পাতা:প্রাকৃতিকী.pdf/৩০২

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
গ্রহদিগের কক্ষা
২৫৯

 পূর্ব্বোক্ত কথাগুলি হইতে বুঝা যাইতেছে, মানুষ যেমন স্বাস্থ্যহিসাবে অল্পায়ু বা দীর্ঘজীবী হয়, নক্ষত্র-জগতের গ্রহ উপগ্রহগণও ঠিক সেই প্রকারে তাহাদের গৃহ-প্রবেশকালের গতিবিধির অবস্থা অনুসারে নিজেদের অস্তিত্ব বজায় রাখে। পার্থক্যের মধ্যে এই যে, মানুষের জীবন এক দুই দশ বা শত বৎসরব্যাপী, জ্যোতিষ্কের জীবন দুই চারি দিন হইতে আরম্ভ করিয়া কোটি কোটি বৎসরব্যাপী। কোন-গতিকে সূর্য্যের আকর্ষণ হইতে মুক্তি লাভ করিবার মত অবস্থা লইয়া যে গ্রহটি সৌর জগতে প্রবেশ করিয়াছে সেটি হয় ত দু’চার লক্ষ বৎসর বাঁচিবে, এবং যাহারা আরও অনুকূল অবস্থায় প্রবেশ করিয়াছে তাহাদের জীবন সম্ভবতঃ কোটি কোটি বৎসরেও অবসান হইবে না। কিন্তু মৃত্যুমুখ হইতে কাহারও নিস্তার নাই, চিরস্থির কক্ষায় ঘুরিতে পারে এ প্রকার হিসাব-পত্র করিয়া এবং তদনুসারে গতিসম্পন্ন হইয়া হয় ত কোন গ্রহ গৃহ প্রবেশ করে নাই।

 মানুষের জীবনটা যেমন ক্ষুদ্র, তাহাদের অভিজ্ঞতাও তেমনি অল্প। অধিক কি, আমরা দশ হাজার বৎসর পূর্ব্বেকারও খবর লিপিবদ্ধ রাখি নাই। সুতরাং যে জ্যোতিষ্ক দশ কোটি বৎসর ধরিয়া নিরাপদে সূর্য্য প্রদক্ষিণ করিয়া সূর্য্যের কবলিত হইবে, আমরা যদি তাহাকে স্থির-কক্ষা গ্রহ বলি, ইহাতে বোধ হয় ভুল হয় না। জর্জ্জ ডারুইন্ ও তাঁহার শিষ্যগণ এই শ্রেণীর দীর্ঘজীবী গ্রহগণকেই স্থিরকক্ষা-সম্পন্ন বলিতে চাহিতেছেন।

 এখন জিজ্ঞাসা করা যাইতে পারে, সৌর-জগৎ বা অপর কোন নক্ষত্র-জগতের অতিথি গ্রহগুলির মধ্যে কতকগুলি যেন মোটামুটি স্থিরকক্ষা হইল; কিন্তু তাই বলিয়া কি তাহাদের সুদীর্ঘ বা অনন্ত জীবনের মধ্যে আর কোন বিপদ নাই? জর্জ্জ ডারুইন্ এই প্রশ্নের একটা বড় অশুভ উত্তর দিয়াছেন। তিনি বলেন, এই যে আমাদের পৃথিবী একটা নির্দ্দিষ্টপথ অবলম্বন করিয়া নির্দ্দিষ্টকালে সূর্য্য প্রদক্ষিণ করিতেছে,