পাতা:প্রবাসী (সপ্তম ভাগ, দ্বিতীয়াংশ).djvu/২০০

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

Qミ* শ্ৰেষ্ঠতম ধনী বলিয়া প্রসিদ্ধ ছিল (অৰ্ম্মের ইতিহাস দ্রষ্টব্য)। একজন হিন্দু বণিকের ধন পরিমাণ ৮০ লক্ষ (স্বর্ণ?) মুদ্রা ছিল এবং ১৬৬৪ সালে শিবাজী এক দোকানে ১১ সের মুক্তার মালা দেপিয়াছিলেন । সপ্তদশ শতাব্দীর শেষভাগে মোল্লা আবদুল জাফর ব্যবসায় আরম্ভ করেন। কথিত আছে যে র্তাহার নিজের ১৯ খানি জাঙ্গজ নিজেরই পণ্য বহন করিয়া বাণিজ্যমাত্রা করিত । ১৬৯৫ সালেও কোন কোন বণিক এরূপ ধনী ছিলেন যে তাহারা নিজের দ্রব্যসস্তারে একখানা বড় জাহাজ বোঝাই দিতে পারিতেন। সপ্তদশ শতাব্দীতে বহিবাণিজ্যের অভু্যদয়ের সঙ্গে জাহাজ তৈয়ারিও একটি বিশেষ ব্যবসায় ছিল। ১৬৭৪, ১৬৮০, এবং ১৬৯৭ সালে ইংলণ্ডের রেশম ও কাপাস তত্ত্ববায়গণ ভারতীয় বস্ত্র আমদানির বিরুদ্ধে এমন ঘোরতর আপত্তি উত্থাপন করে যে ১৭০১ সালে এক আইন পাস করিয়া বিলাতে ভারতীয় বস্ত্র পরিধান দণ্ডনীয় করা হয় । ইহার ফলে সুরাটের বাণিজ্যে ভাটা পড়িতে আরম্ভ হয় । সপ্তদশ শতাব্দীর অবসানসময়ে ফরাশ তন্তুবায়গণও আপত্তি উথাপন করে. মুরাটের শাসন কর্তা রোস্তম আলি খার শাসনকালের দুই বৎসরে (১৭২৩—২৫ ) যে সকল বণিক ইংরাজের সহিত কারবার করিত তাহাদিগকে অত্যন্ত নিৰ্য্যাতন ভোগ করিতে হইত— এই কারণেও গুজরাটের বাণিজ্য কতক ক্ষতিগ্রস্ত হইয়া ধ্বংসমুখে অগ্রসর হইতে থাকে। ১৭২১ সালে লওনের তাতিরা মহা দাঙ্গা ফসাদ আরম্ভ করায় ভারতীয় কাপাস বস্ত্র পরিধান একেবারে রোধ করার জন্ত এক নুতন আইন করা হইয়াছিল। আবি রেনাল (১৭৮০) বলেন যে যুরোপের বণিকগণ যখন জানিত না তখন সুরাটের বণিকগণ জানিত যে বাণিজ্য এক নির্দিষ্ট রীতির উপর প্রতিষ্ঠিত হওয়া উচিত। ভারতের যে কোন বাজারের জন্ত সুরাটে হুণ্ডি পাওয়া যাইত । দূরদেশে পণ্য প্রেরণের সময় জাহাজ ইনসিওর করা সাধারণ ব্যাপার ছিল। বণিকদিগের সততা এত অধিক ছিল যে টাকার থলি গালামোহর করিয়া টিকিট তাটিয়া আদান প্রদান চলিত, কেহ কখন গুণিয়া বা ওজন করিয়াও দেখিত না । বর্তমানকালে এতৎপ্রদেশে কৃষিব্যতীত কাপাস ব্যবসায় [ ৭ম'ভাগ প্রধান । কার্পাস হইতে স্বত্র বয়ন ও বস্ত্র প্রস্তুত হস্ত দ্বারাষ্ট্র সম্পন্ন হইয়া থাকে। ১৯০৪ সালে স্বরাটে তিনটি কাপড়ের কল ছিল। ১৮৭৬ সালে বাষ্পচালিত ১৮টি কল ছিল। ১৮৭৭ সালে শ্ৰীযুক্ত জামাল উদ্দিন মহম্মদভাই বাষ্পচালিত কাগজের কল স্থাপন করেন। যুরোপীয় সস্ত ছিটের আমদানির প্রাবল্যে সুরাটের ছিটের ব্যবসায় নষ্ট হইয়া গিয়াছে। কিন্তু আজো সুরাটে রেশমী বস্ত্র প্রচুর উৎপন্ন হয়, কিংখাব বয়ন সুরাটের প্রসিদ্ধ ব্যবসায় । সুরাটের স্থচিশিল্পের থ্যাতি এখনো অক্ষুণ্ণ আছে । সুরাটের ধারালো র্যাতি ভিন্ন ধাতুর দ্রব্য এখন আর কিছু ভালো হয় না। মোটের উপর মুরাটের পুৰ্ব্ব গৌরবের এখন অবশেষ অতি অল্পই আছে । স্বরাটের হিন্দু মুসলমান বা পাসী সকলেই আনন্দ ও জাকজমকে ভালোভাবে থাকিতে ভালবাসে। সুরাটের বণিকসম্প্রদায় এক একটি সংঘ গঠন করে । প্রধান বণিক সংঘের নাম ‘মহাজন’ । এই সংঘের জন্ত টাকা সংগ্রহের উপায় বড় অদ্ভুত। কোন এক নির্দিষ্ট দিনে কেবল একজন ভিন্ন সকলকে দোকান বন্ধ করিতে হয় । এবং সেই একটি দোকান খোলা রাখিবার অধিকাম নিলামের সৰ্ব্বোচ্চ ডাকে বিক্রীত হয়। সেই নিলাম লব্ধ অর্থ সংঘে ব্যয়িত হয়। সুরাটের প্রায় সকল গৃহেই একটি করিয়া কুপ ও একটি করিয়া বৃষ্টির জল ধরিবার চৌবাচ্চ আছে। দুই একটি কুপ ভিন্ন সহরের প্রায় সকল কুপের জলই ক্ষারস্বাদ, এজন্ত তাহা পানীয়রূপে ব্যবহৃত হইতে পারে না। প্রায় সকল ধনী ব্যক্তিই বৃষ্টির জল পান করে। বৃষ্টির জল সিমেন্ট করা ছাদে পড়ে এবং তথা হইতে ধাতব বা বাধান নালির মধ্য দিয়া বহিয়া চৌযাচ্চায় জমা হয় এবং সেখানে থিতাইয়া পানের উপযুক্ত হয়। এবং সেই জল সারা বৎসর পান করা হয়। যাহাদের বৃষ্টির জল সংগ্রহের কোন উপায় নাই, তাহারা হয় তপতীর নয় ত সহরের বা বাহিরের কোন মিষ্টস্বাদ কুপের জল ব্যবহার করে। ১৮৯৬ সালের ডিসেম্বরে স্বরাট জেলার বলসর সহরে প্লেগ আসিয়া মহা অনর্থ সংঘটিত করে। মোগোদ, সুরাট সহর, এবং র্যাণ্ডার টাউন প্লেগের তাওব ক্ষেত্র,হইয়া পড়িয়াছিল।