পাতা:প্রবাসী (সপ্তম ভাগ, দ্বিতীয়াংশ).djvu/১৭৬

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

6 o 8 থাকেন। প্রকাশ্ব দরবারের সময় এই তরুণীগণের যাইবার নিয়ম নাই । রাজকীয় কাৰ্য্য শেষ হইলে রাজকীয় পরিচ্ছদ পরিত্যাগ করিয়া বৃদ্ধ মহারাণী রাজপুরীর অন্তান্ত কার্য্যে মনোনিবেশ করিয়া থাকেন। r. তাহার রাজকাৰ্য্য সমাপ্ত হইলে রাজকীয় উদ্যান হইতে বা রাজপুরীর বাহির হইতে যত ফল পুষ্পাদি উপহার প্রেরিত হইয়াছে সে সমস্ত তিনি নিজে পর্যাবেক্ষণ করেন, এবং যাহাকে যাহাকে দিতে হইবে স্বয়ং তাহার আদেশ করিয়া থাকেন। যাহ। রন্ধন শালায় প্রেরিত হইবে, যাহা সম্রাটকে দিতে হইবে, বা অন্যান্য রাজকুমারীগণের নিকট পাঠাইতে হইবে সে সকলের ব্যবস্থা তিনি প্রত্যহ করিয়া থাকেন। ফল পুষ্পাদির ব্যবস্থা হইলে, পরে তিনি রাজকীয় তাত হইতে আনীত পট্টবস্ত্র, এবং রাজপুরীর অভ্যস্তরস্থ কারখানা সকল হক্টতে প্রস্তুত আসবাবাদি পরিদর্শন করিয়া থাকেন। এই সমস্ত কার্যা শেষ হইলে অবকাশমত তিনি এক প্রকার ক্রীড়া করিয়া থাকেন। পট্টবস্ত্রাচ্ছাদিত বর্গক্ষেত্রাকৃতি একখানি টেবলের উপর এই খেলা হইয়া থাকে। মেজের উপর পটবস্ত্রে ভূমণ্ডল ও পরীরাজ্যের দৃশু অঙ্কিত আছে। হস্তীদন্তনিৰ্ম্মিত মনুষ্যাকৃতি একটা গুটিকাকে ভূমণ্ডল হইতে পরীরাজ্যে পৌছানই এই খেলার মুখ্য উদ্দেশু। সেই মনুষ্যকৃতি গুটিকা কি ভাবে কত দূর অগ্রসর হইবে তাহ পাশার দানের মত বা জুয়া খেলার গুটিকা নিক্ষেপের মত দান দ্বারা নির্ণীত হইয়া থাকে। ঐ অস্থিনিৰ্ম্মিত চতুষ্কোণ গুটিকা তিনটা হাতের মধ্যে লইয়া বাকিয়া বাকিয়া একটা জেড প্রস্তরনিৰ্ম্মিত বাটীর মধ্যে নিক্ষেপ করা হয় এবং তাহাদের গাত্রের ছিদ্রের সংখ্যানুসারে মনুষ্যমুক্তিটাকে অগ্রসর করান হইয়া থাকে। বৃদ্ধ সম্রাজ্ঞী রাজপুরীর অন্যান্ত মহিলাগণের সঙ্গে এই খেলা খেলিয়া থাকেন এবং ইহা বাজি রাখিয়া খেলা হয় । দুই জন উচ্চপদস্থ খোজা নিকটে থাকিয়া গুটি চালের হিসাব করিয়া দিয়া থাকে। বুদ্ধার যদি জীত হয় তাহা হইলে তিনি অন্তের নিকট অর্থ পান না, কিন্তু তিনি নিজে হারিলে অপরকে অর্থ দিতে হয়, তাহা তিনি খুলী হইয়া দিয়া থাকেন। এই ক্রীড়ার আমাদিগের দেশের গোলকধাম বা