পাতা:প্রবাসী (সপ্তত্রিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/৬৭১

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ভাদ্র মণাচর বাসা ^్సఢ ও থাকলে ।” অতএব মৃণাল আবার ফিরিয়া চলিল । কিন্তু যাইবার সময় নিজের অজ্ঞাতে সৎমাকে আরও ভাল করিয়া চটাইয়া দিয়া গেল । শৈব্লজার পোষাকী কাপড়চোপড়, আট গাছ সোনার চুড়ি, এক্ট হেসে হার, এক জোড়া অনন্ত আর কানের একজোড়া কানবালা, এই বাড়ীতেই একটি ছোট বাক্সে ভোলা ছিল । সাবধানতার খাতিরে মৃগাঙ্ক আবার তাহা শুইবার ঘরে বড় আমুকাঠের সিন্দুকটার ভিতর ঢুকাইয়া রাথিয়া দিয়াছিলেন । সিন্দুকের চাবি নূতন গৃহিণীর হাতে পড়িয়াছিল বটে, কিন্তু ছোট বাক্সের চাবিট কৰ্ত্তা তাহার হাতে দেন নাই। প্রিয়বালা বুঝিতেন যে জিনিষগুলির উপর আইনত: তাহার কোনও অধিকার নাই, সতীনের মেন্ধে ধর্থন বাচিয়া আছে। কিন্তু বে-আইনী কাণ্ডও ত জগতে কম হয় না ? তাহার প্রেমের বন্যায় ভাসিয়া গিয়া স্বামী হয়ত কোনদিন ঐ বাল্পটি তাহার হাতে তুলিয়া দিবেন, এ আশা তাহার মনে একেবারেই যে ছিল না তাহ বলা ধায় না । কিন্তু মৃণাল যখন বিছানা কাপড় পুটুলি বাধিয়া গাড়ীতে উঠিয়া বসিল, তখন মুগাঙ্ক সেই ছোট বাশ্নটি হঠাৎ সিন্দুক হইতে বাহির করিয়া তাহার পাশে রাখিয়া দিলেন । বলিলেন, “খুব সাবধানে নিয়ে যাস্ মা, তোর মায়ের সব জিনিষ আছে ওর মধ্যে। গিয়ে মামীমার হাতে দিস, তিনি তুলে রাখবেন 17 গরুর গাড়ী গ্রাম্য পথে ধূলা উড়াইয়া চলিতে লাগিল, মৃগাঙ্কও নিশ্চিন্ত হইয়া ধরে ঢুকিলেন। মৃণাল সাগ্রহে পথ দেখিতে দেখিতে চলিল, কতক্ষণে পথটা যে শেষ হইবে কে জানে ? মামার বাড়ী ফিরিয়া যাওয়ায় তাহার লেশমাত্র আপত্তি ছিল না। নূতন মায়ের সংসারে আসিয়া অবধি তাহার প্রাণ আইটাই করিতেছিল । তাহার সমস্ত মন পড়িয়া ছিল মামার বাড়ীর দিকে । বাবা তাহার কাছে প্রায় অপরিচিতই ছিলেন, দুই জনের ভিতর ভালবাসার বন্ধনও বিশেষ দৃঢ় হয় নাই । মামীম সন্ধ্যার প্রদীপ জালাইয়া তুলসীতলায় প্রণাম করিতেছেন এমন সময় মৃণাল ফিরিয়া আসিল । মামীমার কোলের খুঁকির মুখে তখন সবে ভাষা ফুটিয়াছে, সে কলরব তুলিল, “ডি ডি, আঃ আঃ ।” وع لا سسسسوا حb মামীম আসিয়া মৃণালকে কোলের কাছে টানিয়া লইয়া বলিলেন, “হয়ে গেল বাপের বাড়ী বেড়ানো ?” মৃণাল ৰাকড়া চুল দোলাইয়া বলিল, “স্থ”। তাহার পর ভাইবোনদের সঙ্গে খেলায় ভিড়িয়া গেল । তাহার পর মৃণালকে আর কোনও দিন বাপের বাড়ী যাঙ্গতে হয় নাই, মৃগাঙ্কও আর তাহাকে ডাকেন নাই । প্রিয়বালার সংসারে এখন তাহারই পরিপূর্ণ দখল, অনেকগুলি ছেলেমেয়ে তাহার। এ-বাড়ীতে ধে শৈলজার কঙ্কার আর কোনও স্থান নাই তাহ মৃগাঙ্ক ভাল করিয়াই বুঝিয়াছেন । জোর করিয়া এখন মৃণালকে এখানে জায়গা দিতে গেলে গৃহবিপ্লব বাধিয়া যাওয়া নিশ্চিত । তাহাতে মৃণালেরও স্বখ হইবে না । কাজেই মৃণাল মামার বাড়ীতেই থাকিয়া গেল । বাবার কাছ হইতে মাসে মাসে কিছু খরচ পাহত, একেবারে পরের গলগ্রহ তাহাকে হইতে হইল না । বছর দশ বয়স পৰ্য্যস্ত সে গ্রামেই ছিল । তাহার পর মৃগাঙ্কের নিকট হইতে অনুরোধ আসিল, মেয়েকে যেন কলিকাতার কোনও স্কুলে ভৰ্ত্তি করিয়া দেওয়া হয়, আজকালকার দিনে মেয়েছেলেরও লেখাপড়া শেখা বিশেষ দরকার । মুগাঙ্ক অনেক ভাবিয়া এই সিদ্ধাস্তে উপনীত হইয়াছিলেন । তিনি ধনী মাচুর্য নহেন এবং কম্ভার সংখ্যা ক্রমেই বাড়িয়া চলিতেছে। টাকাকড়ি খরচ করিয়া কয় জনের বিবাহ দিতে পরিবেন কে জানে ? একটাও যদি মানুষ হইয়া নিজের পথ নিজে করিয়া লইতে পারে ত মন্দ কি ? মৃণাল কাদিতে কঁাদিতে বোর্ডিঙে চলিল। কেন ষে তাহার প্রতি এই দ্বগুবিধান হইল তাহা সে কিছুই বুঝিতে পারিল না। বৎসরের ভিতর যে দুই-তিন মাস মামার বাড়ী কাটাহঁতে পারিত, সেই মাস-কয়টির প্রত্যাশায় তাহার বৎসরের বাকি দিনগুলি কাটিয়া ধাতত । ক্রমে সহিয়া গেল, অঙ্গ মেয়েদের সঙ্গে ভাব ইহল, রাজধানীতে বাস করার সুবিধার দিকৃঙ ষে আছে তাহাও বুঝিল । তৰু প্রাণের টান এখনও তাহার সেই শৈশবের লীলাভূমির প্রতি । এখনও ছুটির শেষে বোর্ভিঙে ফিরিতে তাহার কাল্প পায়। ( R ) পাশের ঘরে মামীমার কাজ এস্তক্ষণ শেষ হইল। একটা বড় হাড়ি, মুখে তাহার পরিষ্কার ঠাকুড়া বাধ, ও একটা