পাতা:প্রাকৃতিকী.pdf/১২৮

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
মনুষ্যসৃষ্টি
১০৫

গণও এই সিদ্ধান্তের অনুমোদন করিতেছেন। অতি প্রাচীন শিলাস্তরে যে সকল জীবের চিহ্ন আবিষ্কৃত হইয়াছে, তাহাদের অনেকগুলিকেই বৃক্ষচর বলিয়া মনে হয়।

 বৃক্ষচর প্রাণীর দেহ পরীক্ষা করিলে, গাছ আঁক্‌ড়াইয়া ধরিবার জন্য তাহাতে কেবল দুইটিমাত্র সুব্যবস্থা দেখা যায়। কতকগুলি প্রাণী তাহাদের দীর্ঘ নখ দিয়া শাখা প্রশাখা আঁক্‌ড়াইয়া বৃক্ষে বাস করে। অপর কতকগুলি তাহাদের অঙ্গুলিগুলিকে দীর্ঘ করিয়া ডাল ধরিবার সুবিধা করিয়া লয়। কোন্ প্রাকৃতিক অবস্থায় পড়িয়া সাধারণ স্তন্যপায়ী জীব ক্রমে দীর্ঘনখী বা দীর্ঘাঙ্গুলি প্রাণীতে পরিণত হইয়াছিল তাহা এখন স্থির করিবার উপায় নাই। তবে সাধারণ স্তন্যপায়ী প্রাণী হইতেই যে, উক্ত দুই শ্রেণীর উৎপত্তি হইয়াছিল তাহা সুনিশ্চিত, এবং প্রতিযোগিতায় নখিগণকে পরাস্ত করিয়া অঙ্গুলিযুক্ত বৃক্ষচরগণই যে, মনুষ্যত্বের দিকে অগ্রসর হইয়াছিল, তাহাও স্থির।

 নখীদিগের নখই উন্নতির অন্তরায় হইয়াছিল। নখ দ্বারা ভাল করিয়া বৃক্ষশাখা আঁড়াইয়া ধরা বড়ই কষ্টকর। দেহ পুষ্ট হইলে এই কার্য্য একেবারে অসম্ভবই হইয়া দাঁড়ায়। কিন্তু বৃহৎ অঙ্গুলিযুক্ত প্রাণী যতই পুষ্টাবয়ব হউক না কেন, অঙ্গুলি দ্বারা শাখা ধরিয়া সে অনায়াসে বৃক্ষে বিচরণ করিতে পারে। বৈজ্ঞানিকগণ বলেন, নখের এই অনুপযোগিতাই বৃক্ষচারী নখিগণকে ক্ষুদ্রাবয়ব করিয়া রাখিয়াছিল। অপরদিকে দীর্ঘ অঙ্গুলিযুক্ত প্রাণিগণ ক্রমে দেহের সর্ব্বাঙ্গ পুষ্ট করিয়া উন্নত হইয়া দাঁড়াইয়াছিল।

 যে সকল মানসিক শক্তি মনুষ্যকে ইতর প্রাণী হইতে পৃথক করিয়া রাখিয়াছে, সেগুলির আলোচনা করিতে গেলে গণনাশক্তির কথা সর্ব্বাগ্রে আমাদের মনে পড়িয়া যায়। পাঁচটি জিনিষের সহিত আর পাঁচটি জিনিষ যোগ করিলে, এই নূতন জিনিষগুলি যে পূর্ব্বের দ্বিগুণ হইয়া