পাতা:প্রাকৃতিকী.pdf/১৩৮

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
জীবনটা কি ?
১১৫

পরিবর্ত্তনের বিরাম হয় না। শ্বেতসার নিঃশেষিত হইলে এই কার্য্যের লোপ ঘটে, এবং নূতন শ্বেতসার দিলে পুনরায় ঐ বিশ্লেষণ সুরু হয়। হিল্ সাহেব একটি পাত্রে শ্বেতসারের সহিত খামী (Malt Enzyme) মিশাইয়া, তাহাকে নিঃশেষে বিশ্লিষ্ট করিয়াছিলেন, এবং পরে তাহাতে ধীরে ধীরে চিনি নিক্ষেপ করিতে আরম্ভ করিয়াছিলেন। এই প্রকারে দেখা গিয়াছিল, চিনির যোগে শ্বেতসারের আবার পুনর্গঠন আরম্ভ হইয়াছে। কাজেই পাষ্টুরের গাঁজানোর কার্য্যে যেমন পদার্থের বিশ্লেষণ ঘটে, তাহাতে সেই প্রকারে নূতন পদার্থের যে সংগঠনও হইতে পারে, তাহা বুঝা গেল।

 হিল্ সাহেবের এই আবিষ্কার অতি অল্প দিন হইল প্রচারিত হইয়াছে, বোধ হয় দশ বারো বৎসরের অধিক হইবে না। কিন্তু একমাত্র উদাহরণে বৈজ্ঞানিকগণ সন্তুষ্ট হইলেন না, নানা দেশের পণ্ডিতগণ নূতন উদাহরণ সংগ্রহের জন্য গবেষণা করিতে আরম্ভ করিয়াছিলেন। সম্প্রতি জর্ম্মানীর জনৈক বিখ্যাত রসায়নবিৎ ইমারলিঙ্ সাহেব (Emmerling) আর একটি উদাহরণ সংগ্রহ করিয়া সকলকে চমৎকৃত করিয়াছেন। ইনি বাদামের তৈলে একপ্রকার খামী দিয়া সেটিকে চিনি এবং হাইড্রোসাইনিক্ এসিড্ (Hydrocyanic Acid) নামক এক বিষ-পদার্থে বিশ্লিষ্ট হইতে দেখিয়াছিলেন, কিন্তু ইহার পরেই তাহাতে আর এক প্রকার খামী (Malt Ferment) দিবামাত্র সেটি আবার বাদামের তৈলে পুনর্গঠিত হইয়া পড়িয়াছিল।

 এই আবিষ্কারের পর হইতে প্রতি বৎসরেই খামীর যোগে আরো নূতন নূতন জিনিষের উৎপত্তির সংবাদ পাওয়া যাইতেছে। পাষ্টুরের আবিষ্কৃত তত্ত্ব পদার্থের বিশ্লেষণেই যে সীমাবদ্ধ নয়, তাহা আজকাল বৈজ্ঞানিকগণ প্রত্যক্ষ দেখিতেছেন। কাজেই স্বীকার করিতে হইতেছে, এক খামীর যোগে যেমন আমরা শ্বেতসারকে ভাঙ্গিয়া চিনি ইত্যাদিতে