পাতা:প্রাকৃতিকী.pdf/১৪৯

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
১২৬
প্রাকৃতিকী

নাইট্রোজেন্-বর্জ্জিত যে অংশটা অবশিষ্ট থাকে উহা তাপোৎপত্তির কার্য্যে নিযুক্ত হয়।

 আমাদের দেহে নিয়ত যে তাপের উৎপত্তি হইতেছে, তাহার কত ভাগ কি প্রকারে দেহ হইতে নির্গত হয়, ইহারও একটা মোটামুটি হিসাব করা হইয়াছে। এই হিসাবে দেখা যায়, সমবেত তাপের শতকরা ৭৩ ভাগ দেহ হইতে বিকীর্ণ হইয়া পার্শ্বের বায়ুকে উত্তপ্ত করে এবং ২২ ভাগ শ্বাসযন্ত্র ও চর্ম্মের জলীয় অংশকে বাষ্পীভূত করে। ইহার পর যে পাঁচ ভাগ অবশিষ্ট থাকে, কেবল তাহাই প্রশ্বাসের বায়ু ও মলমূত্রাদিকে গরম করিতে ব্যয়িত হয়। কম্বল বা অপর পশমী বস্তু গায়ে জড়াইলে কেন উষ্ণতা অনুভূত হয়, দেহনির্গত তাপের কথা মনে করিলে তাহা বেশ বুঝা যায়। পশমী বস্ত্র তাপের পরিচালক নয়; কাজেই এই প্রকার কাপড়ে শরীর আবৃত রাখিলে পূর্বোক্ত শতকরা ৭৫ ভাগ তাপ দেহ ত্যাগ করিয়া দূরে যাইতে পারে না;— শরীরের চারি পাশের বায়ুতেই তাহা আবদ্ধ থাকে। এই কারণেই পশমী কাপড় গরম কাপড় নামে খ্যাত।

 সভ্য মানুষ এত শিল্পকুশলী হইয়াও শিল্পনৈপুণ্যে অদ্যাপি প্রকৃতির সমকক্ষ হয় নাই। প্রাণীর দেহ কেবলমাত্র যন্ত্র নয়, এপ্রকার সর্ব্বাঙ্গসুন্দর আর একটি যন্ত্র ইউরোপ বা আমেরিকার কোন কারখানায় মেলা ভার। আজকাল আমরা যে-সকল বাষ্পযন্ত্রকে খুব ভাল বলি, তাহাতে কয়লা পোড়াইলে কয়লার শক্তি শতকরা বারো ভাগ মাত্র চাকা ইত্যাদি ঘুরাইয়া কাজ করে, অবশিষ্ট ৮৮ ভাগ তাপ ইত্যাদির আকার গ্রহণ করিয়া নষ্ট হইয়া যায়। এই অপচয় বড় কম নয়। প্রকৃতির স্বহস্তনির্ম্মিত যন্ত্রে যে অপব্যয় নাই, একথা বলা যায় না; কিন্তু বাষ্পযন্ত্রের অপচয়ের তুলনায় ইহার পরিমাণ অনেক অল্প। হিসাব করিলে দেখা যায়, খাদ্য দ্রব্য হইতে দেহে যে শক্তির উৎপত্তি হয়, তাহার