পাতা:প্রবাসী (সপ্তম ভাগ, প্রথমাংশ).djvu/৪৫

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

8° প্রবাসী । সথিত্রয় এই প্রস্তাবে সম্মত ও সস্তুষ্ট হইয়া গৃহে গেল । তাহাদের প্রাপ্তনিগ্রহ স্বামীবেচারার জীবনে কখন প্রকৃত ঘটনা জানিল না । তাহার এক রজনীর দুঃস্বপ্নকাহিনী স্মরণ করিয়া উত্তরজীবনে কখন কৌতুক, কখন বিস্ময়, কখন ভীতি প্রাপ্ত হইত মাত্র । * চারু বন্দ্যোপাধ্যায়। বৈকুণ্ঠারোহণ। + “হের হের সথ, হের ঋষিবর ! স্বর্ণাতি বলে অঙ্গে ।” কহিলা শ্ৰীহরি, ডাকিয়া নারদে, মধুর ভারতী ভঙ্গে, . “আসিয়াছে কস্তা, রূপে গুণে ধন্ত, এসেছে কনক ওই ; ক্রোড়ে করি আজি এ সুধাময়ীরে—আয় মা আনন্দময়ি। কুমারী-নিকুঞ্জে লয়ে যাও এরে ; যত কুমারীর দল সাজাক্ ইহারে, হাসাক ইহারে, মুছাক নয়ন জল ! কুমারী-নিকুঞ্জ, এ গোলোক ধামে সদা যাহা সুধাভরা, লয়ে যাও এরে সে আনন্দপুরে, যাও যাও লয়ে ত্বরা ! মায়ের উৎসঙ্গ তপ্তনীড় ছাড়ি, বিহগীর ক্ষুব্ধ প্রাণ ! আদর-ঝঙ্কারে অভিমানিনীর লুপ্ত কর অভিমান!” শ্ৰীহরির কোল হইতে বালারে দেবর্ষি লষ্টল কোলে ; হাসিল কনক, দুলিল অলক, ভৃঙ্গ যেন পুষ্পদোলে ! কুমারী-মণ্ডলী নারদের কাছে আসিয়া ঘিরিল তারে ; লষ্টয়া চলিল কুমারী-নিকুঞ্জে, সাজাইয়া পুষ্পহারে! পথে যেতে যেতে, হেসে হেসে বলে যত কুমারীর দল— “এস এস সখি, রত্ন-উদ্যানের এস গো কনক ফল ! আদর-তরুর, সোহাগ-শার্থীর, এস হীরাম পাখী, সাধ যায় তোরে হার করি গলে, সতত বুকেতে রাখি। আঁখির মাঝারে আঁখি-তারা করি, রাখি ভোরে নিশি দিন, বঁাশী করি তোরে অধরে বাজাই, গাই তোরে করি বীণ!” কুমারী-নিকুঞ্জে আসিয়া কনক হেরিল অবাকৃ-প্রায়, সহস্ৰ কুমারী দিয়ে করতালি রঙ্গে চরিগুণ গায় ! • শেনারশীয় ঔপন্যাসিক ইসিয়ে দি রোবলসের গন্নাবলম্বনে লিখিত । + আমার মাননীয় বন্ধু বিখ্যাত অধ্যাপক শ্ৰীযুক্ত --- --- --- মহাশয়ের পরম গুণবতী কুমারী কস্ত কনককুমারীর অকাল-মৃত্যু উপলক্ষে लिधिख् ।। " - [ ৭ম ভাগ । ঘন হরিধ্বনি ! এ ধ্বনির কাছে বীণার সঙ্গীত হারে ! কোকিলের কণ্ঠে, খামার অধরে, এ মৃধা ঝরিতে নারে! ভক্তি দেবী ওই বিহ্বল বিবশা, আলু থালু এলো-চুলে “হরি মোর জ্ঞান, হরি মোর ধ্যান” গাহে বসি তরুমূলে ! শান্তি দেবী ওষ্ট নিঝরের তীরে, করে লয়ে জপমালা, ধীরে বলে “হরি”—সেই ছবি হেরি, মোহিল কনক বালা ! মাতিয়া উৎসবে, কুমারীরা সবে, “হরি, হরি”, বলি নাচে ; হরি নাম বিনা,—আমরি সাধনা!—তিলেক রে নাহি বাচে! কুমারী-নিকুঞ্জ !—ছেন সুধা-কুঞ্জ ভুবনে নাহি রে আর ! চারিধারে মরি বীণার ঝঙ্কার, কলকণ্ঠ অপারার ! চারিধারে মরি রসালে রসালে কোকিলের কুহরণ, চারিধারে মরি তমালে তমালে ময়ূরের নরতন । চারিধারে মরি ডাগর-নয়ন হরিণের ছুটাছুটি, চারিধারে মরি লাল নীল পীত কপোতের লুটাপুটি ! চারিধারে মরি লাল নীল পীত ফুল্ল কুমুমের হাস ; নবীন বসন্ত, নবীন আনন্দ, ঘিরে অাছে বার মাস ! “হরিনামামৃত” কল্পতরু দোলে !—নেত্র মুদি, তার তলে, যা কর কামনা, নিমেষ না যেতে, অমনি তখনি ফলে ! জানি গো কনক, পেয়েছিস্ পিতা, যে জনক সমতুল নাহি এই ভবে ! পেয়েছিস্ মাতা, যার স্নেহে নাহি ভুল ! ভাই, ভগ্নী, সখী, সকলি শ্ৰীচরি! এমন নাহি রে আর । আজন্ম কুমারী পেয়েছিস্ পতি বিশ্বপতি থ্রে ধার ! তবু মা স্বধাই, দয়া মায়া ভুলি, কেমনে চলিয়া গেলি ? হায় অকাতরে শোকানল-কুণ্ডে সোনার সংসার ফেলি! উযার আলোকে হেরি অন্ধকার না হেরিয়া তোর মুখ । অপরের স্বরে তোর কণ্ঠ ভাবি দুরু দুরু কঁপে বুক ! হাসি হাসি তোর কোথা মুখখানি ? কোথা সেই মৃদুস্বর ? হায় মা কনক, কোথায় পলালি শ্মশান করিয়া ঘর ? পিতার দুলালি, মাতার দুলালি,সোদরীর সদা প্রিয়া, সোদরের প্রিয়, সবার অমিয়, বাচি মোরা কি গো নিয়া ? দুটি দিন সুধু রে কনক পাখী, সোনার পিঞ্জরে ছিলি, গাহি দুটি গান, বনের বিহগী বনপানে পলাইলি ! ক্ষণেক জলিয়া, ক্ষণেক হাসিয়া, ওরে মোর মোমবাতি ! নিবে গেলি হায়—বল মা বল মা কেমনে পোহাই রাতি ? আহা মা কনক, চাদমুখে তোর ঝরিত রে জ্যোৎস্না হাস ;