পাতা:প্রাকৃতিকী.pdf/২০১

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।

মৃত্যুর নবরূপ

জীবজগতের প্রতি স্থূলভাবে দৃষ্টিপাত করিলে দেখা যায়, যেন বংশরক্ষা করাই প্রাণী ও উদ্ভিদের জন্মগ্রহণের প্রধান উদ্দেশ্য। প্রাণীই বল, আর উদ্ভিদ্‌ই বল, এক একটি সুক্ষ্ম জীবকোষ হইতে ইহাদের প্রত্যেকেরই উৎপত্তি। এই এককোষময় জীবই ভ্রূণের মধ্যে বহুকোষবিশিষ্ট হইয়া তাহাদের নির্দ্দিষ্ট আকার প্রাপ্ত হয়। ইহার পরে নিজেদের দেহ পরিণত হইলে তাহারাই আবার একাধিক এককোষময় নুতন জীবাকে জন্ম দিয়া জীবনের কার্য্য সমাপন করে। এই অবস্থায় উপনীত হইলে জীব যেন প্রকৃতির ত্যাজ্যপুত্র হইয়া পড়ে এবং মৃত্যুর ক্রোড়ই তাহাদের বিশ্রামের স্থান হয়। ঔষধিজাতীয় সকল উদ্ভিদ‍্ই একবারমাত্র ফল প্রদান করিয়া এই প্রকারে মৃত হয় এবং অনেক ইতর প্রাণীও সন্তানের জন্মের সঙ্গে সঙ্গে মরিয়া যায়। সুতরাং দেখা যাইতেছে, সমগ্র সংসার চক্রের আবর্ত্তনের সহিত জীবের জীবনটাও চক্রপথে আবর্ত্তিত হইতেছে। এককোধময় জীব হইতে আবার নূতন এককোষময় জীবে পরিণতি, জীবজগতে আসৃষ্টি চলিয়া আসিতেছে। এই সকল দেখিয়া সত্যই মনে হয়, নিজের বংশের ধারাটিকে অক্ষুণ্ণ রাখিয়া মরিয়া যাওয়াই জীবনের সার্থকতা।

 বলা বাহুল্য, জীবনের লক্ষ্য ও মৃত্যুসম্বন্ধে পূর্ব্বোক্ত কথাগুলি খাঁটি জড়বিদ্‌গণের স্থূল কথা। মাতাপিতা হইতে জন্ম গ্রহণ করিয়া আহারাদির দ্বারা শরীর পুষ্ট করা এবং শেষে নিজের জীবনের ধারা সন্তানের দেহে রাখিয়া দেহত্যাগ করা, উদ্ভিদ্ ও ইতর প্রাণীর জীবনের লক্ষ্য