পাতা:প্রবাহিণী-রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.djvu/৫২

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
প্রবাহিণী
৩৬

হায় গো,
নয়ন আমার মরে দুরাশায় গো,
চেয়ে থাকি দাঁড়িয়ে দ্বারে।
যে ঘরে ঐ প্রদীপ জ্বলে
তার ঠিকানা কেউ না বলে,
বসে থাকি পথের নিরালায় গো,
চিররাতের পাথার পারে॥

১১

সবার সাথে সেই অজানা চল্‌ছিল এই পথের অন্ধকারে,
কোন্ সকালের হঠাৎ আলোয় পাশে আমার দেখতে পেলেম তারে॥
এক নিমিষেই রাত্রি হোলো ভোর,
চিরদিনের ধন যেন সে মোর,
পরিচয়ের অন্ত যেন কোনখানেই নাইক একেবারে;
চেনা কুসুম ফুটে আছে না-চেনা এই গহন বনের ধারে,
অজানা এই পথের অন্ধকারে॥
জানি আমি দিনের শেষে সন্ধ্যা তিমির নামবে পথের মাঝে,
আবার কখন পড়বে আড়াল, দেখা-শোনার বাঁধন রবে না যে।
তখন আমি পাব মনে মনে
পরিচয়ের পরশ ক্ষণে ক্ষণে,
জানব চিরদিনের পথে আঁধার আলোয় চলচি সারে সারে;
হৃদয়মাঝে দেখব খুঁজে একটি মিলন সব-হারানোর পারে
অজানা এই পথের অন্ধকারে॥