গোলক র্ধ ধী খেলার সঙ্গে মিল দেখা যায়। বৃদ্ধ রাণী দিবসে মাত্র দুই বার আহার করেন। তাহার প্রবাসী । [ ৭ম ভাগ । আহারের কোন সময় নির্দিষ্ট নাই। র্তাহার প্রাতঃ কালীন ও সায়ংকালীন আহাৰ্য্য দ্রব্যের বিশেষ কোন তারতম্য ও দৃষ্ট হয় না। তাহার প্রাতরাশ বেলা সাড়ে দশ ঘটিকা হইতে বার ঘটিকার মধ্যে সম্পন্ন হইয়া থাকে। তিনি আকরোট, বাদাম ইত্যাদি ফল ভাল বাসেন। মস্ত প্রায়ই পান করেন না। সচরাচর গরম দ্বথ, চা ও কোন কোন প্রকার ফলের রস পান করিয়া থাকেন। বৃদ্ধারাণীর আহারের নির্দিষ্ট সময় নাই দেখিয়া নবসম্রাজ্ঞী প্রভৃতি প্রত্যহ তাহার আহারের জন্য অপেক্ষা করেন না। কখনও বৃদ্ধ মহারাণী নিজে আহার করিয়া পরে নবীন সম্রাজ্ঞাদিগকে তাহার টেবলস্থ ভোজনাবশিষ্ট প্রসাদ পাইবার জন্ত ডাকিয়া পাঠান। র্তাহারা অনিচ্ছাসত্ত্বেও খাতিরে পুনরায় আহার করিতে বাধ্য হইয়া থাকেন। তিনি প্রাচীন রীতি নীতি ও আদব কায়দার পক্ষপাতী। এই সকল প্রাচীন নিয়মানুসারে যাহাতে সৰ্ব্বত্র কার্য্য সম্পন্ন হয়, তাহার প্রতি বিশেষ দৃষ্টি রাখিয়া থাকেন। কোন মহিলার কোন আচার ব্যবহারের ক্রটি দেখিলে তাহাকে ভৎসনা করিয়া তৎক্ষণাৎ তাহ সংশোধন করাইয়া লইয়া থাকেন। তাহার সম্মুখ অন্যান্য মহিলাগণ আসন গ্রহণ করিতে পারেন না বলিয়া তিনি স্বয়ং আহার করিয়া আড়ালে গিয়া অবস্থান করেন, তখন অপর মহিলাগণ তাহার টেবলের চতুষ্পাশ্বে বসিয়া আহার করিয়া থাকেন। আহারের পুৰ্ব্বে খাদ্য দ্রব্য র্তাহাকে দেখাইতে হয়। রৌপ্যাধার রৌপ্যাবরণ যুক্ত পীতবর্ণের মৃন্ময়পাত্রে তাহার আহাৰ্য্য দ্রব্য সকল সজ্জিত হইয়া থাকে। র্তাহার ব্যবহারের জন্য দুইটি রৌপ্য বা স্বর্ণময় শলাকা (chop sticks), দুই খানি চামচ, একটি বাটী, একখানি চীনামাটির রেকবী ও একখানি পরিষ্কার রুমাল রক্ষিত হইয়া থাকে। তিনি যখন আহার করিতে যাইবেন তখন একজন খোজা চীৎকার করিয়া বলিয়া থাকে “খাদ্য দ্রব্যের আবরণ উন্মোচিত হউক।” তৎক্ষণাৎ সমস্ত পাত্রের আবরণ মুক্ত হইবে। আহার সমাপ্ত হইলে পরিচারিক রৌপ্যাধারে জল ও সাবান লইয়া তাহার হাত ধুইবার সাহায্য করিয়া থাকে। প্রাতরাশ সমাপ্ত হইলে তিনি শয়নকক্ষে গিয়া আরাম করেন। র্তাহার পাঠক তাহার আদেশানুসারে বাছা বাছ