পাতা:প্রাকৃতিকী.pdf/১৩৫

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
১১২
প্রাকৃতিকী

তাহা তিনি প্রচার করিতে আরম্ভ করিয়াছিলেন। কেবল প্রচার করা নয়, হাতে হাতে তাহা দেখাইতেও লাগিলেন। ‘দম্বল’ বা অপর কোন খামী (Yeast) লইয়া তিনি সেগুলির উপর চাপ প্রয়োগ করিতে লাগিলেন; খামীর কোষগুলি (Cells) ভাঙ্গিয়া গেল এবং সেগুলি হইতে এক প্রকার রস নির্গত হইতে লাগিল। বুক্‌নার এই রস পরীক্ষা করিয়া দেখাইতে লাগিলেন, তাজা জীবাণুযুক্ত বীজ নিক্ষেপ করিলে দুগ্ধ বা চিনির রস প্রভৃতিতে যে পরিবর্ত্তন হয়, ঐ সকল জীবকোষের রস দিয়াও অবিকল সেই পরিবর্ত্তনই শুরু হয়। লোকে বুঝিতে লাগিল জীবাণুর কার্য্যে জীবনীশক্তি নামক কোন রহস্য জড়িত নাই। ইহাতে জীবাণুগণ তাহাদের দেহে কি প্রকারে রস প্রস্তুত করে তাহা স্থির হইল না বটে, কিন্তু সেই রসই যে, নানা পদার্থের সহিত মিলিয়া রাসায়নিক ক্রিয়া চালায় তাহাতে আর কাহারো সন্দেহ রহিল না। পাষ্টুর সাহেব, যে ‘জীবনীশক্তি’র ভয়ে কোন কথা বলিতে পারেন নাই, তাহার ভিত্তি চঞ্চল হইয়া উঠিল।

 ইহার অব্যবহিত পরে বার্‌ট্রাণ্ড (Gabriel Bertrand) নামক জনৈক ফরাসী বৈজ্ঞানিক বিষয়টি লইয়া গবেষণা আরম্ভ করিয়াছিলেন, ইহাতে ইনি যে ফল পাইয়াছিলেন, তাহাতে জীবনের কার্য্য ও রাসায়নিক কার্য্যের একতা আরো সুস্পষ্ট বুঝা গিয়াছিল। জীবনীশক্তি ও রাসায়নিক শক্তির একতার কথা ইতিপূর্ব্বে প্রসিদ্ধ ফরাসী পণ্ডিত লাভোসিয়ার দেখাইয়াছিলেন। পরীক্ষাগারে অক্সিজেন্ সংগ্রহ করিতে হইলে আমরা যেমন কখন কখন বায়ুর নাইট্রোজেনকে বর্জ্জন করিয়া অক্সিজেন্ গ্রহণ করি, প্রাণীর ফুস্‌ফুস্‌ও যে ঠিক সেই প্রকারেই অক্সিজেন সংগ্রহ করিয়া জীবনের কার্য্য চালায়, তাহা বহুপূর্ব্বে এই লাভোসিয়ায় সাহেবই প্রচার করিয়াছিলেন। বার্‌ট্রাণ্ড সাহেব দেখাইতে লাগিলেন, প্রাণীর ফুস্‌ফুসে এমন একটি জিনিষ আছে,