পাতা:প্রবাসী (সপ্তম ভাগ, প্রথমাংশ).djvu/১৫০

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

৩য় সংখ্যা । ] इह न । বহুকাল হইতে এই প্রকার অপব্যয় রাজপুরীতে চলিয়া আসিতেছে। এমন কি মাঞ্চু রাজবংশের পূর্ববৰ্ত্তী সম্রাটগণও মিতব্যয়িতার জন্য অনেক চেষ্টা করিয়াও কৃতকাৰ্য্য হইতে পারেন নাই। এক সম্রাট সম্বন্ধে এই প্রকার প্রবাদ অাছে যে একদা তাহার রাজকীয় পরিচ্ছদের জোববাটীর দক্ষিণ আস্তানের এক প্রাস্ত সামান্তভাবে ছিন্ন হইয়াছিল, কেন না সৰ্ব্বদা লিখিবার সময় দক্ষিণ হস্তই ব্যবহৃত হইয়া থাকে । তিনি র্তাহার গৃহকার্য্যের তত্ত্বাবধায়ক কৰ্ম্মচারীকে জিজ্ঞাসা করিলেন যে, ঐ প্রকার নূতন একটা জোব্বা প্রস্তুত করিতে কত ব্যয় হইবে। তাহাতে উক্ত কৰ্ম্মচারী উত্তর করিল যে ঐ প্রকার একটা জোববী প্রস্তুত করিতে তিন হাজার টেল ( বর্তমানে তিন হাজার টেল সাড়ে শাত হাজার টাকার সমান ) ব্যয় হইবে । তখন সম্রাট কহিলেন যে জোব্বাট নুতনই আছে, মাত্র তাহার একটা আস্তানের এক প্রান্ত সামান্তভাবে ছিন্ন হইয়াছে। উছার আস্তীনটী বদলাইলেই যথেষ্ট হইবে। এই বলিয়া তিনি ঐ কৰ্ম্মচারীকে আস্তীন বদলাইবার জন্ত জোকাটা প্রদান করিলেন। কএক মাস,পরে ঐ জোব্বার আস্তীন বদল হইয়া আসিল । সম্রাট অবশেষে হিসাবে দেখিতে পাইলেন, যে একটা নুতন জোব্বা প্রস্তুত করিতে যে ব্যয় পড়িত, এক আস্তীন বদলেই তাহা অপেক্ষ অধিক ব্যয় পড়িয়াছে! আর একজন সম্রাট ছদ্মবেশে রাজপ্রাসাদের বাহিরে ভ্রমণ করিতে করিতে কোন দোকান হইতে কএক আনার খাদ্য ক্রয় করিয়া আনিলেন। পর দিন ঠিক ঐ প্রকার খাদ্য কৰ্ম্মচারিগণ দ্বারা খরিদ করাইয়া আনাইলেন । সম্রাট জিজ্ঞাসা করিলেন "ইহার মূল্য কত ? কৰ্ম্মচারী উত্তর করিল “ইহার মূল্য চারি টেল ( দশ টুকো ) ।” তখন সম্রাট কহিলেন তিনি গত কলf-মাত্র কএক আনায় ঐ প্রকার খাদ্য বাহিরের দোকান হইতে নিজে খরিদ করিয়া আনিয়াছিলেন। সম্রাট আজ ঐ প্রকার খাষ্ঠের এত অধিক মূল্য হইবার কারণ কি জিজ্ঞাসা করিলেন। তাহাতে উক্ত কৰ্ম্মচারী উত্তর করিল যে বাহিরে ঐ মূল্যে ঐ প্রকার খাস্ত পাওয়া যাইতে পারে কিন্তু রাজপুরীর ভিতর উহা চারি টেলের কমে কখনও পাওয়া যাইবে না। কৰ্ম্মচারী আরো পেকিং রাজপুরী । రి) কহিল, যে সম্রাট ইচ্ছা করিলে রাজপুরীর বাহির হইতে উক্ত থাদ্য আনাইয়া ব্যবহার করিতে পারেন, কিন্তু উক্ত মূল্যে রাজপুরীর মধ্যে কেহই ঐ খান্ত আনিবে না। তাহার কারণ কোন খাদ্য দ্রব্য বাহির হইতে ভিতরে অানিতে হইলে ক্রমান্বয়ে বহু কৰ্ম্মচারীর হাত দিয়া তবে অবশেষে সম্রাটের নিকট পৌঁছে এবং প্রতি কৰ্ম্মচারীই কিছু না কিছু লাভ গ্রহণ করিয়া থাকেন। এইজন্ত সম্রাটের নিকট কোন দ্রব্য পৌছিতে এত ব্যয় পড়ে। রাজকৰ্ম্মচারিগণ নিজের হিসাব করিয়া সাবধান না হইলে কখনই রাজপুরীর খরচ কমাইতে পারা যায় না । বিজ্ঞ ও বহুদশী সম্রাটগণ যাহা পারেন নাই তাহা একজন রমণীর পক্ষে অসম্ভব। কারণ রমণীগণ বাহিরে গিয়া কোন বিষয় নিজ চক্ষে অবলোকন করিতে পারেন না। শুনা যায় যে সম্রাট ও সম্রাজীর জন্ত প্রত্যহ যে ডিম সরবরাহ করা হয় তাহার প্রত্যেকটী ডিমের খরচ প্রায় সাড়ে সাত টাকা করিয়া পড়ে । বৃদ্ধারাণীর নিজের নাকি বেশী কিছু জাক জমক নাই। এরূপও শুনা যায় যে কোন ইউরোপীয় নৃপতি অপেক্ষা র্তাহার নিজের যে বেশী কিছু ধনরত্ব আছে তাহা বোধ হয় না। তিনি নাকি মুক্ত খুব ভাল বাসেন, এবং তাহার জেড পাথরের স্বনেক মূল্যবান রত্ন আছে। হীরকাদি র্তাহার বিশেষ নাই। প্রতি বৎসর অপর সকলকে উপহার দিতে র্তাহার অনেক খরচ হয়। শুনিতে পাওয়া যায় যে তাহার অন্তঃকরণ নাকি খুব মহৎ । তিনি বড় স্বদেশপ্রেমিক, আপন দেশকে ও আপন জাতিকে তিনি বড় ভাল বাসেন। তাহার অস্তঃকরণে জাতীয়তার ভাব বড় বদ্ধমূল। যখন রাজ্যে আভ্যন্তরিক বা বাহিক অশান্তি উপস্থিত হয়, তখন তিনি চিন্তায় ম্ৰিয়মান হন। এমন কি সময় সময় আহার নিদ্রা পর্য্যস্ত পরিত্যাগ করিয়া থাকেন। যাবত রাজ্যে শাস্তি স্থাপিত না হয় তাবত র্তাহার শাস্তি থাকে না। বাহিরের সংবাদ শুনিয়া তিনি সময় সময় গুরুতর ভ্রমসংকুল কাৰ্য্য করিয়া থাকেন। কিন্তু উপায় নাই, মাত্র পরের কথার উপর তাহাকে নির্ভর করিয়া চলিতে হয় । কএক বৎসর হইতে বিদেশীগণের ক্ষতিপূরণের দেন। দিবার জন্ত, রাজ্যে নুতন এক কর স্থাপনের প্রস্তাব করিয়া