পাতা:প্রবাসী (সপ্তবিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/৮১১

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

Գե-օ ^. ও প্রেমমার্গের পথ হইল। একদিকে কালীর মাতৃরূপ ধারণ, অপর দিকে রাধাকৃষ্ণের প্রেমের উন্মাদন । বৈষ্ণব শাক্ত সম্প্রদায় স্বতন্ত্র, কিন্তু মূলে ত সেই এক, ধিনি হর তিনিই হরি, যিনি শিবানী তিনিই নারায়ণী । শ্রীচৈতন্য কিরূপ ভক্তি-প্রেমের বস্ত আনিয়াছিলেন মনে করিলে এখনও পুলকাঞ্চিত হইতে হয়। কোথায় গেল নিমাই পণ্ডিতের পাণ্ডিত্যাভিমান ও তর্ক-প্রবণতা ! হরি নামের স্রোতে দ্যায় ব্যাকরণ সব ভাসিয়া গেল । নবীন সন্ন্যাসী গৌরাঙ্গের প্রেমোন্মত্ততায় নবদ্বীপ চঞ্চল হইয় উঠিল । তপন শান্তিপুর ডুবু ডুবু নদে ভেসে যায় ! হরিবাসরের সমস্ত রাত্রিব্যাপী সঙ্কীৰ্ত্তন, পথেঘাটে হরিনাম-মাহাষ্ম্যের ঘোষণা । ভক্তির গদ গদ ভাব, সাত্ত্বিক ভাবের স্বেদ, অশ্রু, পুলক, কম্প দেখিয় লোকে চমৎকৃত হইল, গৌর নিতাইয়ের কৃপায় কত জগাই মাধ্যই তরিয়া গেল । ভিন্ন ভিন্ন যুগে সাধনার ভিন্ন রূপ লক্ষ্য করা যায়। তপস্তার কঠোর আত্মসংযম ও আত্মপীড়ন বিস্ময় উদ্রেক করে,কিন্তু নিম্পূহ তপস্তার দৃষ্টান্ত বড় একট। দেখিতে পাওয়া যায় না। প্রাচীন গ্রন্থাদিতে সকাম তপস্তারই উল্লেখ আছে। কেহ ইন্দ্রত্বের জন্ত, কেত অমরত্বের জন্ত, কেহ ব্রাহ্মণত্বের জন্ত, কেহ বলবান শক্রকে পরাজয় করিবার জন্ত তপস্তা করিত। তপস্ত ও ধ্যানে প্রভেদ এই যে, তপস্বী প্রার্থনাকারী, কোন বরলাভের জন্ত তপস্যা করিতেন, ধ্যানী কেবল মাত্র ব্রহ্মজ্ঞান লাভ করিবার উদ্দেশ্বে ধ্যান করিতেন। কঠোর তপশ্চরণ করিয়া তাহাতে কোন ফল হয় না দেখিয়া বুদ্ধদেব ধ্যানস্থ হইলেন, ধ্যানে নিৰ্ব্বাণের আলোক প্রাপ্ত হইলেন । বহুতর বৌদ্ধ গ্রন্থে বুদ্ধদেবের সমাধিস্থ অবস্থার বার বার উল্লেপ আছে। নিষ্কাম ধৰ্ম্মের শিক্ষা প্রথমে গীতায় দেখিতে পাই, এই অপূৰ্ব্ব গ্রন্থে প্রথমে প্রচারিত হয় যে মানব সাধনা করিবে, কিন্তু সে সিদ্ধির অধিকারী নয়, ধৰ্ম্মবৃক্ষ রোপণ করিয়া তাহাতে নিত্য জল সেচন করিবে, কিন্তু ফল ভগবানকে সমর্পণ করিবে। সাধনার এই উচ্চতম আদর্শ। ধৰ্ম্মসাধনের বিবৰ্ত্তনে প্রেমাদ্র সাধনাই সৰ্ব্বশেষের বিকাশ, জীব ও ব্রহ্মে দূরতী তিরোহিত হইয়া নৈকট্য স্থাপিত