চাড়া করিয়াছেন, কিন্তু গণনার অণুমাত্র ভুল পাওয়া যায় নাই। সকল দেখিয়া মনে হয়, এ প্রকার সূক্ষ্ম গণনা কেল্ভিনের পক্ষেই সম্ভব ছিল। তাঁহার অসীম অধ্যবসায় ও অত্যাশ্চর্য্য গণিতজ্ঞান তাঁহার প্রত্যেক গবেষণাকে সাফল্য দিয়াছে।
লর্ড কেল্ভিনের প্রধান গবেষণাগুলির মধ্যে কেবল দুই একটি উল্লেখ করা গেল মাত্র। ইহা ছাড়া তিনি আরো যে সকল গবেষণা করিয়াছেন তাহার গুরুত্ব ও সংখ্যা এত অধিক যে, তাহাদের বিশেষ বিবরণ দিতে হইলে একখানি প্রকাণ্ড গ্রন্থ হইয়া দাঁড়ায়। পঞ্চাশ বৎসরে তিনি নানা বৈজ্ঞানিক সমাজে প্রায় তিনশত প্রবন্ধ পাঠ করিয়াছিলেন! বলা বাহুল্য, প্রত্যেক প্রবন্ধই এক এক নূতন তত্ত্বের অবতারণা করিত। জড়বিজ্ঞানের কোন শাখাই তাহার গবেষণা হইতে বাদ পড়ে নাই। জড়ের উৎপত্তিতত্ত্ব প্রভৃতি কঠিন গাণিতিক ব্যাপার হইতে আরম্ভ করিয়া জলের কল প্রস্তুত করা প্রভৃতি ব্যাবহারিক বিজ্ঞানের ক্ষুদ্র অংশগুলিও তাঁহার চিন্তার বিষয় ছিল। সকল বিজ্ঞানেই তিনি এ প্রকার ছাপ রাখিয়া গিয়াছেন যে, তাহা আর মুছিবার নহে। বিধাতা যেমন তাঁহার সর্ব্বশ্রেষ্ঠ আশীর্ব্বাদগুলি দ্বারা ভূষিত করিয়া কেল্ভিন্কে জগতে পাঠাইয়াছিলেন, জগতের লোকও সেই সকল আশীর্ব্বাদের সমুচিত সম্মান দেখাইতে ভুলে নাই। মান ও ঐশ্বর্য্য অযাচিতভাবে তাঁহার দ্বারস্থ হইয়াছিল। দরিদ্র অধ্যাপকের পুত্ররূপে জন্মগ্রহণ করিয়া তিনি লর্ড উপাধি প্রাপ্ত হইয়াছিলেন, এবং দেশবিদেশের বিখ্যাত বিদ্বৎসমাজমাত্রেই তাহাদের শ্রেষ্ঠ উপাধিগুলি কেল্ভিন্কে দান করিয়া আপনাদিগকে গৌরবান্বিত মনে করিয়াছিল।
প্রাচীন বৈজ্ঞানিকদিগের জীবনের ইতিহাস আলোচনা করিলে একটা বুহৎ ব্যাপার আপনা হইতেই আমাদের নজরে পড়ে। মনে হয়, অনেক প্রাচীন বৈজ্ঞানিকই তাঁহাদের আবিষ্কৃত তত্ত্বগুলিকে