পাতা:প্রাকৃতিকী.pdf/১৩৭

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
১১৪
প্রাকৃতিকী

নানা নামে অভিহিত করিতে লাগিলেন। কেহ সেগুলিকে Enzymes কেহ বা তাহাদিগকে Zymases বলিতে লাগিলেন।

 যখন পাষ্টুরের আবিষ্কৃত জীবাণুর কার্য্যের সহিত নানা শারীরিক কার্য্যের এই প্রকার ঐক্য একে একে ধরা পড়িতেছিল, তখন এক অভাবনীয় বাধা আসিয়া গবেষণার গতি রোধ করিয়া দিয়াছিল। বৈজ্ঞানিকগণ চিন্তা করিয়া দেখিলেন, পাষ্টুরের সেই জীবাণুর কাজ কেবল জিনিষকে ভাঙ্গিয়া ফেলে ব্যতীত আর কিছুই নয়। যখন শর্করায় আমরা বিশেষ জীবাণুযুক্ত খামী নিক্ষেপ করি, তখন শর্করা ভাঙ্গিয়া গিয়া মদ্য (Alcohol) এবং অঙ্গারক বাষ্প (Carbonic Acid) উৎপন্ন করিতে থাকে। পাকাশয়ের পেপ্‌সিন নামক রসও ঠিক ঐ প্রকারেই উদরস্থ খাদ্যের মাংস ইত্যাদিকে ভাঙ্গিয়া নানা নূতন পদার্থ উৎপন্ন করে। কিন্তু জীবদেহে ভাঙ্গার সহিত অবিরাম যে গড়ার কাজও চলিতেছে তাহার ব্যাখ্যান কোথায়? কেবল ভাঙ্গা লইয়াই ত জীবন নয়,—ভাঙ্গা ও গড়ার অপূর্ব্ব যোগেই জীবনের কার্য্য। সুতরাং গাঁজানো (Fermentation) লইয়াই জীবন, এই কথা বলিয়া যাঁহারা জয়োল্লাসে উন্মত্ত হইলেন, তাঁহাদিগকে কিছুদিনের জন্য নীরব থাকিতে হইল।

 কিন্তু গবেষণার বিরাম হইল না,—নানা দেশে নানা বৈজ্ঞানিক গাঁজানোর কার্য্যে কোন নূতন জিনিষ গঠিত হয় কি না, অনুসন্ধান করিতে লাগিলেন। কত জিনিষে কত প্রকার খামী দিয়া পরীক্ষা চলিতে লাগিল, কিন্তু কোন পরীক্ষাতেই সংগঠন দেখা গেল না। শেষে ইংরাজ রসায়নবিৎ হিল্ সাহেব (Croft Hill) এক পরীক্ষায় খামী দ্বারা প্রকৃত সংগঠন দেখাইয়া সকলকে বিস্মিত করিলেন। শ্বেতসারে (Starch) খামী দিলে তাহা চিনি প্রভৃতি পদার্থে বিশ্লিষ্ট হইয়া পড়ে। যতক্ষণ শ্বেতসারের এক কণিকা পর্য্যন্ত অবশিষ্ট থাকে, ততক্ষণ এই