পাতা:প্রবাসী (সপ্তত্রিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/৬৭৫

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

マラt@ -- পেয়েছে খানিক খানিক, মশারির ভিতর কিছুতে শুতে 5 F1 f" খিড়কির দরজার শিকলটাX ঠিন্‌ ঠন্‌ করিয়া বাঞ্জিয় উঠিল । মামীম স্বস্তির নিঃশ্বা) ফেলিয়া বলিলেন, “যাক্ রাধী এসেছে, বাচা গেল। আর কোনও কাজকে ডরাই নে বাছা, কিন্তু এই শীতের ভোবে ঘাটের কনকনে জলে নামতে অামার খেন রক্ত হিম হয়ে যায় ।" মল্পিক-মহাশয় উঠানে নামিয়া গিয়া দরজা খুলিয়৷ দিলেন । ভোরের অস্পষ্ট আলো তখন সবে জমাট অন্ধকারকে একটুখানি তরল করিয়া আনিতেছে। দেখা গেল, দুইটি নারীমূৰ্ত্তি আপাদমস্তক চাদর মুড়ি দিয়া বাহিরে দাড়tষ্টয়া আছে। মল্পিক-মহাশয় লণ্ঠনটা হাতে করিয়া বাহির হইয় গেলেন, স্ত্রীলোক দুইটি ভিতরে ঢুকিয়া আসিল । মামীম বলিলেন, “রাধীর মাও এসেছিস্ দেখি ” রাধীর মা বুড়ী বলিল, “রেতেভিতে মেয়াটারে একল ছাড়ি ক্যাম্নে মা ঠাকরুন । শিয়াল দেখে উ বড় ডরায়, তাই সাথে এলাম।” মামীম বলিলেন, “ত বেশ করেছিস, নে.এটো সকড়ি বাসনগুলো উঠিয়ে নে । আমি কাপড় ছেড়ে উচুনট शद्रांडे ” শাশুড়ী বাচিয়া থাকিতে শীতকালে তাহার কি কষ্টটাই যাইত, মনে করিয়া গৃহিণীর হাসি জাসিল। স্নান না সারিয়া ভাড়ার বা রান্নাঘরের ত্রিসীমানায় ধাইবার জে ছিল না । শাশুড়ী এমনষ্ট মৰ্ম্ম মানুষ ছিলেন না, কিন্তু আচারনিষ্ঠ ও গুচিবাই বড়ই বেশী ছিল তাহার । মামীমাকে একরাশ চুল লইয়া ভোরেই ডুব দিতে হইত বড় পুকুরে, আর ঘোমটার অন্তরালে সারাদিন সে চুলের কঁড়ি শুকাইতও না, সেও এক কম জালাতন ছিল না । এক-এক সময় রাগ করিয়া কাচি হাতে লইয়া বলিতেন, “দেব একেবারে এ জঞ্জাল শেষ করে।” কিন্তু স্বামীর নিৰ্ব্বন্ধাভিশধ্যে তাহ কোনও দিনই করা হয় নাই । স্বামী মাটির বাস।

  • ్సవి

বারণ না করিলেও তিনি কত দূর যে চুল কাটিতেন সে বিষয়ে সন্দেহ ছিল, কারণ সধব-মামুষের এমন কfও করা ধে অতি অলক্ষণ, সে জ্ঞানের তাহার অভাব ছিল না। রাধী ও রাধীর মা বাসন তুলিয়া লইয়া চলিয়া গেল । মামীম বাসি কাপড় ছাড়িয়া রান্নাঘরে ঢুকিয় গেলেন । মৃণাল বারান্দায় উদ্দেগুবিহীন ভাবে ঘুরিতে লাগিল । অন্ধকার কাটিয়া গিয়াছে, পূৰ্ব্বদিকের আকাশে মুক্তার ন্যায় টলটলে স্বচ্ছত ক্রমে আগুনের রঙে রঙিয়া উঠিতেছে । এমন স্বনীর সকাল কলিকাতায় কেন হয় না ? পাচতলা চারিতলা বাড়ীর আড়ালে স্বর্ধ্যোদয় কোথায় হারাইয়া যায়, কেহ বুঝিতে পারে না। বুঝিতে চায়ও না বোধ হয় । কলিকাতায় দিনকে রাত ও রাতকে দিন করাষ্ট ত আভিজাত্যের লক্ষণ। সেখানে যে যত বেলা অবধি ঘুমাইয়৷ থাকিতে পারে, সে তত ভাগ্যবান। এতদিন কলিকাতায় বাস করিয়াঙ কিন্তু মৃণালের ভোরে-উঠা রোগ সারে নাই । বোডিাঙ সৰ্ব্বদা সকলের আগে সে উঠিয়া পড়ে। তখনও কোনও ঘণ্ট পড়ে না, কাজেই আপন মনে সে বারান্দায় ঘুরিয়া বেড়ায়, নীচে নামিবার তখনও হুকুম নাই। মামৗমার রায়া ইহারই মধ্যে চড়িয়া গিয়াছে। টিনি, চিনি, কানু সবাই উঠিয়া পড়িঙ্গ, মৃণালকে তখন লাগিতে হইল তাহাদিগকে সামলাইবার কাজে। সে যখন থাকে না, তখন এই দুরন্তু শিশুগুলি মাকে ন-জানি কি জালানোই জালায়। চিনি বড় হইলে তাহাকে সে কলিকাতায় লইয়৷ যাইবে একথা মৃণাল প্রায়ই মামীমাকে বলে । তিনি শুধু হাসেন । মৃণাল জানে, এসবে মামীমার মত নাই । মেয়েছেলের উচ্চশিক্ষার যে কি প্রয়োজন তাহা মামীম বুঝিতে পারেন না । মৃণাল পরের মেয়ে, তাহার উপর জোর নাই, তাই তাহার বাপের ইচ্ছামত তাহাকে স্কুলে পড়িতে দেওয়া হইয়াছে । মামীমার মেয়ে হইলে এতদিনে মাথায় লাল চেঙ্গীর ঘোমটা টানিয়া লে শ্বশুরবাড়ী চলিয়া যাইত, এ-কথা মৃণাল নিশ্চয় করিয়া জানে। ভাবিতেই তাহার মুখ রাঙা হইয়৷ উঠে । ক্রমশ: