পাতা:প্রবাসী (সপ্তম ভাগ, দ্বিতীয়াংশ).djvu/৩৯৪

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

\')პა8 থেকে উপযুক্তরূপ রাজত্ব পাবার জন্তে রাজাকে অসামান্ত করে গড়ে তুলি---আমাদের সেই সম্মানের দাবী রাজাকে রক্ষণ করতে হয়, তাকে অসামান্ত হতে হয়। মানুষের সকল সম্বন্ধের মধ্যেই এই রুত্রিমতা আছে । এমন কি, বাপ মার যে আদশ আমরা সকলে মিলে খাড়া করে রেখেছি তাতে করেই সমাজে বাপ মাকে বিশেষ ভাবে বাপ ম; করে রেখেছে, কেবলমাত্র স্বাভাবিক মেহে নয়। একান্নবৰ্ত্তী পরিবারে বড় ভাই ছোট ভাইয়ের জন্ত অনেক সহ ও অনেক ত্যাগ করে-কেন করে ? আমাদের সমাজে দাদাকে বিশেষভাবে দাদা করে তুলেচে অল্প সমাজে তা করে নি। ব্রাহ্মণকেও যদি যথার্থভাবে ব্রাহ্মণ করে গড়ে তুলতে পারি তাহলে সে কি সমাজের পক্ষে সামান্ত লাভ ! আমরা নরদেলত চাঠ-–আমরা নরদেবতাকে যদি যথার্থ ষ্ট সমস্ত অস্তরের সঙ্গে বুদ্ধিপূৰ্ব্বক চাই তাহলে নরদেবতাকে পাব--আর যদি মূঢ়ের মত চাই তাহলে যে সমস্ত অপদেবতা সকল রকম দুস্কায় করে থাকে এবং আমাদের মাথার উপরে পায়ের ধূলো দেওয়া যাদের জীবিকার উপায় তাদের দল বাড়িয়ে ধরণার ভার বুদ্ধি করা হবে । স্বচরিতা। আপনার সেই নরদেবতা কি কোথাও আছে ? বিনয় । বীজের মধ্যে যেমন গাছ আছে তেমনি আছে, ভারতবর্ষের আস্তরিক অভিপ্রায় এবং অভাবের মধ্যে আছে। অন্ত দেশ ওয়েলিংটনের মত সেনাপতি, নিউটনের মত বৈজ্ঞানিক, রথচাইল্ডের মত লক্ষপতি চায়, আমাদের দেশ রাহ্মণকে চায়। ব্ৰাহ্মণ, যার ভয় নেই, লোভকে যে ঘুণ করে, দুঃথকে যে জয় করে, অভাবকে যে লক্ষ্য করে না, যার “পরমে ব্রহ্মণি যোজিত চিত্ত” ; যে অটল, যে শাস্ত, যে মুক্ত সেই ব্রাহ্মণকে ভারতবর্ষ চায়—সেই ব্রাহ্মণকে যথার্থভাবে পেলে তবেই ভারতবর্ষ স্বাধীন হবে। আমাদের সমাজের প্রত্যেক বিভাগকে প্রত্যেক কৰ্ম্মকে সৰ্ব্বদাই একটি মুক্তির সুর জোগাবার জন্তই ব্রাহ্মণকে চাই—রাধবার জন্তে এবং ঘণ্টা নাড়বার জন্তে নয়—সমাজের সার্থকতাকে সমাজের চোখের সামনে সব্বদা প্রত্যক্ষ করে রাখবার জন্য ব্রাহ্মণকে চাই। এই ব্রাহ্মণের আদর্শকে আমরা যত বড় করে অনুভব করব ব্রাহ্মণের সন্মানকে তত বড় করে করতে প্রবাসী । ৭ম ভাগ । হবে । সে সম্মান রাজার সম্মানের চেয়ে অনেক বেশি– সে সন্মান দেবতারই সম্মান। এ দেশে ব্রাহ্মণ যখন সেই সম্মনের যথার্থ অধিকারী হবে তখন এ দেশকে কেউ অপমানিত করতে পারবে না। আমরা কি রাজার কাছে মাথা হেঁট করি, অত্যাচারীর বন্ধন গলায় পরি ? নিজের ভয়ের কাছে আমাদের মাথা নত, নিজের লোভের জালে আমরা জড়িয়ে আছি, নিজের মুঢ়তার কাছে আমরা দাসানুদাস--ব্রাহ্মণ তপস্তা করুন, সেই ভয় থেকে, লোভ থেকে, মুঢ়তা থেকে আমাদের মুক্ত করুন—আমরা তাদের কাছ থেকে যুদ্ধ চাইনে, বাণিজ্য চাইনে আর কোনো প্রয়োজন চাইনে তার আমাদের সমাজের মাঝখানে মুক্তির সাধনাকে সত্য করে তুলুন। পরেশ বাবু এতক্ষণ চুপ করিয়া শুনিতেছিলেন, তিনি ধীরে ধীরে বলিলেন – “ভারতবর্ষকে যে আমি জানি ত৷ বলতে পারিনে এবং ভারতবর্য যে কি চেয়েছিলেন এবং কোনোদিন তা পেয়েছিলেন কি না ত! আমি নিশ্চয় জানিনে কিন্তু যে দিন চলে গেছে সেই দিনে কি কখনো ফিরে যাওয় যায় ? বর্তমানে যা সম্ভব তাই আমাদের সাধনার বিষয়--- অতীতের দিকে দুই হাত বাড়িয়ে সময় নষ্ট করলে কি কোনো কাজ হবে ?” - - বিনয় কহিল—“আপনি যেরূপ বলচেন আমিও ঐ রকম করে ভেবেচি এবং অনেকবার বলেওচি-–গোরা বলে যে, অতীতকে অতীত বলে বরখাস্ত করে বসে আছি বলেই কি সে অতীত ? বর্তমানের হাকডাকের আড়ালে পড়ে সে আমাদের দৃষ্টির অতীত হয়েচে বলেই অতীত নয়—সে ভারতবর্ষের মজ্জার মধ্যে রয়েছে। কোনো সত্য কোনো দিনই অতীত হতে পারে না । সেই জন্তই ভারতবর্ষের এই সত্য আমাদের আঘাত করতে আরম্ভ করেছে। একদিন একে যদি আমাদের একজনও সত্য বলে সম্পূর্ণ চিনতে ও গ্রহণ করতে পারে তাহলেই আমাদের শক্তির খনির দ্বারে প্রবেশের পথ খুলে যাবে—অতীতের ভাণ্ডার বর্তমানের সামগ্রী হয়ে উঠবে। আপনি কি মনে করচেন ভারতবর্ষের কোথাও সে রকম সার্থকজন্ম লোকের আবির্ভাব হয় নি ?” সুচরিতা কহিল—“আপনি যে রকম করে এ সব কথা বলচেন ঠিক সাধারণ লোকে এ রকম কবে বলে না--সেই