১ম সংখ্যা ] কারুশিল্পের পুনরুদ্ধার ፃፃ কতগুলির অধোগতি হইতেছে, এবং কোন জাতের কত মানুষ সেই সেই কাজে ব্যাপৃত ছিল এবং আছে, তাহাদের ভিতর স্ত্রী ও পুরুষের স্থান কি ইত্যাদি বিষয়ে পুঙ্খানুপুঙ্খরূপে খোজ-খবর লওয়া এবং পরে যথাবিহিত পথে কার্য করা দংকার । তাহা হইলে বোঝা যাইবে, কেন আমাদের শিল্পকলার এমন অনাদর ও অধোগতি । এই কার্ধ্যের জন্য আমরা যদি গবর্ণমেণ্টের উপর ভার দিয়া বসিয়া থাকি তাহ হইলে কাজটি সুসম্পন্ন হওয়৷ শক্ত হইবে । আমাদের নিজেদের ৪ একাজে নামিতে হইবে । স্ব স্ব জেলা ও গ্রামের খবর আমরা ইচ্ছ করিলে যেমন ভাল ভাবে সংগ্ৰহ করিতে পারি, সরকারী বেতনভোগী লোকে সৰ্ব্বদা তেমন পারে না । তা ছাড়া একাজে যথেষ্ট অর্থেরও প্রয়োজন আছে, আমাদের এবং সরকারের তরফের দুষ্ট দলের লোকেরই এই অর্থ সরবরাহ করা উচিত । বেহারে ১৯২৫ সালে লেডি হুইলার কুটার-শিল্পের একটি প্রতিষ্ঠান ও ক্রয়বিক্রয়ের কেন্দ্র স্থাপন করিতে চেষ্টা করিয়াছিলেন । বাংলা দেশে এরূপ কোনো সরকারী কি বেসরকারী প্রতিষ্ঠান গড়িবার চেষ্ট হইয়াছে বলিয়। শুনি নাই । খুব ছোটখাট ধরণের দুই-একটি যা আছে তাহাদের না ধংিলেও চলে । যথেষ্ট ধনবল ও লোকবল থাকিলে আমরা দেশের জীবিত শিল্পগুলির সম্বন্ধে সকল জ্ঞাতব্য তথ্য সংগ্ৰহ করিতে পারি। তাহদের দোষগুণ রুচিবিকার প্রভৃতির কারণাদিও নির্ণয় করিতে পারি। তারপর তাঃাদের বিদেশী কলের মালের প্রতিযোগিতার হাত হইতে রক্ষা করিবার জন্য অর্থ-সাহায্য ও বিক্রয়ের সুবিধ দান করাও আমাদের পক্ষে সম্ভব, এবং দেশবাসীদের মনে স্বদেশী শিল্পের প্রতি অনুরাগ বৃদ্ধি করাষ্টয়া দেশের ঘরে ঘরে তাহাদের প্রতিষ্ঠা করাও দরকার । দেশে কারুশিল্পীর সংখ্যা বৃদ্ধি করিয়া শিল্পীদের ও শিল্পের উন্নতির জন্য আর একটা ব্যবস্থাও করা যাইতে পারে । এই যে সব কারুশিল্পগুরু গ্রামের অজ্ঞাত কোণে অনাঘরে অৰ্দ্ধাহাৱে পড়িয়া নিজেরাও মরিতেছে এবং সঙ্গে সঙ্গে শিল্পবিদ্যাগুলিকেও লুপ্ত করিয়া দিতেছে, ইতাদের আমরা বলি, "ছোটলোক” । এই তথাকথিত ছোটলোকদের তাহাদের অজ্ঞাত-বাস হইতে আবিষ্কার করিয়া আনিয়া অল্প বেতনেই আমরা আমাদের তথাকথিত ভদ্রলোকদের উচ্চাঙ্গের বিদ্যালয়ে কারুশিল্প শিক্ষকরূপে প্রতিষ্ঠিত করিলে দেশের লুপ্তপ্রায় শিল্পগুলি বাচিয়া যায় এবং ছাত্রছাত্রীদের এক-একট। অর্থকরী বিদ্যাও লাভ হয় । যাহার ধা আ জন্মের ব্যবসায় সে তাহার দোষ গুণ যেমন করিয়া বুঝয় শিবাদের গড়িতে পারে, শিক্ষিত অর্থাৎ বর্ণজ্ঞানবান ধে কোনো মাষ্টার-মহাশয় তাহ। পরিবেন না । স্থত রাং এই তথাকথিত ছোটলোকদেরই ভদ্রলোকদের গুরু বলিয়া মানিতে হইবে ; তাও তে লজ। বা অপমান বোধ করার মূর্খতা করিলে চলিৰে না। তারপর স্কুল-সমুহে এইসকল শিল্পবিদ্যাকে রীতিমত পাঠ্যতালিকাভূক্ত করিয়া অবশু-শিক্ষণীয় করিতে হইবে । এবং হাতের কাজকে কেবল হাতে শিখিলেই হইবে না, মস্তিষ্কের সাহায্যে তাহার সকল আইন-কানুন ও মূল সূত্রগুলিকে আয়ত্ত করিতে হইবে । যেন শিয্য কেবল গুরুর শিক্ষিত কোনো একটি শিল্পস্থষ্টির মাছিমারা নকল মাত্র করিয়াই ক্ষাস্ত না হয় । শিষ্যের মনে যাহাড়ে উদ্ভাবনী শক্তি জাগে, শিল্পের দোবসংশোধন ও গু বৰ্দ্ধনের ক্ষমতা বাড়ে এবং মামুষের প্রয়োজন, অবস্থ! রুচি ও অর্থবল বুঝিয়া জিনিষ সরবরাহ করিবার যোগ্যতা জন্মে সেদিকে দৃষ্টি রাখিতে হইবে । ক্রেতাদের সৌন্দর্ঘ্যবোধের বিকারকে অল্পে অল্পে সংশোধন করিয়া মার্জিত সৌন্দৰ্য্যজ্ঞান তাহদের মনে জাগাইয়া তুলিবার প্রয়াসঙ এই নবীন শিল্পীদের থাকা উচিত। নতুবা শিল্পের উন্নতি না হইয়। ক্রমে অবনতিই হইবে। প্রাইমারী ও সেকেণ্ডারী সকল বিদ্যালয়ের ছাত্রছাত্রীদের প্রত্যেক স্কুলে অন্তত একটি করিয়া কারুশিল্প অবশু-শিক্ষণীয় করা দরকার। পাঠ্যবিবয়ে পরীক্ষায় উত্তীর্ণ ছাত্রদের মত শিল্পবিদ্যায় পরীক্ষাত্তীর্ণ ছাত্রেরাও প্রাইজ ইত্যাদি পাইবে এবং অকুন্তীর্ণ ছাত্রদের বেলাতেও পাঠ্য বিষয়ে অমৃত্তীর্ণদের মতই ব্যবস্থা হইবে। বিদ্যালয়ের কর্তৃস্থানীয়েরা বলেন যে, অল্প বয়সের ছেলেমেয়েদের একটা
পাতা:প্রবাসী (সপ্তবিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/৮৮
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।