পাতা:প্রাকৃতিকী.pdf/১৯৫

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
১৭০
প্রাকৃতিকী

প্রভৃতি বুনো গাছের ফুল পীত। যে চন্দ্রমল্লিকার এখন বড় বড় বিচিত্র বর্ণের ফুল ফোটে, এককালে তাহা বন্য ছিল এবং তখন তাহার ফুল খুব ছোট হইয়া জন্মিত। আজও ইহার জ্ঞাতিবর্গকে অনেক জঙ্গলে ছোট ছোট হরিদ্রাভ ফুল সহ দেখা যায়। বাগানে চন্দ্রমল্লিকা যত্ন না করিলে কয়েক বৎসরের মধ্যে তাহার ফুল ছোট হইয়া আসে এবং তাহার রঙ সেই প্রাচীন পীতবর্ণে পরিণত হয়।

 প্রস্ফুটিত হইবার সময়ের সহিত পুষ্পের বর্ণের যে কোন গূঢ় সম্বন্ধ আছে তাহার আভাষ আমরা পূর্ব্বে দিয়াছি। খোঁজ করিলে প্রাণীদের মধ্যেও ঐ প্রকার একটা বর্ণবিভাগের লক্ষণ ধরা পড়ে। মাংসাশী বন্য জন্তুর বর্ণ প্রায়ই একরঙা হয় না,—ব্যাঘ্র, হায়েনা, বনবিড়াল, জাগুয়ার প্রভৃতি অনেকেরই দেহ বিচিত্র বর্ণের লোমে আবৃত থাকে। উদ্ভিদ্‌ভোজীদের মধ্যে রঙিন জন্তু নাই একথা বলা যায় না,—জেব্রা, জিরাফ, এবং কয়েক জাতীয় হরিণের রঙ মাংসাশীদের মতই বিচিত্র; কিন্তু ইহাদের সংখ্যা নিতান্ত অল্প। গো-জাতির প্রতি দৃষ্টিপাত করিলে দেখা যায়, গোরুর গায়ে ডোরা ও চিতে উভয়ই দেখা যায় বটে, কিন্তু ঘোড়ার গায়ে কখনই জিরাফ বা জেব্রার মত ডোরা রঙিন দাগ জন্মে না। এগুলিকে কখনই আকস্মিক ব্যাপার বলা যায় না। খুব সম্ভবতঃ ইহাদের মূলে কোন রহস্য লুক্কায়িত আছে; কিন্তু সে রহস্য যে কি, তাহা আজও কেহ জানে না। পূর্ব্বোক্ত বর্ণ-বৈচিত্র্যগুলিকে আত্মরক্ষার ছদ্মবেশ বলিলে অন্যায় বলা হয়।

 যে-সকল গোরুর গায়ে দুই বা তিন প্রকার রঙ্ থাকে, তাহাদের দেহের বর্ণবিন্যাসে আর একটি বিশেষত্ব দেখা যায়। ইহাদের ঘাড় বা মাথার রঙ্ কখনই দেহের অবশিষ্টাংশ অপেক্ষা ফিকে হয় না। পিছনটা লাল বা কালো এবং ঘাড় ও মাথা সাদা—এ প্রকার গোরু