পাতা:প্রবাসী (সপ্তত্রিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/৬৩৯

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ভাদ্র "জামি সরস্বতী দেবীর অতটা বিরাগভাজন হ’লেও কি ক’রে জানি না—এই অসাধারণ কথাটার মানে অবগত ছিলাম। সেইটিই পরম উৎসাহে বলতে ঘাব এমন সময় নয়নতার হঠাৎ জানলা থেকে নেমে এসে আমার সামনে বসে পড়ল, এবং আমার মুখের পানে কি এক রকম ভাবে চেয়ে বলে উঠল—তুই আমায় অত ক'রে দেখিস কেন রে শৈল ? আমি তো কালে !... “এখন আমিও বুঝছি, তোমরাও বুঝছ আসল ব্যাপারটা fক—অর্থাৎ নয়নতারাকে সেদিন বর্ষায় পেয়েছিল, নবোঢ়ার মন পাড়ি দিয়েছিল তার দয়িতের কাছে ;—আকাশে ওদিকে বর্ষ, সে এদিকে মনে মুনে শৃঙ্গার করছ, তার পরে আমার চোখের মুকুরে নিজের রূপটি দেখে নিয়ে সে যাবে,—সে কালো, তাই তার অপূর্ণভার ব্যথা, থলুর সঙ্গে তুলনা । “সেদিন আমি এ-কথাটা বুঝি নি, বোঝবার সম্ভাবনাও ছিল না । সেদিন এই বুঝলাম যে আমার জন্যেই নয়নতারা এ প্রশ্নটা করছে, সে বলছে—তোমার যদি ভাল লাগে তাহলেই আমার রূপের আর জীবনেব সার্থকতা—আমার সমস্ত জীবন-মরণ নির্ভর করছে তোমার একটি ছোট উত্তরের উপর ॥••• “আমি তখন ষা ভেবেছিলাম তা গুছিয়ে বলতে গেলে এই দাড়ায় ষে সেদিন নয়নতারা আমায় আমার বম্বসের গণ্ডী থেকে তুলে নিয়ে আমায় পৌরুষের জয়টৰ পরিয়ে দিলে, আমার হ’ল প্রেমের অভিষেক । “প্রবল কুষ্ঠায় এবং কেমন একটা সশঙ্ক আনন্দে আমি মুখটা নামিয়ে নিলাম, উত্তর দিতে পারলাম না । উত্তর দিলে কথাটা তখনই পরিষ্কার হয়ে যেত, কেন-না, নয়নতারা সেনিষ্কার নিভৃতে ধেমন নিঃসঙ্কোচে আরও করেছিল তাতে সে ঘুরিয়ে ফিরিয়ে তার বরের কথা এনে ফেলত। ধদি বলতাম—তবুও—অর্থাৎ কালে হ'লেও তুমি খুব স্বন্দর—সে হয়ত বলত—তোর কথার সঙ্গে ‘ওর’ কথা মিলে গেছে, শৈল,—মেলে কি না তাই দেখবার জন্তে জিজ্ঞেস করছিলাম।—কিংবা এই রকম কিছু, কেন-না এই ধরণেরই একটা কথা তার মনে ঠেলে উঠছিল। “ফলে, সত্যের আলোয় যে ধারণাটা তখনই নিরর্থক ԵրՀ-:Տ বর্ষাক্স స్క్రిy=^& হয়ে যেতে পারত, মিথ্যার, অর্থাৎ ভ্রাস্তির অন্ধকারে সেটা আমার জীবনে একটা অপূৰ্ব্ব সার্থকতা লাভ করলে । আমার ভালবাসার তন্তু এত দিন শূন্তে ছলছিল, আশ্রয়শাখা এগিয়ে এসে তাকে স্পর্শ করলে। বোধ হয় এত দিন আমার শুধু ভাল লাগছিল মাত্র, সেদিন থেকে জামি নিঃসন্দেহ ভালবাসলাম, আমার ভালবাসবার ইতিহাসে দ্বিতীয় স্তর আরম্ভ হ’ল।” তারাপদ বলিল, “তোমার গল্পট মন্দ লাগছে না, তবে জিনিষটাকে ভালবাসা বলায় স্পৰ্দ্ধার গন্ধ আছে, যদিও এ ভ্রাস্তির জন্তু আমরা তোমায়ু ক্ষমা করতে রাজী আছি, কেন-ন ভ্রাস্তিষ্ট কবির ধৰ্ম্ম ।” রাধানাথ বলিল, “কেননা, কবি বিধাতার ভ্রাস্থিই । শৈলেন বলিল, “ন, সেটা ভালবাসার্ক, কেল-না এবার থেকে ঘা লক্ষণ সব প্রকাশ পেতে লাগল তা ভালবাসার একেবারে নিজস্ব জিনিষ—ট্রেড-মার্ক দেওয়া। একটি গুরুতর লক্ষণ দাড়াল— ঈর্ষা।”

  • ই্য, তার আগে সেদিনকার কথাটা শেষ ক'রে দিই । উত্তর না পেয়ে নয়নতারা আমার মুখটা ছুটো আঙুল দিয়ে তুলে ধ'রে বললে—তোর বুঝি আবার লক্ষ্য হ’ল ? “বোধ হয় তার প্রশ্নের জটিলতাটা উপলব্ধি করলে এতক্ষণে। একটু কি ভাবলে, তার পর আমার হাতটা ধরে একটু গলা নামিয়ে বললে—আমি তোকে ও-কথাটা জিগ্যেস করেছি, কাউকে বলিস নি যেন শৈল, বলবি না তো ? বোস্, আমি আসছি—ব'লে চলে গেল ; অবশু জার এল না সেদিন ।"

শৈলেন একটু চুপ করিল। রাধানাখ বলিল, "বৃষ্টি তোমার কবিত্বের গোড়ায় জল জোগাচ্ছে বটে শৈলেন, কিন্তু ওদিকে তারাপদর কাপেটট ভিজিয়ে তার সমূহ অপকার করছে, আতিথেয়তায় ক্রটি হয় ব’লে বোধ হয় ও-বেচারা- - - “ তারাপদ ভাড়াতাড়ি প্রতিবাদ করিতে যাইতেছিল, শৈলেন বলিল, “জীও বদ্ধ ক’রে।" বদ্ধ জানালার উপর ধারাপাতের জন্ত মনে হইল বৃষ্টিট ৰেন হঠাৎ বাড়িম্বা গেল । শৈলেন চোখ বুজিল, যেন কোথায় ভলাইয়া গিয়াছে। তারাপদ আর