পাতা:প্রবাসী (সপ্তবিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/১৮৭

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

>Պ8 কিছু দিন পরেই জানা গেল ”ে, জয় খেলে, মদ খেয়ে, নগদ টাকা সবই সে খুইয়েছে, এখন গহনাগুলি নিয়ে বিক্ৰী কবুবায় জন্যে স্ত্রীকে মারধোর স্বরু করেছে। বুড়ে গেল বিষম চটে, মেয়েকে নিয়ে আসতে সেইদিনই লোক গিয়ে উপস্থিত। বড় মাহুষ বেহাইকে চটাতে মেয়ের শ্বশুর শাশুড়ী সাহস করলে না ; দিলে পাঠিয়ে । মেয়ের গায়ে তখনও কালো কালে দাগ, স্বামীর ছড়ির চিহ্ন। সেইদিনই উকিল ডাকা হ’ল, উইল হ’ল । মেয়ের নামে কিছুই দিল না বুড়ে ; নগদ টাকা যা ছিল সব লিখে দিল বড়মামার নামে। মাসির ছেলে পিলে ছয়নি, হবারও সস্তাবনা ছিল না, কাজেই জমিদারী ত মামাদের হাতে এমনিই ফিরে এল । কিন্তু উঠলে ব্যবস্থা রইল বংশে কোথাও ছেলে থাকৃতে, মেয়েতে ও টাকা পাবে না। এখন বৌঠানের ছেলে হ’লে অবশ্য উদয় ভায়ার অদৃষ্টে জুটবে কাচকল, তাদের নিজেদের অংশের জমিদারী ত বাপ-বেটীয় মিলে দিব্য ফুকে দিয়েছেন ; এখন সংসার চালানই ভার । মেয়ে হ’লে ত নবাব হয়ে যাবে I* বিজন বলিল, “এইজন্যে সারাক্ষণ কেবল করছে ‘বৌঠানের মেয়ে হবে বৌঠানের মেয়ে হবে" । ছেলে হ’লে বোধহয় মাথা কুটে মরূবে ।” ভূবন বলিল, “পচিশ ত্রিশ বছর আগে হ’লে বোধহয় সাধু সন্ন্যাসীকে টাকা দিয়ে যাগ-যজ্ঞ লাগিয়ে দিত, যদিই তার ছেলেটাকে মেয়ে ক’রে দিতে পারে।” স্বামী স্ত্রীতে তাহারা বারান্দার যে অংশে বসিয়া কথা বলিতেছিল, তাহ সদর দরজার পাশেই । দরজাট। ভাল করিয়া বন্ধ ছিল না, ভেজান ছিল মাত্র। অনেকক্ষণ ধরিয়াই একটি প্রৌঢ় স্ত্রীলোক দরজার ওপাশে গাড়াইয়া ছিল । ইহাদের কথাবাৰ্ত্ত। সে ভাল করিয়া শুনিতে না পাইলেও, যা দুচার কথা শুনিতে পাইতেছিল ভাহাতেই উত্তেজনায় তাহার চোখ মুখ লাল হইয়া উঠিয়াছিল । স্ত্রীলোকটি যে ভবানী তাহা বোধহয় না . বলিয়া দিলেও চলে। সে পিসিমার সহিত আলাপ জমাইবার উদ্বেপ্তেই আসিয়াছিল, কিন্তু বাড়ীর ভিতর 途 প্রবাসী—জ্যৈষ্ঠ, ෆළV8 { ২৭শ ভাগ, ১ম খণ্ড ঢুকিবার আগেই গলার স্বর কানে আসাতে, दाहिएब्रहे দাড়াইয়া গেল । কিন্তু ভাল করিয়া ত সব কথা জানা দরকার । এখান হইতে তা শুনিবার সম্ভাবনা ছিল না। অগত্যা সদর দরজার কড়াটা বেশ জোরে জোরে নাড়িয়া সে ডাকিয় বলিল, "কে আছো গে? দোরটা একটু খুলে দিয়ে যাও।” ভুবন একহাতে স্ত্রীর কোমর জড়াইয়া ধরিয়া তাহার কোলে মাথা দিয়া, লম্বা হইয়া মাছুরের উপর শুইয়া পড়িয়া ছিল। কিছু দূরে মাতার শয়নকক্ষ হইতে গভীর নাসিক্যধ্বনির শব্দ তাহাদের জানাইয়াই দিতেছিল যে, এখন ওদিক হইতে কোনো বিপদের আশঙ্কা নাই । হঠাৎ ভবানীর ডাকে ব্যস্ত হইয়। ভুবন একলাফে উঠিয়৷ পড়িল, বৌও ঘোমটাটা অত্যন্ত দীর্ঘ করিয়া টানিয়া দিয়া একাগ্র মনোযোগ সহকারে আচার, চাটুনী হইতে মাছি তাড়াইতে বসিয়া গেল । ভুবন দরজাটা টানিয়া খুলিয়া দিতেই ভবানী ভিতরে ঢুকিয়! আসিল । বিজনবালাকে দেখিয়া বলিল, “কি ના বেীমা, তোমার শাশুড়ী ঠাকুরুণ ঘুমিয়েছেন নাকি ?” স্বামী উপস্থিত থাকাতে বিজনবালা কথার উত্তর ন৷ দিয়া মাথা হেলাইয়া জানাইল যে, তাহার পূজনীয় শাশুড়ী ঠাকুরাণী ঘুমাইরা পড়িয়াছেন বটে। ভবানী তাহার কাছে আসিয়া, বসিয়া বলিল, “অন্য সময় ত ফুরসৎ পাই না । ভাবলুম এখন কাজকৰ্ম্ম নেই, একটু পিসিমার সঙ্গে দেখা ক’রে আসি । থাকি, কিন্তু দেখাশোনা ত হয় ন!” ভুবন ভবানীর আবির্ভাবের সঙ্গে-সঙ্গেই সেথান হইতে সরিয়া পড়িয়ছিল । দুপুর বেলাটা ঘুমাইবারও জে৷ নাই তাহ হইলে শাশুড়ী উঠিয়া বকিয়া ভূত ছাড়াইবেন, স্বতরাং জাগিয়াই খখন থাকিতে হইবে, এবং সব-চেয়ে প্রিয় সঙ্গীটিও অবস্থাগতিকে পলাতক, তখন গল্প করিবার একজন লোক পাইয়। বিঞ্জনবালা খুলিই হইল। মাথার কাপড় একটু খাটো করিয়া দিয়া বলিল, “হা, মা একটু শুয়েছেন। তা তুমি বোসে না । তিনি উঠবেন এই একটু পরেই। দিদি কেমন আছেন ?” ভবানী বলিল, “এখন ত মোটের ওপর ভালই। সবাই