তিন জোড়ার ছয়টি মূলবর্ণের অস্তিত্ব মানিয়া লইয়া, এবং অক্ষিযবনিকার বর্ণরসের তিনটি পৃথক ধর্ম্ম স্বীকার করিয়া হেরিং সাহেব বর্ণজ্ঞানের পূর্ব্বোক্ত সিদ্ধান্তটির প্রতিষ্ঠা করিয়াছিলেন। হেলম্হোজ্ সাহেব প্রথমেই ঐ প্রকার ছয়টি মৌলিক বর্ণের অস্তিত্বে বিশেষ সন্দেহ প্রকাশ করিয়াছিলেন। ইঁহার মতে, লাল সবুজ ও বেগুনিয়া এই তিনপ্রকার বর্ণ ব্যতীত আর কোন বর্ণই আমাদের চক্ষু দেখিতে পায় না। আমরা যে এগুলি ছাড়া আরো শত শত বর্ণ দেখি, তাহা ঐ তিন বর্ণেরই বিচিত্র সংমিশ্রণের ফল। হেরিং সাহেবের সিদ্ধান্তের সহিত হেলম্হোজের মতবাদের ইহাই একমাত্র অনৈক্য নয়। হোলম্হোজ্ সাহেব আরো বলিয়াছেন, দৃষ্টিনাড়ীগুচ্ছের প্রান্তে যে-সকল দণ্ড ও মোচাকার কোষ দেখা যায়, তাহারাই আলোকে উত্তেজিত হইয়া চক্ষুতে বর্ণ দেখায়। বাহিরে এই দণ্ড ও মোচাকার কোষগুলির পরস্পরের মধ্যে কোন পার্থক্যই দেখা যায় না বটে, কিন্তু মূলে তাহারা তিন জাতীয় বিধর্ম্মী জিনিষ। লাল সবুজ বেগুনিয়া এই তিনটি মৌলিক বর্ণের আলোক ঐ তিনজাতীয় কোষের উপর একসঙ্গে কাজ করিতে পারে না, এক একটি আলোক ঐ তিন শ্রেণীর কোষের এক একটিকে বাছিয়া লইয়া উত্তেজিত করে, এবং সেই উত্তেজনা দৃষ্টিনাড়ী দ্বারা মস্তিষ্কে নীত হইলে বর্ণজ্ঞানের উৎপত্তি হয়। এই জন্য লোহিতালোক উৎপাদক কোষগুলি যে আলোক দ্বারা উত্তেজিত হয়, তাহাকে আমরা লোহিতালোক রূপেই দেখি। অপর দুই জাতীয় কোষ এই আলোকে মোটেই সাড়া দিবে না।
আমাদের চক্ষু কেবল লাল সবুজ ও বেগুনিয়া এই তিন মৌলিক বর্ণ দেখিয়াই ক্ষান্ত হয় না: শত শত আলোক চক্ষে পড়িয়া সর্ব্বদাই শত শত বিচিত্র বর্ণের উৎপত্তি করে। এই প্রসঙ্গে হেলম্হোজ্ সাহেব বলেন, কোনও মিশ্র আলোক অক্ষি যবনিকায় পড়িয়া যদি পূর্ব্বোক্ত তিন