পাতা:প্রাকৃতিকী.pdf/১৯৯

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
১৭৪
প্রাকৃতিকী

ক্যামেরার সম্মুখে সেই কাচ লাগানো থাকে, বাহিরের বৃহৎ বস্তুর ক্ষুদ্র ছবি ঐ কাচেরই সাহায্যে ছোট হইয়া ক্যামেরার ভিতরে আসিয়া পড়ে। আমাদের চক্ষু যখন বাহিরের ছবিকে ছোট করিয়া ভিতরে ফেলে তখন তাহাও ঐ কৌশল অবলম্বন করে; চক্ষুর ভিতরে অবশ্য স্থূলমধ্য কাচ থাকে না, কিন্তু কাচের মতই এক প্রকার স্বচ্ছ তরল পদার্থ এমন ভাবে চক্ষুর ভিতরে সজ্জিত থাকে যে, তাহা ক্যামেরার স্থূলমধ্য কাচখণ্ডেরই ন্যায় বাহিরের নানা দৃশ্যকে ছোট করিয়া অক্ষি পর্দ্দার (Retina) উপরে ফেলে। সুতরাং বৃক্ষের কোন অঙ্গে যদি ঐ প্রকার স্থূলমধ্য স্বচ্ছ পদার্থ দেখা যায় এবং তাহা বাহিরের দৃশ্যকে ছোট করিয়া বৃক্ষদেহের ভিতরে ফেলিতেছে ইহাও যদি অনুসন্ধানে জানা যায়, তাহা হইলে স্বীকার করিতেই হয়, গাছেরও চক্ষু আছে। সম্প্রতি পূর্ব্বোক্ত জর্ম্মান্ পণ্ডিতটি গাছের শাখাপত্রাদির ছালে অবিকল এই প্রকার চক্ষু আবিষ্কৃত করিয়াছেন। ছালের উপরি ভাগে যে-সকল কোষ সজ্জিত থাকে তাহাদেরই মধ্যে কতকগুলি এক প্রকার অতি স্বচ্ছ রসে পূর্ণ থাকিয়া স্থূলমধ্য কাচের মত কার্য্য করে। ইহাতে যে কোষগুলির মধ্যে কেবল বাহিরের দৃশ্যাবলীর ক্ষুদ্র ছবি আসিয়া পড়ে তাহা নয়, বাহিরের সূর্যকিরণের তাপও ঐ স্থূলমধ্য স্বচ্ছ পদার্থের সাহায্যে কেন্দ্রীভূত হইয়া কোষে জমা হয় এবং ইহাতে উদ্ভিজ্জ-কোষ সক্রিয় হইয়া পড়ে।

 বৃক্ষের পাতায় ও ছালে পরিব্যাপ্ত এই সহস্র সহস্র চক্ষুগুলি বাহিরের দৃশ্যের সহস্র সহস্র ক্ষুদ্র ছবি কোষের মধ্যে উৎপন্ন করিয়া কি কার্য্য সম্পন্ন করে, তাহা বলা কঠিন, কিন্তু তাই বলিয়া এই চক্ষুগুলি যে বৃথা ছবি উৎপন্ন করে তাহা কখনই বলা যায় না। পাঠক অবশ্যই অবগত আছেন, সাধারণ মক্ষিকার মস্তকের দুই পার্শ্বে যে দু’টা বড় বড় চক্ষু দেখা যায়, সে গুলি বহু ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র চক্ষুর সমষ্টি। মক্ষিকার প্রত্যেক