পাতা:প্রাকৃতিকী.pdf/২৮০

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
নূতন নীহারিকাবাদ
২৪৫

পথে ঘুরাইয়া থাকেন। জ্যোতিঃশাস্ত্রের এই ঔপন্যাসিক যুগের কথা ছাড়িয়া দিলে দেখা যায়, ১৬০৯ খ্রীষ্টাব্দে যে দিন প্রসিদ্ধ জ্যোতিষী কেপ্‌লার (Kepler) গ্রহদিগকে বৃত্তাভাস (Elliptical) পথে ভ্রমণ করিতে দেখিয়াছিলেন, সেই দিনই নব্য জ্যোতিষের জন্মদিন। কেপ্‌লার সাহেব এই নূতন তথ্যটি কেবল সংগ্রহ করিয়াই গিয়াছিলেন; বৃত্তাভাস পথের উৎপত্তি প্রসঙ্গে কোন নূতন কথা তাঁহার নিকট হইতে শুনা যায় নাই। প্রকৃত তত্ত্ব জানিবার জন্য প্রায় শত বৎসর প্রতীক্ষা করিতে হইয়াছিল; গত ১৭৯৬ খ্রীষ্টাব্দে অদ্বিতীয় মহাপণ্ডিত লাপ্লাস্ সাহেব জগৎ-উৎপত্তির একটা ব্যাখ্যান দিয়া বিষয়টির মীমাংসা করিয়াছিলেন। চন্দ্র, সূর্য্য, বৃহস্পতি, শনি প্রভৃতি গ্রহোপগ্রহের উপাদান এককালে জ্বলন্ত নীহারিকার আকারে আকাশে ঘুরিতেছিল বলিয়া ইঁহার বিশ্বাস হইয়াছিল, এবং কালক্রমে উহাই জমাট বাঁধিয়া এই জগতের উৎপত্তি করিয়াছে সিদ্ধান্ত হইয়াছিল। দ্রব জিনিস কঠিন হইয়া গেলে, একটিমাত্র জমাট পিণ্ড পাওয়া যায়। একই নীহারিকা জমাট বাঁধিয়া কি প্রকারে বহু জ্যোতিষ্কের সৃষ্টি করিল জানিতে চাহিলে তিনি বলিতেন, সেই বিশাল নীহারিকা কঠিন হইয়া সঙ্কুচিত হইবার সময়, উহার দেহের কিয়দংশ মাঝে মাঝে বলয়াকারে রাখিয়া গিয়াছিল। এখন সেইগুলিই পুঞ্জীভূত হইয়া মঙ্গল, বুধ, বৃহস্পতি, পৃথিবী প্রভৃতি গ্রহের উৎপত্তি করিয়াছে। উপগ্রহের উৎপত্তির কথা জিজ্ঞাসা করিলেও লাপ্লাস্ সাহেব ঐ ব্যাখ্যান দিতেন। গ্রহগণ যে-সকল বলয় হইতে উৎপন্ন হইয়াছে, তাহার সামগ্রীগুলি একত্র হইয়া পিণ্ডাকারে পরিণত হইলে, ইহাদেরও চারিদিকে ছোট ছোট বলয়ের উৎপত্তি হইত। আমাদের চন্দ্র এবং বৃহস্পতি শনি ও মঙ্গলের উপগ্রহগুলি সেই সকল বলয়েরই জমাট মূর্ত্তি।

 যাহা হউক ঘূর্ণমান বৃহৎ নীহারিকা হইতে বিচ্যুত হইয়াই যে,