পাতা:প্রবাসী (সপ্তম ভাগ, প্রথমাংশ).djvu/৪০০

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

৬ষ্ঠ সংখ্যা । ] - f স্বাভ্যাগ, আমরা যে অন্য দেশের লোকের তুলনায় অধম, তাহারও নিঃসংশয় প্রমাণ আমি পাই নাই। পরি বারের প্রতি, প্রতিবেশীর প্রতি, জ্ঞাতিবর্গের প্রতি, অস্ট্রিীয় । বন্ধুর প্রতি, কুটুম্বের প্রতি, অতিথির প্রতি, মনুষ্যের প্রতি, কর্তৃব্য সাধনে এদেশের লোক যে অন্যদেশের লোকের • তুলনায় চীন, টঙ্গ এখনও আমি স্বীকার করিতে প্রস্তুত নল্লি । মোটের উপর এদেশের লোকের ধৰ্ম্মবলে অন্য দেশের লোকের তুলনায় হীন, তাঙ্গও স্বীকার করিতে পারিতেছি না। প্রশ্ন উঠিতে পারে, তথাপি আমাদের এই দশা কেন ? টঙ্কার' উত্তরে আমি বলিতে চাহি, আমাদের একটা গোড়ার জিনিসের অভাব আছে। পরিবার, আত্মীয়, বন্ধু, y প্রতিবেশী, মনুষ্যসাধারণ এ সকলের প্রতিই আমাদের কৰ্ত্তব্যজ্ঞান আছে ও সেই কৰ্ত্তব্যে নিষ্ঠা আছে ; কিন্তু আমাদের আপন আপন সঙ্কীর্ণ সমাজ অপেক্ষ বৃহত্তর সমাজ, সমস্ত দেশ ব্যাপিয়া যে সমাজ বিস্তৃত, সেই সমাজের প্রতি আমাদের কৰ্ত্তবাজ্ঞান নাই। হুগলি জেলার লোক দিনাজপুরের লোককে কুটুম্ববোধে বা স্বজাতিবোঞ্চে (সবর্ণবোধে) বা স্বধৰ্ম্মীবোধে আদর সন্মান করিতে পারে, তাহার সহিত এরূপ কোন সম্পর্ক বা পরিচয় না থাকিলেও মনুষ্যবোধে তাহার সন্মান করিতে পারে ; কিন্তু স্বদেশীবোধে যে বিশেষ সন্মান ও বিশেষ সমবেদনা আবশুক, তাহ দেখাষ্টতে জানে না। আমাদের সমাজের মধ্যে ছোট বড় নানা দল আছে ; প্রত্যেক দল আপন দলের স্বার্থরক্ষার জন্য নিযুক্ত আছে ; কিন্তু গোট দেশব্যাপী জনসঙ্ঘের স্বার্থরক্ষার জন্ত গোটা দেশব্যাপী কোন দল নাই। বাঙ্গলা দেশ সম্বন্ধেই এই কথা ; বৃহত্তর ভারতবর্ষকে গ্রহণ করিলে ইহা অারও স্পষ্ট হয় । ৰাজপুত রাজপুতের, শিখ শিখের, মরাঠা মরাঠীর সহিত দল বাধিতে পারে ও অনেক সময় বাধিয়াছে। কিন্তু রাজপুত শিখ মরাঠা একীভূত হইয়া সাধারণ স্বাৰ্থ মিলাইয়া ভারতব্যাপী দলের স্থষ্টি করে নাই, ভারতবর্ষের হিন্দু মুসলমান একত্র হইয়া ভারতব্যাপী নেশন উৎপন্ন হয় নাই। বাঙ্গালী গৃহস্থ পঞ্জাৰী অতিথিকে সন্মান” করিতে পারেন, পাঞ্জাবীর বিপদে সমবেদন দেখাইতে পারেন, কিন্তু পাঞ্জাবীর প্রতিও যেমন,প্লারেন, জৰ্ম্মান ফরাসী ইংরেজের প্রতিও সেইরূপই ব্যাধি ও প্রতিকার । + οί» भारद्रन। भांजरौ मछ्षा-७मन रुि-उिनि श्शूिन्यहे বলিয়া বাঙ্গালী মানুষ র্তাহার প্রতি সমবেদনা দেখাইতে পারেন, কিন্তু পাঞ্জাবী যে ভারতবাসী, অতএব বাঙ্গালীর নিকট আত্মীয়, এই জ্ঞানটুকু তাহার নাই। , এইখানেই আমাদের একটা প্রকাও অভাব রহিয়া গিয়াছে, এবং একটা প্রকাও ছিদ্র রহিয়াছে ; এবং এই ছিদ্রেই প্রবেশ করিয়া পরে আমাদের উপর প্রভূত্ব স্থাপন করিয়াছে ও আমাদিগের উপর প্রভুত্ব চালাইতেছে। যে সকল ঐতিহাসিক কারণে আমাদের এই অভাবটুকু রহিয়া গিয়াছে, স্থানান্তরে তাহার আলোচনা করিয়াছিলাম, এখানে তাহার আলোচনার প্রয়োজন নাই ; কিন্তু এই অভাব যে আছে, এবং উহাই আমাদের সর্বপ্রধান অভাৰ, ইহা স্বীকার্য্য। ইংরেজ রাজপুরুষও ইহা জানেন ; তাহারাও কথায় কথায় বলেন, ভারতবর্ষ একটা ভৌগোলিক নামমাত্র, ভারতবর্ষে নেশন নাই । এবং যত দিন ভারতবর্ষে নেশন না জন্মিবে, ততদিন তাহারা অপ্রতিহত প্রভাবে স্বেচ্ছাচার করিবেন ; তাহাতে আমরা বাধা দিতে পারিব না । * আমাদের বালকের আজ বন্দেমাতরম্ গাহিয়া রাজপুরুষের কর্ণজাল উৎপাদন করিতেছে, কিন্তু ভারতবর্ষের জনসাধারণ এই মাতা কোন মাতা তাহা আদে জানে না। র্তাহাদের কৰ্ত্তব্য আপনার গৃহ, গ্রাম, গোত্র, কুল, জাতি । (caste) ও ধৰ্ম্ম (religion ) এই সকলের সঙ্কীর্ণ পরিধির মধ্যে চিরকাল আবদ্ধ আছে, এবং এই সকল সঙ্কীর্ণ পরিধির বাহিরে আসিয়া একবারে দিগস্ত পর্য্যস্ত প্রসার লাভ করিয়া অখণ্ড মানবের উপরও ছড়াইয়া পড়িয়াছে। কিন্তু আর একটা মাঝামাঝি ক্ষেত্র, যে ক্ষেত্রের সীমা স্বদেশের অর্থাৎ ভারতবর্ষের সীমার সহিত অভিন্ন, সে ক্ষেত্রে বিশেষভাবে , প্রসারিত ও বিশেষভাবে আবদ্ধ হয় নাই। ভারতের , ত্ৰিশ কোটি লোকের অধিকার, লোকই জানে না যে তাহারা" ভারতবাসী। • . . . . আমাদের এই যে অভাব, ইহা চরিত্রগত অভাব নহে, . ইহা জ্ঞানগত অভাব । আমাদের ঐ জ্ঞানটাই নাই । আমাদের শিক্ষিতসম্প্রদায় এই জ্ঞানটা বৈদেশিকের ইতিহাস ও বৈদেশিকের সাহিত্য হইতে উপার্জন করিয়াছেন, কিন্তু তাহার যে জ্ঞান অর্জন করিয়াছেন, তাহা এখনও জনসঙ্ঘ