পাতা:প্রাকৃতিকী.pdf/২৪৬

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
বাবিলোনীয় জ্যোতিষিগণ
২১৫

প্রকার দুই একটি সংস্কার প্রায়ই লক্ষিত হইয়া থাকে। পাশবপ্রকৃতি ঘোর অসভ্যজাতির মধ্যেও সৃষ্টিপ্রকরণাদি-সম্বন্ধে এইরূপ অনেক আজ্‌গুবি সিদ্ধান্ত বড় দুষ্প্রাপ্য নহে।

 বাবিলনে প্রকৃত জ্যোতিষচর্চ্চার সূত্রপাত ঠিক কোন সময়ে হয় তাহার স্থিরতা নাই। আকাডিয়ান্‌দিগের অভ্যুদয়ের পূর্ব্বেকার অর্থাৎ খৃষ্ট-পূর্ব্ব সাত সহস্র অব্দে লিখিত যে-সকল গ্রন্থাদি প্রাপ্ত হওয়া গিয়াছে, তাহাতে গ্রহণাদির পূর্ণ বিবরণ ও গ্রহোপগ্রহাদির উদয়াস্ত-সম্বন্ধে নানা কথা লিপিবদ্ধ দেখিতে পাওয়া যায়। ইহা দ্বারা অনুমিত হয়, খৃঃ পূঃ সপ্ত সহস্রাব্দে বাবিলোনীয় পণ্ডিতগণ কিঞ্চিৎ জ্যোতিষশাস্ত্র জানিতেন, এবং গ্রহতারকাদির পরিদর্শন প্রথা তাঁহাদের নিকট সম্পূর্ণ অপরিজ্ঞাত ছিল না। ব্রিটিশ মিউজিয়ামে প্রাচীন বাবিলনের কয়েকখানি প্রস্তরলিপি রক্ষিত আছে, ইহার সাহায্যে জ্যোতিষশাস্ত্র-প্রতিষ্ঠার কালনিরূপণার্থে কয়েক বৎসর হইল নানাবিধ চেষ্টা হইয়াছিল এবং প্রকৃত প্রস্তাবে প্রস্তরফলকগুলি যথার্থই বাবিলনের খোদিত হইলে এই চেষ্টা ব্যর্থ হইবার কোনই কারণ থাকিত না! কিন্তু উক্ত প্রস্তরস্থ খোদিত গ্রহণাদির চিত্র ও বিবরণের মধ্যে কোনটিতেই সংঘটনকালের উল্লেখ দেখিতে পাওয়া যায় নাই, ইহাতে এগুলি অপ্রকৃত এবং আধুনিক সময়ে খোদিত বলিয়া সকলেই স্থির করিয়াছেন। কাজেই জ্যোতিষচর্চ্চারম্ভের প্রকৃত কালনির্ণয় অতীব দুঃসাধ্য ব্যাপার হইয়া দাঁড়াইয়াছে।

 বাবিলোনীয় পণ্ডিতগণ নভঃস্থ দৃষ্টমান জ্যোতিষ্কগণকে নানা অংশে বিভক্ত করিতেন এবং এই গ্রহনক্ষত্রযুক্ত আকাশের অংশ সকল এক একটি পৃথক দেবতার নামে অভিহিত করিয়া তত্তৎ দেবতার নির্দ্দিষ্ট গুণাবলি তারকামণ্ডলিতে আরোপিত করিতেন। জ্যোতিষশাস্ত্রের এই শৈশবাবস্থায় গ্রহাদির নামকরণে পূর্ব্বোক্ত প্রথা প্রচলিত থাকায়