পাতা:প্রাকৃতিকী.pdf/১৫৯

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
১৩৪
প্রাকৃতিকী

 হেরিং সাহেব বলেন, ভেকের অক্ষিযবনিকাস্থ কোষে যেমন একপ্রকার বর্ণরস দেখা যায়, মানবের চক্ষু-যবনিকায় সম্ভবতঃ সেই প্রকার তিনজাতীয় বর্ণরস বর্ত্তমান আছে, এবং এই রসগুলির প্রত্যেকেই এক বিশেষ বিশেষ ধর্ম্মবিশিষ্ট। লালসবুজ, পীতনীল এবং শ্বেতকৃষ্ণ এই তিন জোড়া বর্ণের আলোক ঐ তিনজাতীয় বর্ণরসের এক একটিকে নির্ব্বাচন করিয়া কার্য্য করে। অর্থাৎ লালসবুজ আলোক যে বর্ণরসের উপর কার্য্য করে, নীলপীত বা শ্বেতকৃষ্ণালোক তাহার কোনই পরিবর্ত্তন করিতে পারে না।

 লালসবুজ ইত্যাদি যে তিন জোড়া বর্ণের কথা বলা হইল, তাহাদের প্রত্যেকের দুই দুইটি বর্ণ পরস্পরের বিরোধী। অর্থাৎ লালসবুজ এই বর্ণযুগ্মের লালে সবুজের কোনই উপাদান নাই, এবং এই দুই বর্ণ পরস্পরের বিরোধী বলিয়া ইহাদের মিশ্রণে অপর কোন বর্ণ উৎপন্ন হয় না। শ্বেতকৃষ্ণ এবং নীলপীতের দুই দুইটি বর্ণের মধ্যেও ঠিক ঐ প্রকার সম্বন্ধ বর্ত্তমান। হেরিং সাহেব বলেন, এই তিন জোড়া আলোকের প্রত্যেক জোড়া সাড়া দিবার উপযোগী বর্ণরসের উপর আসিয়া পড়িলে, অবস্থা বিশেষে সেই পদার্থের ক্ষয় বা বৃদ্ধি আরম্ভ করে, এবং এই ক্ষয় বৃদ্ধির দ্বারাই একই বর্ণরসের সাহায্যে দুই দুইটি বর্ণের উৎপত্তি হইয়া পড়ে। পরীক্ষা করিয়া দেখা গিয়াছে, অক্ষি যবনিকার সেই তিন জাতীয় বর্ণরসের মধ্যে যেটি কেবল লালসবুজে সাড়া দিতে পারে, তাহার উপর কোন আলোক পড়িয়া যদি পদার্থের পরিমাণকে বাড়াইয়া দেয়, তবে দ্রষ্টা ইহার ফলে কেবল লাল বর্ণই দেখিতে পাইবে; এবং অপর কোন আলোক দ্বারা যদি সেই পদার্থেরই ক্ষয় আরম্ভ হয়, দর্শকের চক্ষে তবে তাহা সবুজ আলোক হইয়া দাঁড়াইবে।

 এখন হেলম্‌হোজ্ বর্ণজ্ঞান-সম্বন্ধে কি বলেন দেখা যাউক।