পাতা:প্রাকৃতিকী.pdf/৩১৬

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
বিজ্ঞানে সূক্ষ্মগণনা
২৭১

তাঁহাদের নিকটে গ্রনিন্‌জেন্‌ বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রসিদ্ধ অধ্যাপক ক্যাপ্তেন্ (Kaptyen) সাহেবের পরিচয় নিষ্প্রয়োজন। ইনি সম্প্রতি নাক্ষত্রিক-জগৎসম্বন্ধে এমন কতকগুলি কথা প্রচার করিয়াছেন যে, তাহা শুনিলে প্রকৃতই বিস্মিত না হইয়া থাকা যায় না। কাপ্তেন সাহেব বলিতেছেন, মহাকাশে এই যে অসংখ্য তারকাগুলি কোটি কোটি মাইল বিচ্ছিন্ন থাকিয়া মিটি-মিটি জ্বলিতেছে, তাহাদের পরস্পরের মধ্যে একটা অতি গূঢ় সম্বন্ধ বর্ত্তমান আছে। ইঁহার মতে সমগ্র বিশ্বের নক্ষত্রগুলির মধ্যে দুইটি সম্পূর্ণ পৃথক ভাগ রহিয়াছে; বিশৃঙ্খলভাবে আকাশে সজ্জিত থাকিয়াও ইহাদের প্রত্যেকটি ঐ দুই দলের মধ্যে কোন একটির অন্তর্ভূক্ত হইয়া আকাশে পরিভ্রমণ করিতেছে। একটা উদাহরণ দিলে ক্যাপ্তেন সাহেবের এই আবিষ্কারটি সহজে বুঝিবার সুবিধা হইবে। মনে করা যাউক, যেন আকাশে দুই ঝাঁক পাখী উড়িয়া চলিয়াছে; এক ঝাঁক পূর্ব্ব হইতে পশ্চিমে ছুটিতেছে, আর এক ঝাঁক যেন দক্ষিণ হইতে উত্তরে চলিয়াছে। দুই ঝাঁকের কোন পাখীরই বিশ্রাম নাই, সকলেই উড়িয়া চলিয়াছে। আকাশের নক্ষত্রগণ এই পাখীর ঝাঁকের মতই দুই দলে বিভক্ত হইয়া ছুটিতেছে বলিয়া ক্যাপ্টেন সাহেবের সম্পূর্ণ বিশ্বাস হইয়াছে। তাহারা কোন্ দিক্ অবলম্বন করিয়া চলিয়াছে, তাহাও পর্য্যবেক্ষণ ও গণনা দ্বারা স্থির হইয়াছে। যে-সকল নক্ষত্রকে প্রাচীন জ্যোতিষিগণ চিরস্থির বলিয়া অনুমান করিতেন, তাহাদেরই এই প্রকার সুশৃঙ্খলিত গতি আবিষ্কার করা আধুনিক জ্যোতিঃশাস্ত্রের কম গৌরবের কথা নয়। কিন্তু আধুনিক যুগের এই বৃহৎ আবিষ্কারটির ইতিহাস আলোচনা করিলে দেখা যায়, প্রাচীন ও আধুনিক পণ্ডিতদিগের চুল-চেরা সূক্ষ্মগণনাই ইহাকে পূর্ণতা প্রদান করিয়াছে। সুপ্রসিদ্ধ ইংরাজ জ্যোতির্বিদ ব্রাড্‌লি (Bradley) সাহেব প্রায় দেড় শত বৎসর পূর্ব্বে গ্রীন্‌উইচ্