পাতা:প্রবাসী (সপ্তত্রিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/৭৮৭

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

আণশ্বিন অল্প বয়সে অত বড় কাজ পেয়েছিল আর সেজন্যে অনেকেই তাকে ঈর্ষা করত। কেউ বললে, “লোকটার একেবারে মাথা খারাপ হয়ে গেছে ।" কেউ বললে, “অন্য কোথাও বেশী টাকার লোভ দেখিয়েছে।” সাহেব তাকে খুব ভালবাসত, অনেক বোঝাবার চেষ্ট৷ করলে কিন্তু কিছু লাভ হ’ল না। সিতাংশু শেষ পৰ্য্যস্তু চাকরি ছেড়ে দিলে । নিশা বা শরৎ কেউই সে-কথা জানতে পারলে না ! সিতাংশুদের বাড়ীর দরঞ্জায় চাবি পড়তে সেটা সকলের আগে চোখে পড়েছিল অমলার । নিশার বিয়ে হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে যে তাদের বাড়ীর দরজা বন্ধ হয়ে যাবে তা কেউ ভাবতেও পারে নি। অমলা ভেবেছিল সিতাংশু কিছু দিনের জন্তে বাইরে কোথাও গিয়েছে তাই সে নিশার শ্বশুরবাড়ী থেকে ফিরে আসা’ পর্য্যস্ত অপেক্ষা করছিল। অস্ততঃ আট দিনের আগে সে ফিরবে না । নিজেকে সে যতই ভুল বোঝাতে চেষ্টা করুক, ভুল বোঝান অত সহজ নী । তার বৌদি তাকে জিজ্ঞেস করলে, “এদের ব্যাপার কি বল ত ভাই ? বোনের বিয়ে হ'ল ত ভাই হ’ল দেশছাড়া---” অমলা বললে, “আমি তার কি জানি ? তুমিও যেখানে আমিও সেখানে ৷” “ঠিক তাই কি ? ওবাড়ীর কারও জন্যে মাথা না ঘামালেও আমার চলবে কিন্তু তোর ••” অমলা তাকে বাধা দিয়ে বললে, “তোমার পায়ে পড়ি বৌদি, তুমি চুপ কর।” “ওকি তুষ্ট কাদছিস ; আমি ঠাট্টা করছিলাম ভাই ।” “ও রকম ঠাট্টা মাতুব করে ?” “কিন্তু এ রকম ক’রে তুই ক'দিন থাকবি ?” “তা জানি নে ৷” “তোর দাদা যদি জোর করে বিয়ে দিয়ে দেন তাহ’লে কি করবি ?”

  • তাও জানি নে ৷” *ও ছেলেমাচুর্থী ছাড়তে চেষ্টা করাই ভাল । সময়ে সব ঠিক হয়ে যায়। কত মেয়েকে ত দেখলাম, বিয়ের পরে আগেকার জীবনটাকে মস্তবড় ভুল ব'লে স্বীকার করেছে।”

“কি ক’রে পারে বল ত ?” “কেন পারবে না ? হিন্দুর মেয়ের ছোটবেলা থেকে স্বামীর জন্তে মনের মধ্যে একটা স্থান ঠিক ক’রে রাখে, বিয়ে করার পর সেইখানে স্বামীকে প্রতিষ্ঠা করে। বিয়ের আগে যদি কাউকে ভাল লাগে তাকে সে ঠিক ঐ জায়গাটায় কিছুতেই বসাতে পারে না।” যার লাগি তেণর••• b~8° “তোমার মত ক'রে ওসব কোন দিন ভেবে দেখি নি ভাই, ও আমি বুঝতেও পারি না।” অমলার ওসব আলোচনা ভাল লাগছিল না। তার কথা নিয়ে কেউ আলোচনা করে, তাকে সহানুভূতি দেখায় এ সে সহ করতে পারত না । ছোটবেলা থেকে সে কখনও কোন বিষয়ে কারও কাছে অভিযোগ করে নি ; কারও সাহায্য নিতে তার আত্মসম্মানে বাধত । 毫 屬 鷺 শরৎকে সঙ্গে নিয়ে নিশা অমলাদের বাড়ী আসতে সবাই একটু আশ্চৰ্য্য হয়ে গিয়েছিল । শরৎ অশোকের মাকে বললে, “আপনারা বোধ হয় আশ্চর্ষ্য হয়ে যাচ্ছেন, কিন্তু কি করব বলুন ? নিশার কে আছে যে তার কাছে নিয়ে যাব ? এখন জানার মধ্যে এক আপনারা, তাই আপনাদের কাছে নিজেকে পরিচিত ক’রে নিতে এলাম * অশোকের মা ভারী খুশী হয়েছিলেন ; বললেন, “তোমার মত ছেলেকে বলবার কিছু নেই। সিতাংগু নিশাকে ছেড়ে দূরে থাকতে পারে, কিন্তু আমরা পারি নে। ছোড়াটা কি করলে বল ত ?” “কিছুই ত বুঝতে পারছি নে । তিনি যদি নিজের উন্নতির জন্যে গিয়ে থাকেন তাতে বলবার কিছু নেই, তবু মনে হয় বড় ব্যস্ত হয়ে করার মত কাজ তিনি নেন নি। দু-দশ দিন বাদে ক'লকাতা ছেড়ে গেলে তার কি ক্ষতি হ’ত ?” "বুঝি না বাবা। ওর ম+ই ত ওর শত্রু ! শুধু ওকে এসব খেয়াল শিখিয়ে যায় নি, আবার ঠিক এই সময়টিতে নিজে সরে গিয়ে ওকে একেবারে নিঝঞ্ঝাট ক’রে দিয়ে গেল।” নিশা শরতের সঙ্গে আমলার পরিচয় ক'রে দিলে । শরৎ বললে, “সিতাংশুবাবুকে আমি মোটেই হিংসে করি না। র্তার জীবনে অনেক দুঃখ আছে তা না হ’লে কেউ এসব ছেড়ে যায় না ।” নিশা অমলাকে চুপি চুপি বললে, “তোকে একটা কথা বলব ভাই কিছু মনে করিস নি। তুই বিয়ে কবু। যে তোর দাম বুঝলে না তার জন্তে•••* “আমি কারও জন্তে কিছু করছি নে। বিয়ে করব না এমন কথাও আমি বলি নে, আর তা বললেই বা চলবে কেন । নিজের পায়ে দাড়াবার মত শিক্ষা ত পাই নি।” “সেই মতিই যেন তোর হয় ভাই। যদি কোন দিন তাকে এ-পথে ফিরতে হয় তাহ’লে যেন ভাবতে না পারেন কেউ তার জন্তে পথ চেয়ে বসে ছিল ।” “ৰে ষায় সে ফেরার জন্ত যায় না।” “কিন্তু যাওয়াটাই ত আর সবচেয়ে বড় কথা নয়, আর