রামের মুসলমান ও শুামদেশীয় বহু নরনারী কাজ করে। এর মধ্যে কেfরণরাষ্ট কৰ্ম্মঠ। এর দেখতে অনেকটা ভুটিয়াদের মত। নাক চওড়া এবং চেণ্ট।। গায়ের রং ফসর্ণ। এদের গ্রামগুলি বেশ পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন এবং এরা খুব অতিথিবৎসল। এদের প্রত্যেক গ্রামে একটি ক'রে জিয়া ( অর্থাং অতিথিশালা ) আছে। তা ছাড় যদি কোন আচেন পথিক তাদের বাড়ীতে আসে, তারা তাদের যথাসাধ্য চাল, তুন, শুকনো মাংস ইত্যাদি দিয়ে অভ্যর্থনা এবং পরিতুষ্ট করে, রাত্রিবাসের জন্তে 48 ছেড়ে দেয় । আমরা যখন তাদের গ্রামের মধ্যে দিয়ে আসি ( আমাদের পথে কয়েকটা কেরিণ-বস্তি পড়েছিল ) তখন কেউবা ডাব, কেউবা মুগী নিয়ে এসে আমাদের উপঢৌকন দেয়। কেরিণ ও শুামদেশীয়েরা সব রকম জীবজন্তু থায় এবং বড় জানোয়ার হ'লে তার মাংস শুকিয়ে রেখে দেয় ভবিষ্যতের রসদ হিসাবে । এসব বিক্ৰী ক'রে লাভবানও হয় তারা । আমাদের কৰ্ম্মস্থলের বাংলো একটা গ্রামের মধ্যে দিয়ে আমরা যাচ্ছি। ঢোলের শব্দ ও গানের আওয়াজ খুব শোনা যাচ্ছে। কুলির বললে যে এই গ্রামের লুজির ( মোড়লের ) ছেলের বিয়ে হচ্ছে। আমরা গাড়ী থামিয়ে বিয়ে দেথতে গেলাম। দেখতে পেলাম, এক জায়গায় অনেক বরাহ বলি হয়েছে ও অপর জায়গায় সেগুলি পোড়ান হচ্ছে । গ্রামের সকল লোক একসঙ্গে এখানে মিলেছে । মদ খাচ্ছে, গানবাজনা করছে আর বরাহ-মাংস চিবচ্ছে। আমাদের এরা অভ্যর্থনা করে নিয়ে বসাল। বর-কনেকে সাজিয়ে দেখাল। এদের প্রথা, মেয়ে যত দিন কুমারী থাকবে তত দিন একটা সাদা রঙের মোটা আলখাল্প-ধরণের জাম প'রে থাকবে এবং বিয়ের পরদিন থেকেই রঙীন জামা ও লুঙ্গি ব্যবহার করবে। এদের মেয়ে-পুরুষ সকলের মুখেই সৰ্ব্বদা পাইপ লেগে আছে। বেশ সৌধীন জাত এরা। আমোদে হাসিতে গানে সব সময়ে ভরপুর । এর বাশের ভিতরের ফাপা জায়গায় চাল ও জল দিয়ে ভাত রান্না করে । তার নাম কাউনি ভাত—খেতে মন্দ লাগে না । এর এক দিন নিমন্ত্ৰণ ক'রে আমাদের খাইয়েছিল । এই রকম ভাবে দিন ধখন আমাদের নানা আমোদ এবং বৈচিত্র্যের মধ্যে দিয়ে কাটছিল, তখন এক দিন আমার স্বামী একটা বাঘ শিকার করেন । কেfরণরা সেই বাঘের