হয়। জ্ঞান দ্বারা সাবিত অদ্বৈতভাব স্বতন্ত্র, কারণ তাহাতে জীব ও ব্রহ্মে ভেদ থাকে না। এ প্রবাসী—আশ্বিন, ১৩৩৪ [ ২৭শ ভাগ, ১ম খণ্ড বিশ্বাসে জ্ঞানের গৌরব আছে, ভক্তির প্রেম नांडे ধৰ্ম্মের যুগযুগান্তরে এইরূপ বিশ্বাস ও সাধনার পর্য্যায়। দেবতার রুদ্র রূপের কল্পনা পুরাণ হইতে আরম্ভ নয়। উপনিষদে রমণীকুলে ধষ্ঠ। মৈত্রেয়ী তাহার অতুলনীয় প্রাগন। মন্ত্রে ব্রহ্মকে রুদ্র নামে অভিহিত করিয়াছেন । আসতোমাসদগময়, তমসোম। জ্যোতির্গময়—অসত্য হইতে আমাকে সত্যে লইয়। যাও, অন্ধকার হইতে আমাকে আলোকে লইয়। যাও । প্রার্থনাসমাপ্তিতে মৈত্রেরী বলিতেছেন, রুদ্র স্বত্ত্বে দক্ষিণং মুখং তেন মাং পাহি নিত্যমূ–হে রুদ্র, তোমার ঘে প্রসন্ন মুর্ণ তদ্বার। আমাকে সতত রক্ষা কর। দেবতার বাম, অপ্রসন্ন, রুদ্র মূৰ্ত্তি প্রথমেই মৈত্রেয়ীর স্মরণ হইতেছে, কিন্তু সেই দেবত প্রসর হইলে রক্ষা করেন। রুদ সূৰ্বতে খিনি সংহারকত্তা, প্রধম মূৰ্ত্তিতে যিনি রক্ষাকৰ্ত্ত, সেই দেবতার উভয় মুক্তি মৈত্রেয়ী যুগপং কল্পনা করিতেছেন। অতএব এই পরস্পর বিরুদ্ধ দ্বৈত ভাব দেবতার সনাতন কল্পনা । শস্তুর শিবসুন্দর রূপ, আবার তাহারই প্রলয়ঙ্কর, সৰ্ব্বদহনকারী মহাকাল মুক্তি । ধিনি করাণী, চামুণ্ড, রণরঙ্গিণ তিনিই আবার অনাদ্য, আদিভূত, অভয়া, সৰ্ব্বমঙ্গল, ভুবনেশ্বরী। রদ্র অথবা র দাণীর উপাসনায় কিংবা প্রচারে প্রতিষ্ঠা অথবা লোক-শিক্ষা হয় না। কাপালিক অথবা উগ্র তান্ত্রিক, কোন শ্মশানবাসিনী তেজস্বিনী ভৈরবী লোক-সমাজে বহু সন্মান পান ম{। দেবতায় শ্রদ্ধার মুণে ভীতি নয়, প্রতি । যাহাকে সৰ্ব্বদ। ভয় করিব তাহাকে ভালবাসিব কেমন করিয় ? দেবতাকে ভয় করিলে কেমন করিয়া তাহাকে পাইব ? এই কারণে শিবের উপাসনা যেরূপ সাপারণে প্রচলিত কৃদ্রের উপাসন সেরূপ নয় । শক্তির উপাসনা অপেক্ষাকৃত আধুনিক হইলেও শক্তির কল্পনা প্রাচীন। কেন-উপনিষদে কথিত আছে দেবগণ দৈত্যদিগকে পরাভব করিয়া গৰ্ব্বপূর্ণ হইলে যক্ষরূপী ব্ৰহ্ম অগ্নি ও বায়ুর দপ হরণ করিলেন এবং ইন্দ্র তাহার সমীপবৰ্ত্তী হইলে তিরোহিত হইলেন। ইন্দ্র দেখিলেন, যে-স্থলে যক্ষ দুওয়মান ছিলেন সেই স্থলে হৈমবর্তী উমা দাড়াইয় আছেন। তাহাকে ইন্দ্র জিজ্ঞাসা করিলেন, “ঐ যক্ষ কে ?” উম উত্তর করিলেন, “ইনিই ব্রহ্মণ ।” তখন দেবতার জানিতে কোন