, ১ম সংখ্যা } হ’য়ে পড়ে। আমাকে ত কই, কেউ এখনে 'হারাতে পারলে না । আমি অবাকৃ হইয়া শুনিতেছি দেখিয় সে আবার বলিল, একট। ঘটনা শোনেন তো বলি। রাত হ’য়ে যাবে দিদিঠাকরুণ, তা আমি আপনাকে বাড়ী পৌছে দিয়ে আসব। আপনি রায় পাড় বেড়াতে গেছলেন কি ? যদি ওদিকে যান, তথে—বাবুর বাড়ীতেও যাবেন । বউটি বেশ ভালো, কিন্তু বাবু ভারী খারাপ ; তার ক্ষমতা আছে, জমিদার-বাবুর কুটুম কি না, যা ইচ্ছে তাই কবৃন্তে যান। আমি দাড়ী ছিড়ে দিয়ে ওঁর স্বভাব অনেকটা শুধরে tिप्रक्केि ! একদিন দিদি, ভোরের বেল পুকুর-ঘাটে মুখ ধুতে গিয়েছি ; রায় বাবু তখন পুকুরের ওপারে পাইচারী করতে করতে এদিক পানে তাকিয়ে তাকিয়ে কি দেখছিলেন ; হঠাৎ আমার নজর পড়ে গেল ; মুখ ফিরিয়ে দেখলুম, শশী তাতির বউও তখন বাসন মাজতে বসেছে। বেড়াল যেমন তার বড় চোখ আরও বড় ক’রে শিকারের দিকে চেয়ে থাকে, উনিও তেমনি জলন্ত দৃষ্টিতে সেই স্বনারী বউটর আধ-ঘোমটী-ঢাকা মুখের পানে বিশ্ৰী ভাবে চেয়েছিলেন। তার পর থেকে রোজ সকাল-বেলা রায় বাবুকে পুকুরের ওপারে দাড়িয়ে থাকৃতে দেখা যেতে লাগল। মেয়েদের কাজ করবার ঘাট—তা এখানকার পুরুষগুলো যা, কেউ তাকে কিছুই বলতে সাংস কবুল না। রায় বাবু ক্রমে ক্রমে পুকুরের এপারে এসে, একে বারে শণীদের ঘাটের সাম্নে দাড়িয়ে, এই গাছগুলোর ভেতরে— কোনটা কোনটা তার—ওর কোন ডাল কে কবে কেটে নিয়েছে, এই সবের তদারক করতে লাগলেন। বেগতিক দেখে বউটি আর বাড়ীর বার হ’ত না, তার শাশুড়ী তখন ঘাটের কাজ সাৰ্বতে লাগল। রায় বাবুও ঘাট মাঠ ছেড়ে, শশীর বাড়ীর সামনের রাস্তায় এসে অস্থির হয়ে ঘুরে বেড়াতে লাগলেন। রোজ রোজ তার এইরকম ভাব দেখে দিদি, আমার তো একেবারে অসহ হ’ল ; তবু গায়ে পড়ে আর ঝগড়া কবুলুম না, চুপ চাপ থেকে সব দেখে যেতে লাগলুম। গ্রামের মেয়ে 86: শশীর মা আর বউতে একদিন কি কথা নিয়ে ঝগড়া বেধে গেল, শশী তখন বাড়ী ছিল না। গোল বেড়ে চলেছে দেখে আমি আর পাচুর মা ওবাড়ীতে গেলুম দেখি যদি থামিয়ে দিতে পারি। ওমা, দেখি কি, রায় বাবু ওদের বাড়ীর ভেতরে হন হন ক’রে রাম-ঘরে গিয়ে শশীর মাকে ধৰ্ম্মকে বলছেন, ‘ওকি কবৃছিস বুড়ী ? একল পেয়ে বউটিকে তুই মেরে ফেলবি নাকি ! শশীর মাকে ধাক্কা দিয়ে সরিয়ে যেমন তিনি বউয়ের সামনে যাবেন আমনি দেখলেন আমি শণীর বউকে আড়াল ক’রে দাড়িয়ে, রুখে উঠে তাকে বললুম, “একি করছেন আপনি, বাৰু। মেয়েতে মেয়েতে ঝগড়া হচ্ছে, আপনি কেন তার ভেতরে এসেছেন ? বাইরে যান শীগগির । তিনি প্রথমে একটু অপ্রস্তুত হ’য়ে আমার পানে চাইলেন, তার পরেই বাঘের মত গর্জে উঠলেন, কি, আমাকে তুই হুকুম করচিস ? হারামজাদী, এত আস্পৰ্দ্ধা তোর !" এই বলে যেই ঘুমী তুলেছেন,আমিও অমনি ঝাঁট ক’রে র্তার দাড়ীর গোছ ধ’রে, ঘাসের মত সেগুলো পটাপট ছিড়ে ফেলতে লাগলুম। তখন আমার আর জ্ঞান ছিল না । পচুর মা বললে, বাবুও আমার পিঠে দু চারটে ‘চড়-চাপড়’ বসিয়ে দিয়েছিলেন, আমি কিন্তু কিছু টের পাইনি। দাড়ীগুলোর অৰ্দ্ধেকটা উপড়ে ফেলতেই রায় বাবু ব্যাথায় অস্থির হয়ে বসে পড়লেন ; রক্ত-মাখ। তার মুখখান। তখন যে কি ভীষণ দেখাচ্ছিল, দিদি ! মুখে কাপড় চাপ দিয়ে তিনি তাড়াতাড়ি ঘর থেকে বেরিয়ে গেলেন। আমি তখন পেছন ফিরে দেখলুম, শশীর বউ লজ্জায় বেড়ার সঙ্গে যেন মিশে দাড়িয়ে রয়েছে, আর সবাই অবাক হ’য়ে এই কাও দেখছে। উকুনে কি চাপানে ছিল, আমি তাই থেকে একখান পোড়া কাঠ নিয়ে বাবুর পেছনে পেছনে ছুটতে ছুটতে বল্লুম,পালিয়ে যাচ্ছ? ওগো বাবু, যাও। এমন পিরবিত্তি নিয়ে আর কখনে। এ পাড়ায় পা বাড়িও ন!—আজকের এ ঘটনা এ বেদন যেন তোমার মনে থাকে।” রুদ্ধ নিশ্বাসে শুনিতে শুনিতে আমি তাহার মুখের দিকে চাহিয়া বলিলাম, “তোমায় যে ওরা আমনি ছেড়ে দিয়েছে বাতাসীর মা, আমি আশ্চৰ্য্য হচ্ছি। ঘরে আগুন ধরিয়ে f
পাতা:প্রবাসী (সপ্তবিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/৫৬
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।