..Yb (১১) উপসংহার। উপসংহার করিবার পূৰ্ব্বে অবস্ত হইতে একটা মন্ত্র উদ্ধার করা যাইতেছে । তেম আমবস্তেম্ যজতেম্ স্বরেম দামোহু সেবিশ্বতেম্ মিথেম যজাই জওগ্রাব্যে । যশত ১৭৬ কথায় কথায় সংস্কৃত করিলে এইরূপ হইবে ঃ– তম্ অমবস্তম্ যজতম্ স্বরম ধামম শবিষ্ঠম্ মিত্রম যজৈ তোত্রাভ্যঃ । এই একটা মাত্র মন্ত্র হইতেই প্রমাণিত হয় যে এক সময়ে এই উভয় সম্প্রদায়ই একজাতির অন্তভূত ছিল এবং একই ভাষায় মনের ভাব প্রকাশ করিত । মহেশচন্দ্র ঘোষ । - অদ্ভুত লক্ষ্যবেধ । ইংরাজিতে একটা প্রচলিত কথা আছে যে কল্পনা অপেক্ষাও সত্য অদ্ভূত। আমাদের দেশে রীতিমত আধুনিক ধরণের ইতিহাস কখন ছিল না ; কাব্যপুরাণাদির উপাখ্যান হইতে সত্য সংগ্রহ ভিন্ন উপায়ন্তর নাই। কিন্তু কাব্যপুরাণ —কল্পনার স্বাধীন ক্রীড়াক্ষেত্ৰ—রুঢ়-সত্যের গওঁীবদ্ধ ইতিহাস নহে। এই হেতু তাঙ্গর সকল উপাখ্যান খাটি সত্য বলিয়া গ্রহণ করিতে প্রবৃত্তি হয় না । কিন্তু যদি আমাদের সৌভাগ্যক্রমে কোন সত্য প্রমাণিত হইয়া যায়, তখন ইংরাজি প্রবাদের যাথার্থ্য উপলব্ধি করিয়া আমরা আশ্চর্য্য হই। কাব্যপুরাণের সকল উপাখ্যানের মধ্যে প্রাচীন যুদ্ধবিদ্যা সম্বন্ধে আমাদের বড়ই হীন ধারণা আছে। কিন্তু অন্ততপক্ষে কবি শ্ৰীহর্ষের সময় যে বন্দুক ছিল, তাহার প্রমাণ কবি দিয়াছেন। তিনি দময়ন্তীর রূপবর্ণন প্রসঙ্গে বলিয়াছেন যে দময়ন্তীর নাসিক যুবজনের হৃদয়বিদ্ধ করিবার নালিকাস্ত্র অর্থাৎ দোনাল বন্দুক । “ধমুনী রতিপঞ্চবাণয়োরদিতে বিশ্বজয়ায় তদ্বন্ধবোঁ নলিকে ন তদুচ্চ নাসিকে ত্বয়ি নালীক-বিমুক্তি কাময়োঃ ”। প্রবাসী । I ৭ম ভাগ তদপেক্ষা প্রাচীনকালেও বন্দুক ছিল কি না জানি না। একজন লেখক ভারতী পত্রিকায় ৩৪ বৎসর পূৰ্ব্বে প্রমাণ করিতে চেষ্টা করিয়াছিলেন যে রামচন্দ্র ও রাবণের যুদ্ধ বন্দুক কামান লইয়া হইয়াছিল । ইহা সত্য বা মিথ্যা হউক, কিন্তু ইতা নিশ্চয় যে অতি প্রাচীন সময়ে ভারতে ধমুৰ্ব্বিদ্যা যথেষ্ট উন্নত হইয়াছিল এবং ধমুৰ্ব্বেদ রীতিমত অধীত ও অধ্যাপিত হইত। তৎকালে বলচর্চা ও শস্ত্রচর্চা ব্রাহ্মণ ক্ষত্রিয়ের মধ্যে আদরের সহিত অনুষ্ঠিত হইত ; আত্মরক্ষা ও সবলের অত্যাচার হইতে দুৰ্ব্বলকে রক্ষা করা ধৰ্ম্ম ছিল। বলশালী ও শস্ত্রনিপুণ ব্যক্তি সমাজে পূজাৰ্ছ বিবেচিত হইতেন। প্রাচীন কাব্যপুরাণবর্ণিত শস্ত্র প্রয়োগকৌশল এক্ষণে আমাদের অবিশ্বসনীয় মনে হয় । কিন্তু চর্চা, অভ্যাস ও অধ্যবসায়ে জগতে অসম্ভাব্য অনুৎপাদ্য যে কিছু আছে তাহা ত’ বোধ হয় না । প্রাচীন ধনুৰ্ব্বিদ্যাবিশারদগণের মধ্যে পরশুরাম অন্ততম । তিনি বাণ দ্বারা সমুদ্রাপসরণ করিয়া কেরল দেশ উৎপন্ন করিয়াছিলেন । দশরথ শব্দমাত্র লক্ষ্য করিয়া ঋযিকুমার বধ করিয়াছিলেন। রামচন্দ্র সপ্ততাল।বিদ্ধ করিয়াছিলেন । রামায়ণবর্ণত অনলাস্ত্র, পবনাস্ত্র, পর্জষ্ঠাস্ত্র, মোহনাস্ত্র, শব্দবেধ প্রভৃতি বাণের অদ্ভুত শক্তি যে শুধুই কবিকল্পনা তাহা বলা হুঃসাহস বিবেচিত হইতে পারে। মহাভারতে দ্রোণাচাৰ্য্য ও অর্জুন ইষিকাস্ত্র প্রয়োগদ্বারা কুপপতিত বস্তু উত্তোলন করিতেন বর্ণিত হইয়াছে। অর্জুনের লক্ষ্যবেধ সৰ্ব্বজনবিদিত। শরশয্যাগত ভীষ্মের পিপাসা শান্তির জন্ত অর্জুন ধরণীপুষ্ঠ বাণবিদ্ধ করিয়া জল উৎসারিত করিয়াছিলেন । অপেক্ষাকৃত আধুনিক কালে চাদকবি পৃথ্বীরাজের অসাধারণ শব্দবেধ ক্ষমতার বর্ণনা করিয়াছেন। পাণিপথের যুদ্ধে সাহাব উদ্দিন ঘোরী কৃতঘ্নত ও কপটাচার দ্বারা পৃথ্বীরাজকে বন্দী করিয়া স্বরাজ্যে লৌহপিঞ্জরাবদ্ধ করিয়া লইয়া যান ও পরে পরম দেশহিতৈষী মহাত্মা পৃথ্বীরাজের চক্ষু অন্ধ করিয়া দেন। চাদকবি পৃথ্বীরাজের পরম অনুগত বন্ধু ছিলেন ; তিনি র্তাহার অনুসরণ করিয়া ঘোর রাজ্যে গমন করেন। একদিন কথা প্রসঙ্গে পৃথ্বীরাজের শবেধ ক্ষমতার প্রশংসা শুনিয়া ঘোরী পরীক্ষা করিতে ইচ্ছুক হয়েন। সপ্ত
পাতা:প্রবাসী (সপ্তম ভাগ, প্রথমাংশ).djvu/১৯
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।