পাতা:প্রাকৃতিকী.pdf/১৯৮

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
বৃক্ষের চক্ষু
১৭৩

কোটায় অবস্থিত, তাহাদের দেহে মানুষের চক্ষু কর্ণাদির ন্যায় সুব্যবস্থিত ইন্দ্রিয় না থাকিবারই কথা। মানুষের চক্ষুর সহিত পতঙ্গাদি ইতর প্রাণীর চক্ষুর তুলনা করিলে এই ভেদ সুস্পষ্ট বুঝা যায়। জীবতত্ত্ববিদ্‌গণ উদ্ভিদ্-জাতিকে জীবপর্য্যায়ের নিম্নতম স্তরে স্থান দিয়া থাকেন, কাজেই মানুষ চক্ষুর সাহায্যে বাহিরের নানা বস্তু ও নানা বর্ণ দেখিয়া যে সৌন্দর্য্য অনুভব করে উদ্ভিদের তাহা প্রয়োজন হয় না। আঁধার হইতে আলোককে চিনিয়া লওয়া এবং কোন্ দিক্ হইতে আলোক আসিতেছে তাহা বুঝিয়া লওয়া যেমন নিম্নশ্রেণীর প্রাণীদিগের দর্শনেন্দ্রিয়ের প্রধান কার্য্য, উদ্ভিদের চক্ষুর কার্য্যও কতকটা তদ্রূপ। বৃক্ষের চক্ষুকে মানবচক্ষুর সহিত তুলনা করা যায় না, কিন্তু ইতর পতঙ্গদিগের চক্ষুর সহিত তুলনা করিলে, ইহাকে কোন অংশে হীন বলা যায় না।

 জর্ম্মান্ অধ্যাপক হাবারল্যাণ্ড (Haberlandt) সাহেব উদ্ভিদের শরীরতত্ত্বের অনেক নূতন কথা প্রকাশ করিয়া প্রসিদ্ধি লাভ করিয়াছেন। বৃক্ষের চক্ষুর কথাটাও তিনি সম্প্রতি প্রচার করিয়াছেন। চক্ষুর মোটামুটি কার্য্য কি, তাহা অনুসন্ধান করিলে দেখা যায়, বাহিরের নানা পদার্থের ছবি চক্ষুর ভিতরে আনিয়া ফেলিতে পারিলেই তাহার কাজ এক প্রকার শেষ হইয়া যায়। অবশ্য মনুষ্য প্রভৃতি উচ্চশ্রেণীর চক্ষু যেমন জটিল, তাহার কার্য্যও সেই প্রকার বিচিত্র; কিন্তু সমগ্র প্রাণিজাতির চক্ষুর কার্য্যও কি তাহা অনুসন্ধান করিলে, পূর্ব্বোক্ত ব্যাপারটিই আমাদের নজরে পড়িয়া যায়।

 পাঠকের অবশ্যই জানা আছে, বাহিরের দৃশ্যকে যখন আমরা কোন সংকীর্ণ স্থানে আনিতে চাই, তখন আমাদিগকে Convex Lens অর্থাৎ স্থূলমধ্য কাচ ব্যবহার করিতে হয়। ফোটোগ্রাফার যখন একটি চৌদ্দ পোয়া মানুষের ছবি একখানি ক্ষুদ্র কাগজের উপরে উঠাইতে চাহেন, তখন তিনিও ঐ স্কুল-মধ্য কাচ ব্যবহার করেন। তাঁহার