পাতা:প্রাকৃতিকী.pdf/২২৫

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
১৯৬
প্রাকৃতিকী

জন্যই যেন বসুন্ধরা যুগযুগান্তর ধরিয়া এই সকল অমূল্য দ্রব্য ধারণ করিয়া আসিতেছেন।

 অতি প্রাচীনকালে যে অবস্থায় পড়িয়া বৃক্ষাদি ভূপ্রোথিত হইয়াছিল, পৃথিবীর এখন আর সে অবস্থা নাই। এখন বৃক্ষাদি আর ভূপ্রোথিত হইতে পারিতেছে না; সুতরাং নূতন করিয়া কয়লা বা কেরোসিন তৈলেরও উৎপত্তি হইতেছে না, অথচ পূর্ব্বসঞ্চিত কয়লা ইত্যাদির ব্যয় ক্রমে বাড়িয়াই চলিয়াছে। এই আয়-ব্যয়ের হিসাব করিয়া আধুনিক বৈজ্ঞানিকগণ বড়ই চিন্তাযুক্ত হইয়া পড়িয়াছেন। আশঙ্কা হইতেছে, বুঝি বা আর একশত বৎসরের মধ্যে পৃথিবীর কয়লা ও কেরোসিনের ভাণ্ডার নিঃশেষিত হইয়া যায়; কিন্তু আমরা ইহাতে কোন আশঙ্কারই কারণ দেখি না। মানবজাতি বিধাতার নানা আশীর্ব্বাদে ভূষিত হইয়া প্রাণিরাজ্যের শীর্ষস্থান অধিকার করিয়াছে সত্য, কিন্তু তাই বলিয়া সৃষ্টিরক্ষার কর্ত্তব্যাকর্ত্তব্য-নির্দ্ধারণ কখনই তাহার অধিকারভুক্ত বলা যায় না। বৃহৎ অরণ্যগুলির ধ্বংসের পর মানব যখন ইন্ধনের অভাব অনুভব করিতে আরম্ভ করিয়াছিল, তখন বিধাতারই অঙ্গুলিসঙ্কেতে ভূগর্ভে নুতন ইন্ধনের সন্ধান পাওয়া গিয়াছিল। এই ভাণ্ডার শূন্য হইলে, সেই বিধাতারই অকথিত বাণী ইন্ধন-সংগ্রহের নব নব সহজ উপায় বলিয়া দিবে।