তাপ এই অবস্থায় পূর্ব্বের কঠিন শিলা মৃত্তিকাগুলিকে গলাইয়া স্ফীত করিয়া তুলিয়াছিল; কাজেই জলাচ্ছাদিত অংশ অপেক্ষা জলবর্জ্জিত স্থলভাগটাই উচ্চ হইয়া সমুদ্রকেই তুলনায় গভীরতর করিয়াছিল।
পূর্ব্বোক্ত কথাগুলি কেবল অনুমানমূলক নহে। চাপ প্রয়োগ করিয়া কোন অত্যুষ্ণ জিনিষকে গলিতে না দিয়া, চাপের বা তাপের সামান্য হ্রাসবৃদ্ধি করিতে থাকিলে তাহাতে যে, আকুঞ্চন-প্রসারণ দেখা যায়, নানা পরীক্ষায় তাহা প্রমাণিত হইয়াছে। অঙ্গারক বাষ্পকে শীতল করিলে তাহা তরলাকার প্রাপ্ত হয়। এই তরল অঙ্গারক-বাষ্পের ১২০ ঘন ইঞ্চি লইয়া ৩০° ডিগ্রি উত্তাপ দিলেই তাহা ১৫০ ঘন ইঞ্চি হইয়া দাঁড়ায়, অথচ জিনিষটা তরলাবস্থাতেই থাকে। এই সকল প্রমাণের বিষয় আলোচনা করিলে মনে হয়, শিশু পৃথিবীতে উচ্চ-নিম্ন ভূমির উৎপত্তি এবং জন্মস্থলের সংস্থানসম্বন্ধে আধুনিক পণ্ডিতগণ যে সিদ্ধান্ত করিতেছেন, তাহা একবারে অযৌক্তিক নয়।
ভূপৃষ্ঠের বৈচিত্র্যবিধানে রাসায়নিক কার্য্যের প্রভাব নিতান্ত অল্প নয়। বায়ু ও জলের প্রবাহ প্রভৃতি শক্তি ভূতলের মূর্ত্তি ফিরাইয়া দেয় সত্য, কিন্তু আমাদের অলক্ষ্যে রাসায়নিক সংযোগ-বিয়োগ যে-সকল পরিবর্ত্তনের সূত্রপাত করে, তাহা উপেক্ষার বিষয় নহে। পণ্ডিতগণ অনুমান করিতেছেন, আমাদের পৃথিবীর শৈশবের শেষ ভাগে অপরাপর শক্তির সহিত রাসায়নিক শক্তিও কার্য্য করিয়াছিল। ভূতলে যখন প্রাথমিক সমুদ্রগুলির উৎপত্তি হইয়াছিল, তখন সমুদ্র-জল কখনই এখনকার জলের ন্যায় শীতল ছিল না। ইহার উষ্ণতা নিশ্চয়ই এখনকার ফুটন্ত জলের উষ্ণতা অপেক্ষাও অধিক ছিল। ভূপৃষ্ঠের ঊর্দ্ধ স্তরগুলি যে-সকল উপাদানে গঠিত, তাহার সহিত