পাতা:প্রবাসী (সপ্তত্রিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/৭৮৬

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

tూgSé “কথা মা দিয়েছিলেন, আমি নয়। আমার মতামতের জন্তে ত আর অপেক্ষা করেন নি।” “কারণ মা জানতেন তুমি তার কথা রাখবেষ্ট। এটা ধরে নেওয়া বোধ হয় তার খুব অন্যায় হয় নি।” “সব কিছু ধরে নিলে চলে না। মানুষের ব্যক্তিগত মতামতের দাম তার নিজের কাছে অনেক ।” “বেশ, তাহলে তুমি যে ধরে নিয়েছ এ বিয়েতে আমার অমত নেই, সেটা কি রকম হ’ল ? আমি মেয়ে, তাই না ?” “তোমার ভার আমার উপর পড়েছে তাই সে ভার নামাতে চাই । তোমার আমার অবস্থা ঠিক এক রকম নয় । কিন্তু এ সব কথা কেন ? যা অসম্ভব, তা নিয়ে মাথা ঘামিয়ে লাভ কি ?” কেন অসম্ভব ? তুমি কি সত্যিই মনে কর তুমি ওপথে চলতে পারবে f” “সে অালোচনা তোমার সঙ্গে করতে ইচ্ছে করি নে।" নিশার মুখটা লাল হয়ে উঠল, সে বললে, “ন, তোমার সঙ্গে আলোচনা করার মত স্পদ্ধ রাখি না। শুধু জিজ্ঞেস করছিলাম।”

  • বেশ, এখন যাও আর পার ত যে ক'দিন এখানে আছ, এ-সব কথা তুলো না। আমি ইচ্ছে ক'রে কারও কোন ক্ষতি করি নি, করতে চাইও নি। কেউ যদি ইচ্ছে ক’রে দুঃখ পায়, তাতে আমার হাত নেই।"

疊 毒 粤 নিশার কোন আপত্তিই টিকুল না, তার বিয়ের ঠিক হয়ে গেল। নিশা বেশ ভাল ক’রেই জানত সিতাংশু যা ভাল ব'লে মনে ক'রে বরাবরই সে তাই করে—কারও কথা তাকে টলাতে পারে না। তবু সে একবার চেষ্টা ক’রে দেখেছিল, কিন্তু ঐ এক দিন ছাড়া সিতাংশু তাকে অমলার সম্বন্ধে কোন কথা তুলতে দেয় নি। অমলা তার কাছে এসেছে, হেসে গল্প করেছে কিন্তু নিশা তার দিকে ভাল ক’রে চাইতে পারে নি। তার মনে হ’ত সে যেন নিজেই অমলার কাছে অপরাধী। অমল তাকে বোঝাতে চেষ্টা করেছে, যা হয়েছে তাই ভাল কিন্তু সে কিছুতেই তা মেনে নিতে পারে নি। তার যেন বিশ্বাস হয়ে গিয়েছিল এ হ’তে পারে না, এ অসম্ভব, এর কোথাও একটা মস্তবড় ক্রীট থেকে যাচ্ছে । বিয়ের সময় আত্মীয়-অনাত্মীয় অনেকেই এসেছিলেন আর তাদের যা কাঞ্জ, সেই অযাচিত উপদেশ দিতে ছাড়েন নি। মেয়েরা বিয়ের কথা বললে সিতাংশু হেসে উড়িয়ে দিয়েছে ; পুরুষরা বললে কথার জবাব ন-দিয়ে সেখান থেকে চলে গিয়েছে। তার রকম দেখে সকলে শেষে ঠিক করলেন ওর মধ্যে এমন কোন রহস্ত আছে যা ও লোকের কাছে প্রকাশ করতে সাহস করছে না। কেউ কেউ তার চরিত্র প্রবাসী ১৩৪৪ সম্বন্ধে সন্দেহ করতেও দ্বিধা করেন নি। সিতাংশুর কানে সবই আসত। এক-একবার তার মন হ’ত তাদের সব বিদেয় ক’রে দিয়ে জঞ্জাল দূর করে, কিন্তু তা পারত না। কতক্ষণই বা তার বিরক্ত করবার অবসর পাবে ? এই ত শেষ ! শুধু-শুধু কেন লোকের মনে দুঃখ দেয় ? বিয়ের পর সে নিশার স্বামী শরৎকে ডেকে বললে, “তোমার হাতে নিশাকে দিয়ে আমি নিশ্চিস্ত হ'তে চাই । কোন দিন তার খবর নিতে পারব কি না জানি নে ৷” সে ভদ্রলোক আশ্চৰ্য্য হ’য়ে গিয়েছিল, জিজ্ঞেস করলে, “কেন ?” “আমি কোথায় থাকব, না-থাকব তার কিছু স্থিরতা নেই। কালই হয়ত এখান থেকে চলে যাব। আর একটা কথা। আমার থাকার মধ্যে আছে এই বাড়ীখানা। সেটাও তোমাদের নামে রেজেষ্ট্রী ক'রে রেখেছি—এখানা রেখে দাও। কিছু দিন নিশাকে এ-কথা জানিও না।” “বাড়ীখানা আমাদের দেবার অর্থ ? আপনার নিজের ব্যবস্থা কি করেছেন জানতে পারি ?" “না, তার দরকার নেই।” *আপনার বাড়ীখানাতে যে আমার এমন বেশী দরকার তাও ত কই বলি নি।” “আমার ওটাতে দরকার নেই, তোমাদের দরকার হতে পারে। আর ওটা না-হয় আমার বোনকেই দিচ্ছি ধ'রে নাও না ।”

  • তাকেই তবে দিন গে। তার হ'য়ে ও-দায়িত্ব আমি নিতে পারি নে ৷”

সিতাংশু তার দিকে কিছুক্ষণ চেয়ে রইল। সে আঞ্জ প্রখম বুঝল সাধারণ সংসারী লোকও অর্থের জন্তে সব কিছু ভোলে না। এ রকম স্বামীর হাতে পড়ে নিশা কষ্ট পাবে না নিশ্চয়—সিতাংশুর এতে বড় কম লাভ নয়। তার শেষ দায়িত্বটাও এত সহজে তার ঘাড় থেকে নেমে গেল দেখে তার আনন্দ হচ্ছিল । শ্বশুরবাড়ী যাবার সময় নিশা এসে যখন সিতাংশুকে প্রণাম করল তখন অনেকেই ভেবেছিল, তার চোখে জল দেখতে পাবে ; কিন্তু সে বেশ সহজ ভাবে বললে, “যেখানে যাচ্ছ, আজ থেকে সেই তোমার ঘর ; সেখানে গিয়ে যদি স্বধী হতে না পার তাহলে আর কোথাও স্বর্থী হ’তে পারবে না ।” আজকালকার কোন ছেলের কাছে কখমুনির মত উপদেশ শুনবে শরৎ তা আশা করে নি। সে ঠিক করতে পারলে না সিতাংশুর এর মধ্যে কতটা অভিনয় আছে। 專 豪 贏 সিতাংশুর কাও দেখে আপিস-সুদ্ধ লোক অবাক হয়ে গিয়েছিল। তার খুব বরাত জোর বলতে হবে যে সে অত