পাতা:প্রাকৃতিকী.pdf/৩৩৯

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
২৯৪
প্রাকৃতিকী

আলোকমধ্যে যেন এক শ্বেতবর্ণ পদার্থ দেখা গেল। পদার্থটি কি প্রথমে আমরা কিছুই স্থির করিতে পারি নাই, উভয়ে নানা পরীক্ষাদি করিয়া শেষে ইহা তুষারাবৃত কোন পর্ব্বতশৃঙ্গ বলিয়া স্থির করিলাম। আমরা আকাশে যে আলোক দেখিয়াছিলাম, তাহা যে বাস্তবিকই প্রত্যক্ষ সূর্য্যকিরণ নয়, এখন ইহা বুঝা গেল—তুষার-পর্ব্বতে সূর্য্যকিরণ প্রতিফলিত হইয়া যে, আকাশ রঞ্জিত হইয়াছে, তাহাতে আর সন্দেহ থাকিল না। দূরস্থ পর্ব্বত দেখিয়া আমরা সোৎসাহে প্রবলবেগে চলিতে লাগিলাম; প্রায় কুড়ি ঘণ্টার মধ্যে আমরা এতদূর অগ্রসর হইলাম যে, তুষার-ধবল পর্ব্বতের আমূল সকলই আমাদের দৃষ্টিগোচর হইল। আর কিঞ্চিৎ অগ্রসর হইয়া আমরা সেই পর্ব্বতের তুষার-মণ্ডিত পাদদেশে আসিয়া উপস্থিত হইলাম। নিকটেই একটি অনতিউচ্চ পাহাড় ছিল, আমরা বহুযত্নে পাহাড়ে উঠিলাম—তথা হইতে পর্ব্বতের সুমহান্ গম্ভীর দৃশ্য অতি সুন্দর দেখা যাইতে লাগিল। আমরা অন্য বিষয়ে মনোনিবেশ না করিয়া পর্ব্বতারোহণের সুযোগ অনুসন্ধানে নিযুক্ত হইলাম। বন্ধু কিয়ৎকাল চতুর্দ্দিকে দৃষ্টিপাত করিয়া বলিলেন, “এ পর্ব্বত উল্লঙ্ঘন-চেষ্টা বড়ই বিপদ্‌সঙ্কুল হইবে—এই পর্ব্বত শিলাময় নহে, ইহা একটা বৃহৎ তুষারপর্ব্বত।” বন্ধুর কথাটা তাঁহার পূর্ব্ব-প্রচারিত নানা আজ্‌গবি সিদ্ধান্তের অন্যতম ভাবিয়া, ইহাতে বড় মনোনিবেশ করি নাই; কিন্তু যখন দেখিলাম, এ পর্য্যন্ত পর্ব্বতে একখণ্ডও ক্ষুদ্র শিলা দৃষ্ট হয় নাই, তখন বন্ধুর কথা জোর করিয়া মিথ্যা বলার কোন কারণ নাই বিবেচনা করিলাম এবং পরক্ষণেই পর্ব্বত-শৃঙ্গোপরি ভাসমান লোহিতাভ মেঘখণ্ড সকল দেখিয়া, তাঁহার অনুমান যে সম্পূর্ণ সত্যমূলক, তাহাতে আর সন্দেহ রহিল না। আমরা উভয়ে বিষয়টির আলোচনা করিয়া, এই তুষারপর্ব্বতের উৎপত্তির কারণ পর্য্যন্ত আবিষ্কার করিয়াছিলাম। শুক্রের সূর্য্যকিরণোন্মুক্ত অংশ হইতে মেঘ