পাতা:প্রবাসী (সপ্তম ভাগ, দ্বিতীয়াংশ).djvu/৩৬৩

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

১২শ সংখ্যা । করা যাইতে পারে না। . প্রকৃতিদেবীর পূজার এদেশ্নে বিলক্ষণ চলন দেখিতে পাওয়া যায়। এবং এই পূজাকেই অতি পবিত্র পূজা বলিয়া মনে করা হইয়া থাকে। পেকিংএ এক প্রশস্ত প্রান্তর মধ্যে এই প্রকৃতি দেবীর মন্দির আছে। তাহাকে Temple of Heaven অর্থাৎ স্বর্গের মন্দির বলিয়া থাকে। এই মন্দির সর্বাপেক্ষ শ্রেষ্ঠ ও উৎকৃষ্ট। ইহা ত্রিতলবিশিষ্ট গুম্বজাকৃতি। ইহা দেখিতে অতি মনোহর। এই মন্দিরের চূড়া যেন নীলাকাশ ভেদ করিয়া সগৰ্ব্বে দণ্ডায়মান রহিয়াছে। ইহার প্রাঙ্গণের অপর প্রান্তে "বসুধা (ধরিত্রী)মন্দির" (Temple of Earth) yá;.Af7:, 5:7-Nf74, ffমন্দির এবং সৰ্ব্বাপেক্ষা প্রধান ও ভিন্ন ধরণের মন্দির অদৃশ্য CHIRA wfMR (Temple of the invisible deity) সকল দৃষ্ট হয়। এই স্বভাব দেবীর মন্দিরের ভিত্তি পৃথিবী, চতুর্দিকের অসীম বায়ু মণ্ডল তাহার প্রাচীর, এবং বিশ্বকাশ তাহার ছাদ। এই মন্দিরের উপর মৃক্ত স্থানে একটী প্রকাও বেদী আছে । সেই স্বৰ্গীয় পবিত্র বেদীর উপর প্রকৃতি দেবীর পূজা হইয়া থাকে। পরিষ্কার শ্বেত মৰ্ম্মর প্রস্তরের ভিত্তির উপর এই বেদী নিৰ্ম্মিত। মন্দিরের চতুৰ্দ্দিকে পবিত্র বৃক্ষরাজিতে স্বভাবের সৌন্দর্য্য আরো বৃদ্ধি করিয়াছে । স্বভাবের ত্রিত্ব প্রকাশক শ্বেত প্রস্তরময় তিনটা বৃত্ত উপযুপিরি ভাবে নিৰ্ম্মিত। একটা হইতে অপরটা উঠিতে নামিতে নয়টা করিয়া শপ আছে। একটা বৃত্ত প্রস্তরময় খোদিত স্তম্ভের বেষ্টনী সকল দ্বার নিৰ্ম্মিত। উত্তর দক্ষিণ ও পশ্চিম দিক হইতে এই সকল বৃত্তাকার স্থানে উঠিতে পার! যায়। সৰ্ব্বোচ্চ বৃত্তের কেন্দ্রস্থলকে এই বিশ্বের কেন্দ্ররূপে মনে করা হইয়া থাকে। এই ত্রিত্বময় বেদীত্রয়, অনন্ত বায়ুরাশি যাহার প্রাচীর এবং শুষ্ঠা কাশ যাহার ছাদ, তাহার অধিষ্ঠাত্রী প্রকৃতি দেবীকে “স্বর্গের মণ্ডল” চীন সম্রাট স্বয়ং পূজা করিয়া থাকেন। পবিত্র চীন সাম্রাজ্যের প্রতিনিধিরূপে স্বয়ং সম্রাট তাহার প্রজাবর্গের মঙ্গল ও সুখ সমৃদ্ধি কামনায় এই পূজা করিয়া থাকেন। সম্রাট স্বয়ং “স্বৰ্গীয় সস্তান” তাই তিনি এই প্রকৃতি দেবীকে পূজা করিবার একমাত্র উপযুক্ত পুরোহিত। সম্রাট-ভিন্ন অন্ত কাহারে এ পুজায় অধিকার নাই। বৎসরে দুইবার অর্থাৎ শীতকালে এবং গ্রীষ্মকালে এই মন্দিরে পুজা হইয়া চীনে ধৰ্ম্মচর্চা । ૭૭૪ থাকে। এই মন্দিরে পূজা দিবার কালে সম্রাটকে তিন দিন নিরামিষভোজী হইয়া সংযম করিতে হয় এবং তিনি দিবসের কোন নির্দিষ্ট সময় পৰ্য্যন্ত উপবাস করিয়া পূজা করিয়া থাকেন এবং রাত্রিকাল এই স্থানেই যাপন করিয়া থাকেন। র্তাহার অবস্থানের জন্ত এক সুরম্য অট্টালিকা নিৰ্ম্মিত আছে । সম্রাট স্বয়ং যে কেবল ইহার মাত্র সর্বশ্রেষ্ঠ পুরোহিত তাঙ্গ নহে, তিনি দেবকুমাররূপে অভিহিত। সুতরাং এই “অদৃশু দেবীর" পূজা করিতে যে যে-দেবগুণ থাকা প্রয়োজন তাহা তাহার পবিত্র দেহে আছে বলিয়া বিশ্বাস করা হইয়া থাকে। প্রাচীন ধৰ্ম্মগ্রন্থের বিধি ব্যবস্থানুসারে সমাট এই মন্দিরে ও অন্যান্য মন্দিরে পূজা করিয়া থাকেন। যখন রাজ্যে কোন বিপদ উপস্থিত হয়, যথা দুর্ভিক্ষ, মহামারী ও যুদ্ধ বিগ্ৰহাদি হইয়া রাজ্যমধ্যে হাহাকার উপস্থিত হয়, তখন সম্রাট প্রজামণ্ডলীর অাপদ বিপদ দূরীকরণ মানসে স্বয়ং ঈশ্বরের নিকট প্রর্থনা করেন । কারণ তিনি স্বয়ং ঈশ্বরপুত্র বলিয়া এই সকল বিপদের জন্ত প্রজামণ্ডলীর নিকট প্রত্যক্ষভাবে দায়ী। তাহার প্রার্থনাবাক্যের সার মৰ্ম্ম এই যে “আমি পুণ্য কাৰ্য্য দ্বারা নিজ দেহকে পবিত্র রাখিব, আমার রাজ্য হইতে এই বিপদ দূরীভূত হউক। ভগবান! আমি স্বয়ং এই রাজ্যের অমঙ্গলের জন্ত দায়ী। আমার প্রজাবর্গের মঙ্গল হউক।” এই প্রকৃতির পূজা সম্রাটের রাজকাৰ্য্যের এক অঙ্গ বিশেষ। এই পূজা করা সম্রাটের ব্যক্তিগত ক্রিয়া নহে। রাজ্যের প্রতিনিধিরূপে তিনি এই কাৰ্য্য করিয়া থাকেন। সমাট যে কেবল এই ত্রিত্বময়ী প্রকৃতি দেবীর মন্দিরে পুজার জন্তষ্ট দায়ী তাঙ্গ নহে, রাজ্যমধ্যে যত ধৰ্ম্মমত ও ধৰ্ম্মমন্দির আছে তিনি তাহীদের রক্ষক, এবং সৰ্ব্বাগগণনীয় বুদ্ধধৰ্ম্ম ও তাও ধৰ্ম্মাদিরও তিনি পৃষ্ঠপোষক এবং তাহাতে তিনি যথেষ্ট সাহায্য করিয়া থাকেন। তবে ঐ ঐ ধৰ্ম্মগ্রন্থের বিধি অনুসারে তাহদের ভিন্ন ভিন্ন সম্প্রদায়ের পুরোহিতগণ পূজাদি সম্পন্ন করিয়া থাকে। কিন্তু সম্রাটের পদ সেই সেই পুরোহিতগণের উপর অর্থাৎ তিনি সমস্ত ধৰ্ম্মমন্দিরের সৰ্ব্বোচ্চ পুরোহিত (High Priest) রূপে গণ্য। পেকিং রাজপুরীতে এই তিন প্রকারের ধৰ্ম্মেরই অনুষ্ঠান হষ্টয়া থাকে । هذعلم