পাতা:প্রবাসী (সপ্তবিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/৪০৫

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ويسيويه ঘরের ভিতর জুতার শব্দ পাইয়াই চঞ্চল উঠিয় বসিল । সঞ্জয় হাসিয়া বলিল, “ও আপনি ! আমি কি রকম ভয় পেয়ে গিয়েছিলুম।" চঞ্চল। বলিল, “কেন ? আপনি কি এখনও ছেলেবেলার মত অন্ধকারে শাখচুীর ভয় করেন নাকি ?” সঞ্জয় বলিল, “শাখচুন্নী দেখলে ত ধ’রে ঘাড় মট কে দিতাম। হঠাৎ মনে হয়েছিল স্বর্গ থেকে দয়া ক’রে কে নেমে এসেছে, তাই ভয়ে চমকে উঠেছিলাম।” চঞ্চল সলঙ্গহন্তে মুখখানা নামাইয়া লইল। কিন্তু বিস্থিতও হইল ; কি বলে এ যুবক ? রোগী দেখিতে আসিয়া রোগীর সম্মুখে এরকম প্রলাপ বাক্য ত ইহার মুখে শোভা পায় না। ইহার মুখে এমন কথা শুনিতে সে কোনো দিন স্বপ্নেও ভাবে নাই। সঞ্জয় তাহার বিস্থিত দৃষ্টি দেখিয়া হাসিয়া বলিল, “আপনি আমাকে পাগল-টাগল কিছু ভাষ ছেন, না ? ভয় পাবেন না, আমি পাগল নই। আপনাকে দেখে আজ এমন একজনকে মনে পড়ে, গেল যে, আমি নিজকে সাম্লাতে পারলাম না। আমার একমাত্র বোন, আমাদের সকলের দিদি ছিলেন যিনি, তিনি কাজ করতে করতে ক্লাস্ত হয়ে পড়লে ঠিক আপনার মত এমনি করে হাতের কাজ হাতে রেখে শুধু মাথাটা বালিশে দিয়ে জিরিয়ে নিতেন। তার হেঁট-করা মাথা ঘাড় সমস্তর ভঙ্গী অবিকল আপনার মত ছিল। কোনোখানে একটু প্রভেদ নেই। যাক সে কথা, এখন আমার কাজট আগে সেরেনি।” সঞ্জয় ছোট মেয়েটির হাতখান তুলিয়া লইল । তারপর চঞ্চলার সাহায্যে যথাসাধ্য পরিপূট করিয়া ব্যাওেজ করিয়া তাহাকে একটা ঘুমের ঔষধ দিয়া দিল । চঞ্চল৷ ক্ষিপ্ৰহস্তে তাহার সমস্ত কার্ধ্যে সাহায্য করিয়া যাইতেছিল। ইতিমধ্যে ঘরে গৌরী আসিয়া পড়িল । ছুইজনে একমনে কাজ করিতেছে দেখিয়া সে আর কিছু করিতে অগ্রসর হইল না ; তাহার কেমন যেন মনে হইল ইহার তৃতীয় ব্যক্তির উপস্থিতি চায় না। গৌরীর একটু বিরক্ত লাগিল। তাহার পর সে নিজেকেই বুঝাইল ;– ইহা ত স্বাভাবিক জিনিষ মাত্র। বিশেষ মানুষ বিশেষ প্রবাসী—আষাঢ়, లి08 [ ২৭শ ভাগ, ১ম খণ্ড মাছুষের সঙ্গ চায়, তৃতীয়ের উপস্থিতি সে সঙ্গ-মুখ ত মাটি করিয়াই দিতে পারে । গৌরী বলিল, “অনিমার ত হাত বাধা হ’য়ে গেছে দেখছি ; তবে অামি আর অকারণ দাড়িয়ে কি করব ? যাই, কালই ত আবার দেখা হবে।” সঞ্জয় বলিল, “হ্যা, কাল আপনার বিশেষ ছাত্রটিকেও একবার দেখে যাব । ওকে নিয়ে আপনি আমাদের অশেষ উপকার করেছেন। আপনার সদৃষ্টান্তে অনেক কাজ হবে।” গৌরী নমস্কার করিয়া বাহির হইয়া গেল। যাইতে যাইতে শুনিল—সঞ্জয় বলিতেছে, “আসি তষে। সেই ছেলেবেলাকার কচি মনটা আজ আট বৎসর পরে যেন আবার জেগে উঠল। মনে পড়ে গেল কেমন ক’রে সেদিন কেঁদেছিলুম।” গৌরী আর দাড়াইল না । ভাবিল, পরের কথা আমার কি শোনা উচিত ? চঞ্চল। উদ্‌গ্ৰীব হইয়া বলিল, গেলেন ?” সঞ্জয় বলিল, “আমরা পাটনায় থাকৃতেই তিনি মারা গিয়েছেন। সবে দু বচ্ছর র্তার বিয়ে হয়েছিল। কে জানে হয়ত আপনার সঙ্গে আমাদের পূর্বপুরুষের কোনে যোগ আছে!” নইলে আপনার প্রত্যেটি চলা-ফের পৰ্য্যস্ত দিদির মত কেন ? চঞ্চল মুখখান নামাইয়া বলিল, “সম্পর্ক না থাকাই সম্ভষ আর না থাকাই ভাল।” সঞ্জয় হাসিয়া বলিল, “কেন, আমার মত ভবঘুরের সঙ্গে সম্পর্কও রাখতে চান্‌ না নাকি ? দিদি ছাড়া আমার আর বোন নেই, তাই আমার কিন্তু ওদিকে একটু লোভ আছে ।” চঞ্চল যলিল, “আমাকে আপনি চেনেন না তাই বলছেন ; চিনলে আর ওকথা বলতেন না।” সঞ্জয় বলিল,"আপনাকে ত খুব ভয়ঙ্কর মনে হচ্ছে না। চিন্‌লেই ভয়ে ছুট মায়ূব এমন আকাঙ্ক্ষা আমার মোটেই হচ্ছে না। পরিচয়টা দিয়েই ফেলুন না। অবশু তার আগে আমার নিজের পরিচয় দেওয়া উচিত। অামার বাবা হৃষিকেশ গাজুলী ওইদিকেই ওকালতী করতেন। “তিনি কোথায়ু