পাতা:প্রাকৃতিকী.pdf/২২৮

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
দধি
১৯৯

করিলে তাহারাই মাখন ও চিজ্ উৎপন্ন করে। আজকাল বিলাতি গোয়ালারা দধি, মাখন বা চিজ্ উৎপাদক জীবাণুগুলিকে চিনিয়া পৃথক্ স্থানে তাহাদের পালন করিতেছে, এবং আবশ্যকমত তাহাদিগকেই দুগ্ধে ফেলিয়া দিয়া উৎকৃষ্ট দধি মাখন ইত্যাদি প্রস্তুত করিতেছে। আমাদের গো-শালাগুলিতে সেই “সাঁজা” দিয়া দধি প্রস্তুতের প্রথা অদ্যাপি প্রচলিত আছে। “সাঁজা” দেওয়া এবং দুগ্ধে জীবাণু সংযোগ করা একই কাজ বটে, কিন্তু আমরা যাহাকে “সাঁজা” বলি তাহাতে দধির উৎপাদক খাঁটি জীবাণু ছাড়া আরো অনেক জীবাণু থাকিয়া যায়। কাজেই সকল সময় সাঁজায় খুব ভাল দধি হয় না। দধি-উৎপাদক জীবাণু যেমন কাজ করিতে থাকে, তেমনি সঙ্গে সঙ্গে অপর অনাবশ্যক জীবাণু সাঁজার সহিত দুগ্ধে আশ্রয় গ্রহণ করিয়া তাহাকে বিকৃত করিতে আরম্ভ করে। ফলে দধিটা একটা অদ্ভুত জিনিষ হইয়া পড়ে। প্রায়ই দেখা যায় দধি বসিল না, বা সেটা লালার ন্যায় একটা আটালো জিনিষ এবং দুর্গন্ধময় হইয়া পড়িল। এই সকল সেই অনাবশ্যক জীবাণুরই কীর্ত্তি।

 জীবাণু কেবল ব্যাধি-উৎপাদন এবং বাহিরের জিনিষকে ভাল—মন্দে পরিবর্ত্তন করিয়া ক্ষান্ত হয় না। সুস্থ এবং সবল প্রাণীর দেহের ভিতরেও ইহারা আশ্রয় গ্রহণ করিয়া নানাপ্রকার কার্য্য দেখায়। মানবদেহের নবদ্বারের মধ্যে অন্ততঃ কতকগুলি দ্বার ইহাদের প্রবেশের জন্য অবারিত রহিয়াছে। আমরা খাদ্যের সহিত অনেক জীবাণু উদরস্থ করিয়া ফেলি। কিন্তু এগুলি ধদি ব্যাধি-জীবাণু না হয়, তবে তাহারা আমাদের বিশেষ কোন অনিষ্ট করিতে পারে না। আমাদের জঠর হইতে যে পাক-রস (Gastric Juice) নির্গত হয়, তাহার জীবাণুনাশের শক্তি আছে। কাজেই উদরস্থ হইলে পর সেই রসের সংযোগে তাহারা মরিয়া যায়। কিন্তু অন্ত পথে আমাদের অন্ত্রে