পাতা:প্রবাসী (সপ্তম ভাগ, দ্বিতীয়াংশ).djvu/২৯৪

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

আসল কথা, এই প্রকার প্রভেদ রক্ষা করা সভ্যতা-প্রচারক ইংলণ্ডের উচিত কাজ হয় নাই। মাথার উপর মুষ্টিমেয় রাজপুরুষ, এবং পদতলে অজ্ঞ জনসাধারণের ঘন সংহতি - ইহাই ইংরাজের কীৰ্ত্তি। কেবল শিক্ষিত ভারতবাদীরাষ্ট শিক্ষালাভ করে—সে শিক্ষাও মধ্যাগের ইংরাজেরষ্ট সম্পূর্ণ উপযোগী। কারিগর লোকদিগকে তাঙ্গার একেবারেই বিষ্কৃত ইষ্টয়াছেন ; অথচ তাঙ্গদের নৈপুণ্যসম্বন্ধে কিংবা তাহাঁদের উৎকর্ষ লাভের সামর্থ্য সম্বন্ধে কেহই সন্দেহ করে না। .তবে কি না, তাঙ্কাদের শিল্পনৈপুণ্য এপনকার কালোপযোগী নহে । কেননা, পাশ্চাতোর বিরাট শিল্পেীদ্যম, তাহদের ছোট ছোট শিল্পব্যবসায়কে বিনষ্ট করিয়াছে। এখন তাঁহাদের বেকার অবস্থা । দূরদর্শী ও উদার-চেত। রাজসরকাধের কিরূপ কর উচিত ছিল ? যাহাতে কারিগরগণ পাশ্চাত্যদিগের সহিত কতকটা যুঝাযুঝি করিতে সমর্থ হয় এই জঙ্গ তাহদের হস্তে যাদি উপকরণ অৰ্পণ করা ও যন্ত্রবিজ্ঞান সম্বন্ধে তাহাদিগকে কতকটা শিক্ষা দেওয়া উচিত ছিল। আধুনা, ভারতের অপরিমেয় শিল্প-সম্বল বিদেশীয়দের হস্তগত ; তাহারাষ্ট ভারতের সমস্ত ধন শোষণ করিতেছে। বৈদেশিকেরই মূলপন যোগাইতেছে, কৰ্ম্মপরিচালক লোক যোগাইতেছে, কর্তামিস্ত্রী যোগাইতেছে, কত্তা-কারিগর যোগাইতেছে ; দেশায় লোক-যাহাদিগকে সমত্নে অজ্ঞ করিয়া রাখা হইয়াছে-- তাহারা শুধু কুলিমজুরের কাজ করে। তাহারা প্রতি দিন ৮আনা করিয়া মজুরি পায় । বোম্বায়ের তুলার কলকারখানা এই নিয়মের ব্যতিক্রম স্থল ; এখানে দেশায় লোকেরা সফল হইয়াছে, কেন না এই বিষয়ে শিক্ষা উপদেশের ততটা আবশ্যক নাই—আবশুক শুধু মূলধনের ও যন্ত্রাদির। তা ছাড়া, ভারত, বহুল উৎপন্ন দ্রব্য বিদেশে চালান করে, এবং সেখানে হইতে দ্রব্যান্তরে পরিণত হইয়। আসিলে তাহাই আবার পুনৰ্ব্বার ক্রয় করে। শুধু জ্ঞানের অভাবে ও শিল্পবিশেষের ব্যবহারিক দক্ষতার অভাবেই দেশীয় লোক সেই সব সামগ্ৰী তৈয়ারী করিতে পারে না—সুতরাং যে অর্থ দেশীয় মিস্ত্রী ও g কারিগরের হস্তে আসিবার কথা, তাহাই বিদেশীর ধন-কোষ পূর্ণ করতেছে। আমি পূৰ্ব্বেই বলিয়াছি, ভারত মার্কিণ দেশ নহে। মুক্তহস্ত দাতৃগণের উপর বিশ্ববিদ্যালয় বড় একটা নির্ভর কুরিতে পারে না। তবে ভারতেরও কানেজি (Carnegie) আছে। প্রযুক্ত তাতা, বৈজ্ঞানিক পরীক্ষাগার ও বৈজ্ঞানিক গবেষণালয় স্থাপনার্থ ৫ পাচ ক্রোড় টাকা দান করিয়াছেন । শিক্ষা দেওয়া অপেক্ষা, পরীক্ষাগারের গবেষণার দিকেই তাতার বেশ লক্ষ্য ছিল। আমার বিশ্বাস তাহার এই কল্পনাটি সরকাৰ-মং লে তেমন সানুকূলে গৃহীত হয় নাই। র্তাহারা বলিলেন, ছাত্রদিগকে শিল্পাইতে হক্টবে জানিলে অধ্যাপকেরও স্বকার্য্যে একটা উদ্দীপনা হয়। “মনে কর, প্যাষ্টর যদি উচ্চশিক্ষার বিদ্যালয়ে একপ্রস্ত ধারাবাহিক উপদেশ না দিতেন, কিংবা সুর-শোধন রূপ একটা কেজো বিষয়ের সমস্ত লইয়া ব্যাপৃত না থাকিতেন,তাহা হইলে তিনি কখনই জীবাণু-তথ্য আবিষ্কার করিতে সমর্থ হইতেন না।”— কলিকাতার সরকারী-শিক্ষার প্রধান অধ্যক্ষ এই কথা আমাকে বলিয়াছিলেন। ইহ সম্ভব । যাই হোক, এ স্থলে বোধ হয় ইঙ্গভারতীয় কর্তৃপক্ষের কথাই ঠিক। গবেষণাকারী অপেক্ষা, ভারতের এক্ষণে শিক্ষকেরষ্ট অধিক প্রয়োজন-- আবিষ্কার-কায্যে বড় হইবার পূৰ্ব্বে, ভারতের আরও অনেক কাজ করিতে বাকী আছে ...অনেক শিখিবার আছে । স্ত্রীশিক্ষা সম্বন্ধে আমি কিছুই বলিলাম না। তাহার প্রকষ্ট হেতু এই স্ত্রীশিক্ষা বলিয়া একটা জিনিষই নাই । — অবশ্য এখানে ওখানে দুই একটি বালিকা-বিদ্যালয় আছে, এবং খুব সম্প্রতি এই বিষয়ে যে অল্পস্বল্প চেষ্টা-উদ্যোগ চলিতেছে তাহাতে বুঝা যায়, নারীজাতির উন্নতি—সাধারণ উন্নতিরই অংশ, এই কথাটির মৰ্ম্ম আজকাল এখানে অনুভূত হইতে সবে আরম্ভ হইয়াছে। 髒 彰 彰 發 যাহা উপরে লিখিত হইল, তাহাতে মনে হইতে পারে আমি খ্যাতনামা মেকলের বিরুদ্ধে অভিযোগ আনিয়াছি। আমাকে যেন কেহ ভুল না বুঝেন। মেকলের উদ্দেশু যে উদার ও মহৎ ছিল ভাহাতে কোন সন্দেহ নাই । মেকলে এক প্রকার প্রচারক ছিলেন । র্তাহার বিশ্বাস ছিল, যুরোপের সভ্যতা, অপেক্ষাকৃত উচ্চতর সভ্যতা ; যাহাদের সভ্যতা অতটা উন্নত নহে, সেই সব নিকৃষ্ট জাতি যাহাতে ঐ যুরোপীয় সভ্যতার শুভ ফল সম্ভোগ করিতে পারে, এই জম্ভ