পাতা:প্রবাসী (সপ্তবিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/৫১৫

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

858 প্রবাসী—শ্রোবণ, ১৩৩৪ [ २१° उांश, sञ थ७ জ্ঞান বিজ্ঞানের বিশাল অরণ্যে কোনটিকে বাছিব ? যাহার সাহায্যে এমন জীবন গঠন করা যায় যাহাতে মানুষকে সব-চেয়ে কম দুঃখ ও সব-চেয়ে বেশী আনন্দ দিতে পারি তাহাই আমার কাছে সৰ্ব্বোচ্চ বিজ্ঞান ; এবং আমাদের তুচ্ছতম কাজেও যখন শিষ স্বন্দরের ছায়া পড়িবে, তখন সেই জীবনকেই সৰ্ব্বোচ্চ শিল্প বলিব । কিন্তু যে-সব ভও শিল্প-বিজ্ঞান বিশ্বমানবকে ঠকাইয়া আসিতেছে তাহার মধ্যে কল্যাণধৰ্ম্ম শিল্প-বিজ্ঞানের স্থান কোথায়? আজকাল সমাজে শিল্প ও বিজ্ঞান বলিয়৷ যে-সব ঞ্জিনিষ চলে তাহার অধিকংশই একট। বিরাট বুজরুকী মাত্র । এককালে ছিল ধৰ্ম্মের বুজরুকী এখন তাহার স্থান জুড়িয়া বসিয়াছে শিল্প-বিজ্ঞানের বুঞ্জরুকী। চোখে ঠুলী দিয়া দিব্য আরামে আমরা আছি ! কিন্তু মনে নাই যে, অনেক জিনিষই চোখে পড়িতেছে না। চোখের ওই ঠুলীট দূর করিয়া ফেলিয়া একেবারে গোড়া হইতে নূতন চোখে সব জিনিব দেখিতে হইবে । গন্তব্য পথের সন্ধান করিতে হইবে। কত প্রলোভন পথ ভুলাইতে চেষ্টা করে। হাত অথবা মাথা খাটাইরা আমরা খাই, ক্রমশঃ সামাজিক মৰ্য্যাদার সিড়ি বাহিয়া উপরে উঠিতেছি, ক্রমশ বনিয়াদীদের ধাপে উঠিয়া সভ্যতার নব্য পাগু হইয়া গৰ্ব্ব অমুভব করিতেছি। জার্মানদের মত "কালচারে'র নামে প্রায় মুছ। যাই আর কি ! এত কষ্টে জাতে উঠিয়া এত বামনাই করিয়৷ হঠাৎ আগাগোড়া সবটাকে অবিশ্বাস করিতে হইলে অনেকখানি সরলতা ও সত্য নিষ্ঠ থাক। দরকার ; সত্য ও কল্যাণের প্রতি প্রগাঢ় নিষ্ঠ না থাকিলে এ পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হওয়া যায় না। কিন্তু নাঙ্ক: পস্থা বিদ্যতে অয়নায় ; যে কেহ প্রাণের মধ্যে সাড়া পাইয়াছে জীবনের সমস্ত তোমার মত যাহাদিগকে আকুল করিয়াছে,তাহাদের সত্যের পথ না ধরিয়া গতি নাই । মোহের আবরণ যতই মধুর হউক, সকল কুসংস্কারের বন্ধন ছিন্ন করিয়া চিত্তকে মুক্ত করিয়া স্বচ্ছদৃষ্টিতে দেখিতে হইবে। যে মানুষ অন্ধভাবে তার গোড়ামিকে অঁাকৃড়াইয়া থাকে তাহার ৰথ বলিয়া লাভ নাই। যুক্তির ক্ষেত্র যদি সম্পূর্ণ উন্মুক্ত না হয়, তাহা হইলে অনেক স্বক্ষ তর্ক অনেক স্বন্দর বক্তৃত৷ হইতে পারে কিন্তু সত্যের দিকে এক পাণ্ড অগ্রসর .. 3. হওয়া যায় না। সমস্ত যুক্তি গোড়ামির খোটায় ধাক্কা খাইবে, সকল সিদ্ধান্ত ভূল হইবে। গোড়ামী শুধু ধৰ্ম্মে নয় তথাকথিত সভ্যতার রাজ্যেও আছে, দুই-ই মূলতঃ এক বস্তু। গোড়া ক্যাথলিক বলিবে, “আমরা কি যুক্তি মানি না ? মানি বই কি ; তবে যুক্তিকে শাস্ত্র ও আচারের উপরে যাইতে দিই না, কারণ তাহদের মধ্যে পূর্ণ ধ্রুব সত্য বুহিয়াছে।” সভ্যতার পাও! বলিবে, “আমার সমস্ত যুক্তি শিল্প ও বিজ্ঞান পর্যস্ত গিয়া থামিয়া যায়। কারণ উহাদের মধ্যে আমি সভ্যতার পূর্ণ বিকাশ দেখি। মানবের সমস্ত জ্ঞান আমাদের বিজ্ঞানে পৰ্য্যবসিত ; পূর্ণসত্যকে এখনও বিজ্ঞান ধরিতে ন পারিলেও ভবিষ্যতে পাপ্লিবে এবং আমাদের শিল্পের উদণর ভিত্তির উপর সত্যশিল্পের একমাত্র প্রতিষ্ঠা ” ক্যাথলিক বলিবে, “মানুষের বাহিরে একটি মাত্র বস্তু পূর্ণ ভাবে আছে সেটি হইতেছে সজা (church) ।” আর সংসারী বলিবে, “মানুষের বাহিরে আছে শুধু সভ্যতা ” ধৰ্ম্মে অন্ধসংস্কার লইয়া আলোচনা করিতে যুক্তির দুৰ্ব্বলতাট। আমরা সহজেই ধরিতে পারি, কারণ, সেই সংস্কার আমরা কাটাইয়া উঠিয়াছি। কিন্তু যে করে তার কাছে একটি মাত্র ধৰ্ম্ম, একটি মাত্র সত্য আছে যেটি বিশ্বাস সে বিশ্বাস করে । অথচ সেট যুক্তিত্বার। সে প্রতিপন্ন করিয়াছে বলিয়া তার ধারণা। সভ্যতা-সংস্কার লইয়াও আমাদের সেই একই অবস্থা ; আমরা বিশ্বাস করি যে, জগতে শুধু একটি মাত্র খাটি সভ্যতা আছে, সেটি আমাদের ; অথচ নিজেদের অযৌক্তিকতাট। মোটেই আমরা দেখিতে পাই না । আমরা প্রমাণ করিতে চেষ্টা করি সকল যুগ সকল জাতির মধ্যে আমাদের এই যুগ এই জাতিই সত্য সভ্যতার অধিকারী । যে কয়েক কোটি লোক ইউরোপ খণ্ডে বাস করে তাহারাই সঙ্কল খাটি বিজ্ঞান ও শিল্পের মালিক ! জীবনে সত্যের প্রকাশ অতি সহজ ; এই সত্যকে ধরিতে বিজ্ঞান দর্শনের গভীর জ্ঞান ন হইলেও চলে, কিন্তু একটি জায়গায় নাস্তিবাদী না হইলেই নয়—সমস্ত মূঢ় সংস্কার ও অন্ধ বিশ্বাসকে “নেতি” বলিয়া উড়াইয়া দিয়া পূর্ণ মুক্ত চিত্তে দাড়াইতে হইবে। হয় শিশুর মত সরল হইতে