পাতা:প্রাকৃতিকী.pdf/৩১

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
১৪
প্রাকৃতিকী

দেহ হইতে নির্গত করে সে প্রকার শক্তিরও তিনি সন্ধান করিতে পারিলেন না। এই সময়ে আর একটি কথা র‍্যাম্‌জে সাহেবের মনে হইল; তিনি ভাবিতে লাগিলেন, নাইটন্ বিযুক্ত হইবার সময়ে স্বভাবতঃ যে বিপুল শক্তিরাশি দেহচ্যুত করে, তাহা যদি কোন উপায়ে অপর লঘু পদার্থের উপরে প্রয়োগ করা যায়, তাহা হইলে হয় তো সেই লঘু বস্তু কোন গুরু পদার্থে পরিণত হইতে পারিবে। এই প্রকার চিন্তা করিয়াই তিনি ক্ষান্ত হইলেন না। সঙ্গে সঙ্গে পরীক্ষা ও আরম্ভ হইল। প্রথমে কয়েক বিন্দু বিশুদ্ধ জলে নাইটন্ নিক্ষেপ করিয়া তিনি জলের হাইড্রোজেন ও অক্সিজেনের কোন পরিবর্ত্তন হয় কিনা দেখিতে লাগিলেন। জল যথারীতি বিশ্লিষ্ট হইয়া হাইড্রোজেন ও অক্সিজেন উৎপন্ন করিতে লাগিল, এবং নাইটন্ হইতে হেলিয়ম্ জন্মিতে লাগিল। পাত্র হইতে এই সকল বাষ্প স্থানান্তরিত করিয়া তাহাতে আর কোনও নুতন পদার্থ উৎপন্ন হইয়াছে কিনা, র‍্যাম্‌জে সাহেব তাহার অনুসন্ধান করিতে লাগিলেন। শেষে দেখা গেল, ঐ সকল বাষ্প ব্যতীত নিয়ন (Neon) নামক একটি মূলপদার্থের উৎপত্তি হইয়াছে। র‍্যাম্‌জে সাহেবের বিস্ময়ের এবং আনন্দের আর সীমা রহিল না। জলের হাইড্রোজেন বা নাইট্রোজেনকে যখন গুরুভারবিশিষ্ট নিয়নে পরিণত করা গেল, তখন অদূর ভবিষ্যতে এক দিন ঐ প্রকার উপায়ে লৌহকে স্বর্ণে পরিণত করাও সম্ভবপর হইবে বলিয়া তাঁহার দৃঢ় বিশ্বাস হইল।

 র‍্যাম্‌জে সাহেবের এই অত্যাশ্চর্য আবিষ্কার-সমাচার অল্প দিন হইল প্রকাশিত হইয়াছে এবং ইহা বৈজ্ঞানিক সম্প্রদায়ে যে আন্দোলন ও বাগ্‌বিতণ্ডার সৃষ্টি করিয়াছে, বোধ হয় আধুনিক যুগের কোন আবিষ্কার তদ্রূপ বিস্ময় ও আন্দোলন সৃষ্টি করে নাই। আজকাল বৈজ্ঞানিক সাময়িক পত্র ও সভাসমিতিতে এই বিষয়