পাতা:প্রবাসী (সপ্তত্রিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/৭০৬

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

موانع گ প্রবাসী SN938 বরং অবনমন অবিশুীক। এক জন ভদ্রলোক, বংশে fতনি শুড়ী, কিন্তু ডাক্তারী পাস করিয়া একটা জাহাজ কোম্পানীর লাইনে জাহাজে চিকিৎসকের কাজ করেন, একবার আমাদিগকে এই মৰ্ম্মের চিঠি লিথিয়াছিলেন, “মশায় আমাদের জা’ভকে, শুড়ী জা’তকে, আপনার অস্পৃশ্ব অপাংক্তেয় ক’রে রেখেছেন, সেই সব গুড়ী-জাতীয় লোককেও জলচল করেন নাই যারা মদ বিক্রী করে না, কিন্তু মুখুজ্যে চাটুজ্যে লাহা গোঁসাই সেন প্রভৃতি যারা মদ বিক্রী করে বা ক’রত, তারা সমাজে বেশ উচু স্থানেই থাকে। যদি আপনারা মদবিক্ৰীট শুড়ীদের মধ্যেই আবদ্ধ রাখতে পারতেন এবং তাদেরকে সমাজে একটু স্থান দিয়ে বলতেন, ‘তোমরা মদ বিক্ৰী ছাড়, আমরা দল বেঁধে ‘প্রোহিবিশুন’ ( নেশার জন্যে মদ বিক্ৰী বন্ধ করা ) চালিয়ে দিতে পারতুম।" তা তাহারা পারিতেন কিংবা পারিতেন না, তাহা এখন আলোচ্য নহে, কিন্তু লেখক মহাশয়ের কথাগুলির অন্তনিহিত সত্য প্রণিধানযোগ্য । সাৰ্ব্বজনিক শিক্ষা ও বেকার-সমস্যা কেহ কেহ হয়ত মনে করেন, দেশে শিক্ষার বিস্তারই বেকার-সমস্যার আবির্ভাবের একটা প্রধান কারণ । সেই জন্য শিক্ষাবিস্তারকে বেকার-সমস্ত সমাধানের একটা উপায় বলিলে তাহার হাসিতে পারেন । কিন্তু যে-সকল সভ্য দেশে শিক্ষার বিস্তার আমাদের দেশের চেয়ে বেশী হইয়াছে, যেখানে আমাদের দেশের চেয়ে অধিবাসীদের মধ্যে শতকরা বেশ জন গ্র্যাডুয়েট, যেখানে নিতাস্ত শিশু ছাড়া নিরক্ষর কেহ নাই, সেখানেও আমাদের দেশের মত এত বেশী লোক কৰ্ম্মহীন উপার্জনহীন অলস জীবন যাপন করিতে বাধ্য হয় না। একথা সত্য, যে, আমাদের দেশে যত লোক পুস্তকগত বিদ্যাসাপেক্ষ কাজ চায়, তাহাদের সকলকে নিযুক্ত রাখিবার মত তত কাজ নাই । কিন্তু তাহার নিরক্ষর থাকিলেই যে তাহাদের কাজ জুটিয়া যাইত, এমন নয়। অতএব নানা রকম শিক্ষা দেওয়া চাই । কাজও নানা রকম হষ্টি করুt চাই । শিক্ষা বন্ধ করিলে চলিবে না। বরং এরূপ শিক্ষার ব্যবস্থা করিতে হইবে, যাহাতে মানুষ কাজ পাইতে পারে, না-পাইলে কাজের স্বল্প করিতে পারে । এই বিষয়ে সমাজকে ও রাষ্ট্রকে মাচুষের সহায় হইতে হুইবে । যাহারা আমাদের দেশের সাধারণ স্কুল-কলেজে শিক্ষা পাইয়াছেন অথচ বেকার আছেন, রাষ্ট্র ইচ্ছা করিলে তাহাদের অনেকের কাজের ব্যবস্থা করিতে পারেন । অবিলম্বে সাৰ্ব্বজনীন শিক্ষা বিস্তারের জন্য যদি যথেষ্টসংখ্যক বিদ্যালয় স্থাপন করা যায়, যদি এরূপ ব্যবস্থা