পাতা:প্রাকৃতিকী.pdf/২৪৭

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
২১৬
প্রাকৃতিকী

আকাশের তাৎকালিক অবস্থার সহিত আধুনিক অবস্থার তুলনা করা বড়ই দুরূহ হইয়া পড়িয়াছে। এক এক দিগংশস্থ সকল গ্রহ তারা একই নামে অভিহিত হওয়ায় এবং কখন কখন গতিবৈচিত্রা দ্বারা একই জ্যোতিষ্ক একাধিক নামে আখ্যাত হওয়ায় প্রাচীন গ্রন্থোল্লিখিত গ্রহাদির সম্যক্ পরিচয় পাইবার আর উপায়ান্তর নাই। এতদ্ব্যতীত এক জাতীয় সাতটি করিয়া জ্যোতিষ্ক লইয়া শ্রেণী-বিভাগ দ্বারা নামকরণপ্রথা কয়েকখানি গ্রন্থে দৃষ্ট হইয়াছে। ইহার মধ্যে এক গ্রন্থে সপ্তগ্রহ ও সপ্ত যমজতারকা ডিফু ও মাসু নামে অভিহিত হইয়াছে শুনা যায়। এই গ্রন্থে নামকরণের আরও একটি অভিনব উপায় আবিষ্কৃত হইয়াছে। আকাশের যে অংশে যে জ্যোতিষ্ক অবস্থিত সেই অংশের নামানুসারে গ্রহগণের নামকরণ হইত, এবং এই প্রকার এক একটি নির্দ্দিষ্ট তারকাপুঞ্জ এক একটি নির্দ্দিষ্ট দেবতা কর্ত্তৃক রক্ষিত হইতেছে কল্পনা করিয়া উক্ত দেবতাগণকে বৎসরের নানা অংশের অধিপতিরূপে উল্লেখ করা হইত।

 প্রাচীন জ্যোতিষগ্রন্থাদি পাঠ করিলে বাবিলোনীয়দিগের জ্যোতিষচর্চ্চার একটি গূঢ় কারণ দৃষ্টিগোচর হয়। আজকাল আমরা যে উদ্দেশ্যে জ্যোতিষশাস্ত্রালোচনা করি তাহাদের সেই উচ্চতর উদ্দেশ্য আদৌ ছিল না, কোন প্রকারে শুভাশুভ লক্ষণাদি জ্ঞাত হওয়াই তাহাদের একমাত্র লক্ষ্য ছিল। বোধ হয়, এই হীন উদ্দেশ্যে জ্যোতিষচর্চ্চা আরম্ভ হওয়া বশতঃ ইহাতে আশানুরূপ উন্নতির কোনই লক্ষণ দেখা যায় নাই। তাহাদের ক্ষুদ্র আকাঙ্ক্ষাটি পরিতৃপ্ত হইলেই তাহারা যথেষ্ট মনে করিত, এবং জ্যোতিষশাস্ত্রের সর্ব্বপ্রধান অঙ্গ গ্রহতারকাদির গতিবিধি-নির্দ্ধারণ তাহাদের নিকট একটি অনাবশ্যক বিষয় বলিয়া বিবেচিত হইত। কোন একটি আরব্ধ কার্য্যের ফলাফল স্থির করিতে হইলে বাবিলোনীয়গণ সাধারণতঃ আকাশকে আট সমানাংশে বিভক্ত