পাতা:প্রবাসী (সপ্তম ভাগ, দ্বিতীয়াংশ).djvu/৭০

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

828

  • * * *

কৰিয়া বলিয়াছিল—“দরবারের কার্ড পাৰে ? প্রাইবেট ইন্টারভিউ করতে নিমন্ত্রণ হলে ?”—সবইত হইল। এখন গভর্ণমেন্ট রীডারিটাই কি ফস্কাইয়া যাইবে? আশ্চৰ্য্য! যাহা স্বপ্নাতীত ছিল,সেই সমস্ত ঘটিয়া যাইতেছে। তবে কি মুদিন উপস্থিত হইল ? এতদিনের পর কি গ্রহদশ খণ্ডিত হইল ? ; : এই রূপ চিন্তা করিতে করিতে, ধীরে ধীরে সুবোধচন্দ্র গৃহাভিমুখে পদচালনা করিলেন। বাড়ীর কাছাকাছি আসিয়া, রাস্তার অপর পাশ্বে ক্ষণেক #াড়াইয় পত্রপুষ্পসজ্জা নিরীক্ষণ করিতে লাগিলেন। লাটসাহেব সজ্জিতকরণের স্বরুচির প্রশংসা করিয়াছেন। অনিমেষ নেত্রে সুবোধ বাবু নিজ কীৰ্ত্তি দেখিতে লাগিলেন। এমন সময় সহসা এক অভাবনীয় বিপদ উপস্থিত হইল । তিনি যে বাড়ীর সন্নিকটে দাড়াইয় মুগ্ধনেত্রে নিজ গৃহশোভা দেখিতেছিলেন, তাহ একজন উকীলের বাড়ী। সেই বাড়ীর কয়জন দুষ্ট বালক, ছাদের উপর হইতে, এক গামলা গোবর ও কাদা গোলা জল, স্থবোধ বাবুর মস্তক লক্ষ্য করিয়া ঢালিয়া দিল। স্ববোধচন্দ্র চকিত নেত্রে উদ্ধদিকে দৃষ্টিপাত করিলেন। কে বিদ্রুপের স্বরে চীৎকার করিয়া উঠিল “Long live Subodh Babu--Welcome to Pandemonium.” গোবর ও কাদা গোলা জল, র্তাহার শামল লহিয়া চাপকানে পতিত হইল । চাপকানকে রঞ্জিত করিয়া প্যান্টালুনের পদদ্বয় বহিয়া, জুতার মধ্যে প্রবেশ করিল। স্ববোধ বাবু জুতা চক্ৰ চৰ করিতে করিতে যথা সাধ্য ত্বরিত পদে নিজ গৃহে প্রবেশ করিলেন। চতুর্থ পরিচ্ছেদ । সেই একটি মাত্র পোষাক—তাহ গেল নষ্ট হইয়া । এখন কি পরিয়া সুবোধ বাবু প্রাইবেট ইণ্টারবিউ করিতে যান ? , স্নানাহার করিয়া, তিনি অনাথ বাবু ডেপুটির বাসায় ছুটলেন। র্তাহাকে সকল অবস্থা জানাইয়া, একমুট পোষাক ধার চাহিলেন – ডেপুটি বাবু বলিলেন—“মহাশয় আচ্ছ, তা পোষাক না ছয় দিচ্চি। কিন্তু আপনার এ কৰ্ম্মভোগ কেন ? আমরা গোলামী করছি—আমাদের সবই করতে হয়। কিন্তু আপনার [१य च्ण বাড়ী সাজানই বা কেন ? দরবারে যাওয়াই বা কেন? প্রাইবেট ইন্টারবিউ করবার এত আগ্রহই বা কেন ?” . সুবোধ বাবুর মুখ থানি ছোট হইয়া গেল। বলিলেন— “সাহেব নিজে বলেছেন—ন গেলে সেটা কি ঠিক হয় ?” ডেপুটি বাবুর হঠাৎ মনে হইল—এসব কথা এ লোকটাকে বলাই ভাল হয় নাই। এ যদি ম্যাজিষ্ট্রেট সাহেবের কাছে গিয়া বলিয়া দেয়—তাহ হইলে আমার চাকরি লইয় টানাটানি হইবে। সুতরাং আত্মসম্বরণ করিয়া বলিলেন– “না-ত যাবেন বৈকি ! সাহেব নিজে বলেছেন—অবিশ্যি আপনার যাওয়াই উচিত । বসুন পোষাকটা নিয়ে আসি ৷ ” প্রাইবেট ইন্টারবিউ হইয়া গেল-বাজিও পুড়িল । রাত্রি ৯টার সময়, শাল মুড়ি দিয়া, সুবোধচন্দ্র জগৎ বাবুর গৃহে উপস্থিত হইলেন। জগৎবাবু তাহাকে দেথিয়া বলিলেন—“সাবাস্—সাবাস্। তুমি যা বল্পে তাই হল যে। তার পর লাটসাহেবের কাছে গভর্ণমেণ্ট প্লীডারির কথা তুলেছিলে ?” সুবোধ বলিলেন—“পাগল ! তা হলে যে সন্দেহ করবে। অতিভক্তি চোরের লক্ষণ । সে সব এখনও দেরী আছে । এখনও অনেক কাঠখড় পোড়াতে হবে। ” “এবার কি করবে ? ” “টেলিগ্রাফের ফরম আছে ? ” “আছে । ” “বের কর দিকিন থান কতক । ” জগৎ বাবু টেলিগ্রাফের ফরম বাহির করিলেন। স্থবোধ বলিলেন– “বেঙ্গলী, অমৃতবাজার আর বন্দেমাতরম্ কাগজে তার পাঠাতে হবে। ” “কিসের তার ? ” “আমার কীৰ্ত্তি । ” “সে হয়ে গেছে। বেঙ্গলীর সংবাদ দাতা মুকুমার বাবু তোমার নামও লিখে দিয়েছেন। লিখে দিয়েছেন যে বারের লোকের মধ্যে একমাত্র তুমিই বাড়ী সাজিয়েছিলে আর দরবারে উপস্থিত ছিলে । ” “আর সে গোবরঞ্জলের কথাটা ।” “সেটা বোধহয় লেখেন নি।” \ , “মারে সেইটেই আসল। এই দেখ, আমি টেলিগ্রা