করা যায়, যে, জড়বুদ্ধি ও বিকলাঙ্গ ছাড়া পাচ-ছয় বংসরের অধিকবয়স্ক কোন বালকবালিকা শিক্ষার স্বযোগ হইতে বঞ্চিত থাকিবে না, তাহা হইলে অবিলম্বে এত হাজার বিদ্যালয় খুলিতে হইবে, এবং তাহার জন্য এত হাজার শিক্ষক ও শিক্ষয়িত্রী আবশ্ব)ক হইবে, যে, শিক্ষিত বেকার অনেকেরই কাজ জুটিয়া যাইবে । তাহাতে প্রেসের, পুস্তক-রচনার ও প্রকাশকের কাজের, দপ্তরীর এবং কাগজের ব্যবসারও এত উন্নতি ও প্রসার হইবে, যে, তাহাতেও আরও অনেকের অল্প হইবে । বলিতে পারেন, এত বিদ্যালয় স্থাপনের জন্য ও শিক্ষকশিক্ষয়িত্রীদের বেতন দিবার জন্য টাকা কোথায় পাওয়া যাইবে ? উত্তর এই, যে, একটা যুদ্ধ বাধিলে ত সরকার বহু কোটি টাকা ঋণ করিয়া যুদ্ধ চালাইয়া থাকেন ; নিরক্ষরতা ও অজ্ঞতার বিরুদ্ধেও যুদ্ধ চালাইবার জন্য যত কোটি টাকা আবশুক ঋণ করুন এবং তাহার সুদ এবং আসল পরিশোধের কিস্তি দিবার ব্যবস্থা করুন—একটা সিস্কিং ফগু করুন । অনেক সভ্য দেশে অনেক অত্যাবগু্যক বড় কাজ এই প্রকারে নির্বাহিত হয়। আমাদের দেশেও হইতে পারে। কেবল ইচ্ছা, সাহস ও বুদ্ধি থাকিলেই হয় । “লোকশিক্ষা-সংসদ” মৌলবী আজিজুল হক শিক্ষামন্ত্রী থাকিবার সময় যে “শিক্ষাসপ্তাহ’ হষ্টয়াছিল, তাহার সংস্রবে রবীন্দ্রনাথ “শিক্ষার স্বাঙ্গীকরণ" শীর্ষক একটি প্রবন্ধ পাঠ করেন । সেই মুদ্রিত প্রবন্ধের শেষে পুনশ্চ শিরোনাম দিয়া নিম্নলিখিত কথাগুলি ও অন্য কিছু কথা মুদ্রিত হইয়াছিল । দেশের যে সকল পুরুষ ও স্ত্রীলোক মান কারণে বিদ্যালয়ে শিক্ষালাভের সুধোগ থেকে বঞ্চিত, ওঁদের জন্য ছুটি বড় প্রাদেশিক শহরগুলিতে যদি পরীক্ষাকেন্দ্র স্থাপন করা যায় তবে অনেকেই অবসর মত ঘুরে বসে নিজেকে শিক্ষিত করতে উৎসাহিত হবেন । নিম্নতম থেকে উচ্চতন পবর্ণ পর্য্যস্ত স্ট্রীদের পাঠ্যবিষয় নির্দিষ্ট করে তাদের পাঠ্যপুস্তক বেঁধে দিলে বিচিতভাবে দের শিক্ষা নিয়খ্রিষ্ঠ হতে পারবে । এই পরীক্ষার যোগে যে সকল উপাধির অধিকার পাওয়া ধাবে সমাজের দিক থেকে তার সম্মান ও জীবিকার দিক থেকে তার প্রয়োজনীয়তার মূল্য আছে । এই উপলক্ষ্যে পাঠf পুস্তক রচনার ক্ষেত্র প্রসারিত হয়ে জনসাধারণের মধে বিদ্যবিস্তারের উপাদান বেড়ে যাবে । কবি অন্যত্র লিখিয়াছেন একদ। আমাদের দেশে কাশী প্রভৃতি নগরে বড় বড় শিক্ষার কেন্দ্র ছিল । কিন্তু সাধারণভাবে দেশের সংস্কৃতিরক্ষা ও শিক্ষাচb নানা প্রণালীতে পরিব্যাপ্ত ছিল গ্রামে গ্রামে সর্বত্র । আধুনিক কালের শিক্ষাকে কোনো উপায়ে এদেশে তেমন ক'রে যদি প্রসারিত ক'রে না দেওয়া যায় তবে এ যুগের মানবসমাজে আমরা নিজের