পাতা:প্রাকৃতিকী.pdf/২২

এই পাতাটিকে বৈধকরণ করা হয়েছে। পাতাটিতে কোনো প্রকার ভুল পেলে তা ঠিক করুন বা জানান।
বৈজ্ঞানিকের স্বপ্ন

ধাতু রেডিয়মের উৎপত্তি করে, ইহাতে আর অবিশ্বাস করা চলিতেছে না। বংশের পরিচয় দিতে গেলে, বংশের প্রতিষ্ঠাতার নাম তালিকা-শীর্ষে স্থান পায়। তার পর পুত্র কন্যা পৌত্র দৌহিত্রের নাম যথাক্রমে বংশতালিকায় লেখা হইয়া থাকে। ক্রুক্‌স্ সাহেব ও অপর বৈজ্ঞানিকগণ ইউরেনিয়মের এক বংশতালিকা প্রস্তুত করিয়াছেন। জিনিষটা জ্ঞাত অজ্ঞাত ও ধাতু অধাতু পদার্থের মধ্যে গুরুত্বে সর্ব্বশ্রেষ্ঠ। কাজেই ইহাকে প্রতিষ্ঠাতার আসন দিতে হইয়াছে। তাহার পরে ইহারি দেহচ্যুত ইলেক্ট্রন দ্বারা কোন্ কোন্ পদার্থের উৎপত্তি হইল দেখিয়া, তাহাদিগকে তালিকাভুক্ত করা হইতেছে। এই প্রকারে এক ইউরেনিয়নেরই পুত্র-পৌত্রাদির নামসহ এক প্রকাগু বংশতালিকা পাওয়া গিয়াছে। সস্তান-দিগের মধ্যে কে কোন্ খনিতে আশ্রয় গ্রহণ করিয়া কি আকারে আছে, আজও তাহার সন্ধান হয় নাই, তথাপি উহার বংশধরের সংখ্যা প্রায় কুড়ি হইয়া দাঁড়াইয়াছে। ইহাদের সকলেই ডাল্‌টনের সিদ্ধান্তে মূলপদার্থ অর্থাৎ খাঁটি কুলীন, কিন্তু এখন ইহারা সকলেই ভাঙ্গিয়া চুরিয়া নিজেদের কুল গৌরব হারাইতেছে।

 বিদ্যালয়ের অধ্যাপক মহাশয় সত্তর-আশীটি মূলপদার্থের নাম মুখস্থ করাইয়া ছাত্রদের শিক্ষা দিতেন যে, মূলপদার্থের পরিবর্ত্তন নাই এবং ক্ষয়ও নাই। এখন দেখিতেছি এই দু’টির উল্‌টাই উনবিংশ শতাব্দীর মূল-পদার্থের প্রধান ধর্ম্ম। জীবরাজ্যে সকল জীবের আয়ুষ্কাল সমান নয়। যাহারা দুই চারি ঘণ্টায় জীবনের লীলা শেষ করে, এ প্রকার অনেক প্রাণী ও উদ্ভিদের সহিত আমাদের পরিচয় আছে। আবার যাহারা দুইশত বৎসর বা হাজার বার বাঁচিয়া আছে, এ প্রকার জীবের সহিতও আমাদের পরিচয় রহিয়াছে। এ পর্যন্ত যে সকল বস্তুকে মূলপদার্থ বলা হইতেছিল, তাহাদের জীবনের ঐ প্রকার এক একটা সীমা আবিষ্কার হইয়া পড়িতেছে। ইউরেনিয়ম্ প্রায় ত্রিশকোটী বৎসর জীবিত থাকে এবং