পাতা:প্রবাসী (সপ্তম ভাগ, প্রথমাংশ).djvu/২৪৮

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

৪র্থ সংখ্যা । ] , বিস্তাশিক্ষা দিলে কিরূপ বিভ্ৰাট ঘটে। তাই এখানে শিক্ষার মৰ্যাদা কমিয়া গিয়াছে । এখানে অজ্ঞতাই “গেরস্ত” রমণীর বিশেষ লক্ষণ । - মনে হইতেছে, আমি একবার কোন গৃহস্থের বৈঠকথানায় একটি হিন্দু মহিলাকে দেখিয়াছিলাম। তিনি নিজে কোন কথা না কহিয়া খুব সলজ্জভাবে তাহার স্বামীর কথা শুনিতেছিলেন। আমি লাহোরের রাষ্ট্ৰীয় মহাসভায় বক্তার মঞ্চে অনেকগুলি মহিলাকে দেখিয়াছিলাম। উহাদের মধ্যে একটি মহিলা, পুরুষ শ্রোতৃবর্গের সম্মুখে সাহসপূর্বক সম্ভাষণ করিয়াছিলেন । যে সকল মহিলা অবরোধ হইতে বাহির হইয়াছে,--যাহারা ইংরেজীধরণে জীবনযাত্রা নিৰ্ব্বাহ করে, যাহারা নানাপ্রকারে আত্মবিনোদন করিয়া থাকে, যাহার নিমন্ত্রিত হইয়া মিত্ৰগৃহে যাতায়াত করে, নিজের বৈঠকখানায় পুরুষ মিত্রদিগকে নিমন্ত্রণ করে, তাহাদের সংখ্যা খুবই কম। গোড়া হিন্দুর ভাষায় বলিতে গেলে, অল্প মহিলাই এ রোগে আক্রান্ত। প্রাচীন তন্ত্রের হিন্দুরা বলে-যাহাতে জঘন্ত প্রেমের দৃশু সকল অতি উজ্জল বর্ণে বর্ণিত এইরূপ নাটক নভেল উহারা পাঠ করে। তবু ফরাসী নভেল এখনও ভারতে প্রবেশ লাভ করে নাই। জাতীয় ধৰ্ম্মজ্ঞান যাহার জন্ত সশঙ্ক হইয় উঠিয়াছে, সেই নভেলগুলা কিরূপ ধরণের ? উহাতে হাবভাবের বর্ণনা অাছে এইরূপ দোষারোপ করা হয়। তাহাতে প্রসাধনকক্ষের বর্ণনা আছে । আমাদের নভেল লেখকেরা এরূপ কক্ষের বর্ণনা করিতে পারিলে ত খুবই খুলী হয়। চূড়ান্ত অপরাধ এই –কতকগুলি মহিলা আপনাদের স্বামীর সহিত একত্র বসিয়া যুরোপীয় খাদ্য আহার করে। অবশ্ব ইহার জন্ত তাহারা জাতিচু্যতি দণ্ডে দণ্ডনীয়। ' আমি যখন ভারতের উত্তর প্রদেশে কপুরতলায় ছিলাম, সেখানকার কলেজের একজন অধ্যাপক প্রায়ই আমার সহিত সাক্ষাৎ করিতে আসিতেন। তিনি লাহোরের বিশ্ববিদ্যালয়ের পরীক্ষাৰ্ত্তীর্ণ ছাত্র । তিনি জৈন ধৰ্ম্মাবলী। জৈন ধৰ্ম্ম বৌদ্ধধর্মের নিকট আত্মীয়। এই জৈনধৰ্ম্মট যে কি, কেহই তাহার সুস্পষ্ট ব্যাখ্যা করিতে পারে না। কোন যুরোপীয়ের সহিত এক সঙ্গে চুরটের ধুমপান করা নিষিদ্ধ নছে, তাই তিনি ইচ্ছাপূৰ্ব্বক আমার নিকট হইতে একটা भमानविक डबड । "هه هدفعیه همههای او را به عه. ン > ○ চুরট গ্রহণ করিলেন। কিন্তু তাহাকে চ পান করিতে অনুরোধ করায় তিনি নিতান্ত বিব্রত হইয়া পড়িলেন। তিনি আমাদের নারীপুজায় যেরূপ বিস্মিত এমন আর কিছুতে নহে । তিনি বলিলেন—“তোমরা নারীকে কুলঙ্গির মধ্যে রাখিয়া দেবতার মত পূজা কর।” আমি বলিলাম—“ন, আমরা এসিয়ার লোকের মত নারীকে দাসী জ্ঞান করি না ; আমাদের সমকক্ষ, আমাদের সঙ্গিনী বলিয়া মনে করি । ইহাতে তোমাদের মাতার প্রতি—পত্নীর প্রতি সন্মানের অভাব প্রকাশ পায়—উহাদিগকে পায়ের নীচে রাখা নিছক স্বার্থপরতা বই আর কিছুই নহে ” এই কথায় তিনি বশিয়া উঠিলেন,—“আমার স্ত্রী ত কিছুতেই বঞ্চিত নহে ; তবে কিনা আমার আহার হইয়া গেলে, তিনি আহার করিতে পান এই মাত্র । তিনি মনে করেন, স্বামীর আগে আহার করিলে, স্বামীর প্রতি অভক্তি প্রকাশ করা হয়। আমার স্ত্রী আমার সহিত একত্র আহার করেন না, একত্র শয়ন করেন না । স্ত্রীর সহিত সৰ্ব্বদা একসঙ্গে থাকাটা ভাল নহে । স্ত্রী একটা প্রলোভনের সামগ্ৰী” । তাহার পরেও এইরূপ বলিতে লাগিলেন —“এবিষয়ে আপনাদের কিরূপ রীতিনীতি আপনাকে জিজ্ঞাসা করিতে আমার বিশেষ সঙ্কোচ বোধ হয় । আমাদের রমণীরা ত সতীত্বের আদর্শস্থল, কিন্তু আপনাদের * * * সেরূপ খ্যাতি নাই বলিয়াই ত শোনা যায়। অন্ততঃ ইংরাজের মুখে শোনা যায়, আপনাদের রমণীদের সতীত্ব নাই—আবার ফরাসীর মুখে শোনা যায়, ইংরাজ রমণী আরও খারাপ * * *”। তাহার পর আরও একটা কথা বলিলেন ;-“আমার মনে হয় স্ত্রীলোকের শিশুর মত। তার কাগুজ্ঞানশূন্ত ; হয় ত একটা খাদের ধার দিয়া চলিতে গিয়া পা ভাঙ্গিয় বসে, আরও কত নিৰ্বদ্ধিতার কাজ করে—তাহাদিগকে এমন কঠিন ও স্বক্ষ লৌহজাল দিয়া বেষ্টন করা উচিত যে তাহার ভিতর দিয়া গলিয়৷ যাইতে না পারে।” সমাজৰঙ্গনের শুভফল সম্বন্ধে ভারতের কিছুই শিখিবার নাই। সমাজ যে উৎপীড়ন করে, তাহার বিনিময়ে সমাজ বর্ণভেম্বপ্রথার স্বারা কতকগুলি উপকারও করিয়া থাকে। কেন না বর্ণভেদপ্রথা, কতকটা সমাজে নীতি রক্ষার দিকে প্রভাব প্রকটিত করে ; দরিদ্র ও রোগীর সেবাভার গ্রহণ