পাতা:প্রাকৃতিকী.pdf/২৭

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
১২
প্রাকৃতিকী

হয় না, সঙ্গে সঙ্গে উহা নাইটন্ (Niton) নামক আর এক নূতন ধাতুতেও রূপান্তরিত হয় এবং এই নাইটন্ জিনিষটা জন্মগ্রহণ করিয়াই আবার হেলিয়ম্ এবং রেডিয়ম্ জাতীয় আর একটি বস্তুতে (Radium-A) রূপান্তর গ্রহণ করে। কাজেই যে-সকল ধাতু এ পর্য্যন্ত মূলপদার্থ বলিয়া স্বীকৃত হইয়া আসিতেছিল, তাহাদিগকেই বিশ্লিষ্ট ও রূপান্তরিত হইতে দেখিয়া ইঁহাদের আর বিস্ময়ের সীমা রহিল না।

 এই সকল আবিষ্কারে ডাল্‌টন সাহেবের পারমাণবিক সিদ্ধান্ত (Atomic Theory) আর অটল থাকিতে পারিল না। বৈজ্ঞানিকগণ বুঝিতে লাগিলেন, হাইড্রোজেন্, অক্সিজেন্ প্রভৃতি নব্বুইটি ধাতু ও অধাতু মূলপদার্থ জগতে নাই; মূলপদার্থ জগতে একটি মাত্রই আছে এবং তাহাই ঐ ইলেক্ট্রন বা অতি-পরমাণু। এগুলিই অল্প বা অধিক সংখ্যায় জোট বাঁধিয়া আমাদের সুপরিচিত অক্সিজেন, হাইড্রোজেন, স্বর্ণ, লৌহ প্রভৃতির উৎপত্তি করে। ইঁহারা আরও অনুমান করিলেন, এই ব্রহ্মাণ্ডে কেবল যে, রেডিয়ম্ বা সেই জাতীয় বস্তুই রূপান্তর গ্রহন করিয়া অতি-পরমাণুতে পরিবর্ত্তিত হইতেছে তাহা নহে, জগতের সকল বস্তুই ধীরে ধীরে ক্ষয় পাইয়া অতি-পরমাণুতে পরিণত হইতেছে এবং অতি-পরমাণু জোট বাঁধিয়া আবার নূতন বস্তুর সৃষ্টি করিতেছে। ইঁহারা কল্পনার চক্ষে দেখিতে লাগিলেন, এই প্রকার এক বিশ্বব্যাপী ভাঙাগড়া লইয়াই এই জগৎ। এই ভাঙাগড়ার আদিও নাই অন্তও নাই।

 যখন সমগ্র জগৎ পূর্ব্বোক্ত নবাবিষ্কারে এবং নবভাবে আবিষ্ট, তখন ইংলণ্ডের প্রধান রসায়নবিৎ সার উইলিয়ম্ র‍্যাম্‌জে ঐ রেডিয়ম্ লইয়াই নীরবে গবেষণা করিতেছিলেন। ইনি দেখিলেন, এই যে রেডিয়ম রূপান্তরিত হইয়া নাইটনে পরিণত হইল এবং নাইটন্ বহু তাপ ত্যাগ