২য় সংখ্যা | ] ধারণা হইয়াছিল যে বিদেশী রাজদূতগণ বৃদ্ধারাণীকে বিদেশীবিদ্বেষী মনেকরিয়া ষড়যন্ত্র করিয়া তাহাকে রাজকাৰ্য হইতে সরাইবার চেষ্টা করিয়াছিলেন । পেকিনের পবিত্র রাজসিংহাসন হক্টতে মহামান্ত সৰ্ব্বপূজনীয়া বৃদ্ধ রাজমাতাকে অপসারণ করাষ্টলে, জাতীয় অবমাননা হইবে, পবিত্র দেবসিংহাসন কলঙ্কিত হইবে, এই আশঙ্কায় প্রজামগুলি আরো ক্ষিপ্তপ্রায় চষ্টয়া উঠিল। কিন্তু তাহার এই জনরবের সত্যসত্যত নিৰ্দ্ধারণের চেষ্ট না করিয়া অন্ধ বিশ্বাসের বশবর্তী ইষ্টয়া, এবং স্বদেশপ্রেমে মাতিয়া পেকিনের লিগেশনের বিদেশী দৃত সকলকে নিপাত করিবার মানসে প্রবলবেগে আক্রমণ করিল এবং সৰ্ব্বপ্রথমে জাৰ্ম্মনদৃত ভন-কেউলারকে পথিমধ্যে পাষ্টয়া হত্যা করিল। এই উন্মত্ত বক্সারদল কাণ্ডাকাগুজ্ঞানশূন্য হইয়া সত্য ও দয়াদি গুণকে বলিদান করিয়া, যেখানে যে বিদেশীকে পাইল সেই গানেই তাহাকে নৃশংসরুপে হত্যা করিতে লাগিল। লিগেশনকে অবরোধ করিয়া তাহার উপর গুলি চালাক্টতে লাগিল। মিশনারিগণের গির্জা ও বাসস্থান আক্রমণ করিয়া বিধ্বস্ত করিয়া ফেলিল । একজন পাদ্রীকে ক্রশ যন্ত্রে বিদ্ধ করিয়া রাখিয়া দিল । { ੋਜ পরে তাহার মৃত্যু হয়। আর একজন পাদ্রীকে বাহুদ্বয় দেহ হইতে ছিন্ন করিয়া কেরসিন তৈল যোগে জীবিত অবস্থায় অগ্নিসংযোগপূৰ্ব্বক হত্যাকরা হয়। অবশ্য এই সকল পাশবিক কাৰ্য্য নিম্নশ্রেণীর দুৰ্ব্বত্তগণ কর্তৃকই সম্পন্ন হইয়াছিল, উচ্চ শ্রেণীর নেতাগণের অনুমতানুসারে যে এই সকল অমানুষিক কাও ঘটে তাতার কোন প্রমাণ নাই । যদিও সম্রাট ও সম্রাজ্ঞী প্রবলপ্রতাপান্বিত ও শাক্ত শাসনের পক্ষপাতী, কিন্তু তাহার এই প্রবল ঝড়ের গতির বিরুদ্ধে চলিলে নিজের ংস হইবেন মনে করিয়া ইচ্ছাপূৰ্ব্বক বা অনিচ্ছার সহিত সেই প্রবল বিদ্রেীহঝড়ের গতির সঙ্গে গা ঢালিয়া দিলেন এবং এই উপায়েষ্ট দুরন্ত অপরাধিগণকে শাস্তি দিয়া রাজ্যে পুনৰ্ব্বার শাস্তিস্থাপন করিতে সমর্থ হইয়াছিলেন। জগতের কোন সম্রাট বা রাজাই রাজ্যের সমস্ত বিদ্রোহী প্রজার বিরুদ্ধে দণ্ডায়মান হইয়া সহসা তাহানিবারণ করিতে পারেন নাই। সেই জন্ত পেকিং সম্রাট ও সম্রাজীকে লোকের প্রবল উত্তেজনার উপশমের জন্য অপেক্ষা করিতে হইয়াছিল। পেকিং রাজপুরী।
- >
じーや বুদ্ধামহারাণীর অন্তরের গৃঢ়ভাব নিজের প্রজার পক্ষে, কি বিদেশীয়দিগের পক্ষে সহানুভূতিস্থচক ছিল তাহা বলা কঠিন। খুব সম্ভবতঃ তাহার গাঢ় সহানুভূতি নিজের প্রজাবর্গের পক্ষেই ছিল, এবং তাহাই স্বাভাবিক, কিন্তু তাঙ্গ বলিয়া যে তিনি বিদেশদিগকে হত্যা করিতে উৎসুক হইয়াছিলেন তাহা কখনও কোন বুদ্ধিমান ব্যক্তি বিশ্বাস করিবেন না । যিনি প্রায় ৩০ বৎসরের অধিককাল অতি দক্ষতার সহিত রাজ্যশাসন করিয়া আসিয়াছেন এবং শাসনসংক্রান্ত নানা বহুদৰ্শিতা লাভ করিয়াছেন তাহার পক্ষে এ ভাব অসম্ভব বলিয়া বোধ হয়। এরূপ গুরুতর কার্যের ফল যে ভবিষ্যতে বিষম হইবে তাহাও কি তিনি জানিতেন না ? কিন্তু জানিয়া তিনি কি করিবেন ? তিনি সেই সময়ে উত্তেজিত বিদ্রোহিগণকে দমন করিতে বাস্তবিকই অসমর্থ হইয়াছিলেন । র্তাহার মনে ধারণ হইয়াছিল যে বিদ্রোহিগণের সঙ্গে রাজকীয় সৈন্তগণ যোগ দিলে, তাহারা মনে করিবে রাজসরকার তাহাদের সপক্ষে আছেন এবং এই উপায়ক্রমে বিদেশিগণের বিশ্বাস আকর্ষণ পূৰ্ব্বক তাহাদিগকে ছায়পথে টানিয়া আনিতে পারিবেন। বিদেশীয় জাতি সকলের যুদ্ধজাহাজ যখন টাফু দুর্গ অধিকার করিল তখন গবর্ণমেণ্টের পক্ষ হইতে যুদ্ধঘোষণা করিয়া, বক্সারদিগের কাৰ্য্যের পৃষ্ঠপোষকতা করা হইল । পেকিন লিগেশন অবরোধ করা হইলে বিদেশী জাতির সমস্ত লোক ব্রিটিশলিগেশনে সমবেত হইয়া আত্মরক্ষার চেষ্টা করিতেছিলেন। কিন্তু ফরেনলিগেশন, পেকিন নগর-প্রাচীরের অতি সন্নিকট এবং সহরের মধ্যে । সেই প্রাচীরের উপরে বিদ্রোহিগণ তোপ বসাইয়া আক্রমণ করিলে এবং ইচ্ছা করিলে লিগেশনের ভিতর যত আমেরিকান ও ইউরোপীয়গণ ছিল তাহার একজনও জীবনরক্ষা করিতে সমর্থ হইতেন না এবং এই ব্যাপারের কাহিনী বর্ণনা করিতে কেহই জীবিত থাকিতেন না। আক্রণকারিগণের পশ্চাতে এমন এক শক্তি কাৰ্য্য করিতেছিল যে তাহারা সেই শক্তির বশীভূত হইয়া বিদেশিগণকে সদলে নিপাত করিতে চেষ্টা পায় নাই। অনেকের . বিবেচনায় সেই শক্তিই সম্রাজ্ঞার শক্তি বলিয়া বিবেচিত